Tuesday, May 19, 2009

শেরপুরের কৃষকরা গুদামে ধান দিতে পারছেন না

১৯.০৫.০৯
ডেসটিনি ।। আইয়ুব আলী, শেরপুর (বগুড়া)।।

সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও বগুড়ার শেরপুরের কৃষকরা গুদামে ধান দিতে পারছেন না। কৃষকরা ধান দিতে প্রস্তুত থাকলেও তালিকায় তাদের নাম না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে জেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আনা হয়েছে স্থানীয়ভাবে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে কৃষক তালিকা সংগ্রহের কথা বলা হলেও স্থানীয়ভাবে পরিবর্তন এনে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নাম জুড়ে দিয়েছেন। আর এতেই দেখা দিয়েছে যত বিপত্তি। অল্প পরিমাণ বরাদ্দ পাওয়া ধান কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়তে পারেনÑ এ ভয়ে চেয়ারম্যানরা তালিকা তৈরিতে সময় কালক্ষেপন করছেন। ফলে চলতি মাসের অর্ধেক সময় পার হলেও গুদামে ধান উঠছে না।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অভ্যন্তরীণ বোরো ধান সংগ্রহ অভিযান সফল করতে ৪ মে জেলা প্রশাসক ইফতেখারুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে জেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, জেলা কমিটির কার্যপরিধি ২২গ(১) নং এর আলোকে এক এলএসডি বিশিষ্ট উপজেলা যেমন শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, কাহালু উপজেলার প্রাপ্ত লক্ষ্যমাত্রার বিভাজনের কোনো অবকাশ নেই। জেলার অবশিষ্ট ৮টি উপজেলায় একাধিক এলএসডি রয়েছে। ক্রয় কেন্দ্রভিত্তিক ধান বিভাজনের জন্য উপজেলা কমিটিকে দায়িত্ব অর্পণ করা যায়। সেখানো আরো বলা হয়েছে, প্রতি কৃষক সর্বনিম্ন ৭০ কেজি এবং সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিকটন ধান বিক্রয় করতে পারবেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজারদের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা) কাছ থেকে কৃষক তালিকা সংগ্রহ করবেন। তালিকা অনুযায়ী আগে এলে আগে ভিত্তিতে কৃষকদের কাছ থেকে মানসম্মত ধান সংগ্রহ করা যেতে পারে বলা হয় ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে জানা যায়, চলতি মাসে শেরপুর উপজেলায় ৪৬৯ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার দুটি খাদ্য গুদামে ৭ মেট্রিকটন ১৪ কেজি ধান সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ জানান, তিনি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। কিন্তু কৃষক ধান নিয়ে না আসায় কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণ জানতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুস সাত্তার ম-লের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কয়েকদফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলার ভবানীপুর ইউপি চেয়ারম্যান জি এম মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের কৃষকদের কাছ থেকে মাত্র ৫৯ মেট্রিকটন ধান নেয়া হবে। এ অবস্থায় তিনি কোনো কৃষককে বাদ দিয়ে নাম তালিকাভুক্ত করবেন। তিনি তাদের তোপের মুখে পড়তে চান না। তাই তিনি ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কৃষক তালিকা করার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশালপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস এম রাফিউল ইসলাম লাবু জানান, তিনি গত বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে এ ধরনের একটি চিঠি পেয়েছেন। সে মোতাবেক ইউনিয়নের সব কৃষক পরিবারকে আলোচনার জন্য ডেকেছেন। মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী মন্টু জানান, তিনি আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে কৃষকদের নাম তালিকাভুক্ত করে তাদের ধান বিক্রির ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। তাই কোনো কৃষক তার কাছে এলে তিনি তাকে স্লিপ দেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানান, কৃষক শনাক্ত করার পর কেউ এ ধরনের সমস্যায় পড়লে তাকে দ্রুত কার্ড দেয়ার জন্য উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইউএনও মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, চলতি মাসে যেসব কৃষক ধান দেবেন তারা আগামী বরাদ্দে ধান দিতে পারবে না।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।