০১.০৩.০৯
ইত্তেফাক ।। ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা ।।
ঠাকুরগাঁও জেলার জমি উঁচু ও বেলে দোঁআশ হলেও সেচ সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্বত্র বোরা চাষ চলছে পুরোদমে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম হওয়ায় এখানে বোরো ধানের ক্ষতির আশংকাও কম। জেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে অর্থাৎ ৫৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ১৮৮ মে. টন (চালের আকারে)। গত কয়েক বছরের মতো এবারও জেলায় চিকন ও সুগন্ধি জাতের ধানের আবাদ চলছে। সার ও ডিজেলের দাম কমে যাওয়ায় এবং বীজতলার চারার অবস্থা ভালো হওয়ায় কৃষকেরা এবার তেমন সমস্যায় পড়েনি। গত মৌসুমে সারের অভাবে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। তবে এবার গভীর নলকূপের আওতাধীন কৃষকেরা বিদ্যুৎ সংকটের আশংকায় চিন্তিত।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হায়াত জানান, জেলায় গভীর নলকুপ রয়েছে ১১৪৬ টি । স্বল্প উত্তোলক পাম্প রয়েছে ৯ টি এবং কৃষকের কাছে অগভীর নলকূপ আছে ৩৯ হাজার ৮৬২ টি। বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ-২ জানান, জেলার ১১৪৬ টি গভীর নলকূপের মধ্যে তারা ১০৬৬ টি নিয়ন্ত্রণ করছেন। কৃষি বিভাগ জানায়, সব সেচ যন্ত্রই চলছে না। ৫৭ হাজার ২০০ হেক্টরের মধ্যে পানি কমে যাওয়ায় নদীর দুই পাশে, খাল, বিল ও পুকুরে চাষ হবে আনুমানিক ৫ হাজার হেক্টরে। শীর্ণকায় নদীর বুকে, পানি কমে যাওয়ায় খাল, বিল ও পুকুরে বোরো চাষের জন্য কৃষকেরা উঠে পড়ে লেগেছে।
জেলার টাংগন, সেনুয়া, সুক, নাগর, কুলিক ইত্যাদি নদীতে এখন পানি কম। মাঝের শীর্ণ পানির স্রোত বাদ দিয়ে বাকী অংশে বোরো চাষ চলছে। টাংগন নদীর বুকে ধান চাষরত কয়েকজন কৃষক জানান, তাদের জমি নেই। তাই তারা এখানে ধান চাষ করছেন। এখানে সেচ খরচ নেই, সারেরও তেমন প্রয়োজন হয় না। হঠাৎ বন্যা না হলে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তারা। কৃষি বিভাগ জানায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ৩২ হাজার ৪১৫ হেক্টরে বোরো চাষ হয়েছে। বোরো চাষ চলবে ১৫ মার্চ পর্যন্ত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হায়াত জানান, ধান চাষ যেভাবে এগিয়ে চলছে তাতে ১৫ মার্চের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। তিনি জানান, ফুলের পরাগায়নের সময় তাপমাত্রা কম হলে অর্থাৎ ১৫ থেকে ১৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস কম হলে ধান চিটা হয়ে যায়। আবার ৩৮ ডিগ্রীর বেশি হলেও ধান চিটা হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে সাধারণত দেরিতে বোরো চাষ হয়। এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় অর্থাৎ পরাগায়নের সময় এখানে তাপমাত্রা কেমন হবে তার উপর নির্ভর করবে ফলন। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২ লাখ ২৩ হাজার ১৮৮ মে.টন ফলন (চালের আকারে) পাওয়া যাবে। ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯, পূর্বাচি জাতের ধানের ফলন অন্যান্য জাতের চেয়ে বেশি, হেক্টর প্রতি ৬ থেকে ৭ মে.টন। তাছাড়া এই জেলায় বেশ কিছু জমিতে চিকন ও সুগন্ধি জাতের ধান চাষ হচ্ছে। রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফণী ভূষণ রায় জানান, এই উপজেলায় প্রায় একশ’ হেক্টরে চিকন ও সুগন্ধি ধানের আবাদ হচ্ছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
About Me
- Participatory Research & Action Network- PRAN
- প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।
Krishi Khobor
-
▼
2009
(122)
-
▼
March
(9)
- জলবায়ু পরির্বতনের কুফল রোধে কৃষি ও বনায়ন!
- কমছে আবাদি জমি বাড়ছে খাদ্য সংকট
- কম দাম পেলে উৎপাদন ব্যাহত হবে
- ঠাকুরগাঁওয়ে চিকন ও সুগন্ধি ধানের আবাদ বাড়ছে
- বিভিন্ন স্থানে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশংকা লোডশেডিং
- বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং ইরি-বোরো আবাদ হুমকির মুখে
- কৃষকের দিন বদলই হলো আসল চ্যালেঞ্জ
- লোডশেডিংয়ে দিশেহারা সাটুরিয়ার কৃষক
- গলাচিপায় কম দামে ধান বিক্রি করছে কৃষক
-
▼
March
(9)
No comments:
Post a Comment