Thursday, March 5, 2009

বিভিন্ন স্থানে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশংকা লোডশেডিং

২৮.০২.০৯
ইত্তেফাক ।। উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা ।।

কক্সবাজারের সবচেয়ে বিদ্যুৎ নির্ভর উখিয়ার সেচ কার্য মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমান সময়ে চাহিদার এক তৃতীয়াংশও বিদ্যুৎ সরবরাহ মিলছে না। যা পাওয়া যায় সে সময়ে ঘন্টায় ন্যূনতম ১৫/১৮ বার বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভাগের চালুকৃত আন্ডার ফ্রি কোয়েন্সির নতুন যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ উখিয়ার গ্রাহক সাধারণ।

উখিয়ার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জীবনে লোডশেডিং নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হলেও চলতি শুষ্ক মওসুমে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং এ জনজীবনে অসহ্য যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে। কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উখিয়া জোনাল অফিসের তথ্য মতে, পিক আওয়ারে এখানে সাড়ে পাঁচ মেগাওয়াটের মত এবং অফ পিক আওয়ারে সাড়ে চার মেগাওয়াটের মত বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম নূরুল হোসাইন জানান, পিকআওয়ারে দুই থেকে আড়াই এবং অফ পিক আওয়ারে এক থেকে দেড় মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ মিললেও তা নিরবচ্ছিন্ন নয়। এ প্রেক্ষিতে গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে আন্ডার ফ্রি কোয়েন্সি নামের অন্য যন্ত্রণা। বিদ্যুৎ সরবরাহকালে ঘন্টায় ১৫/১৮ বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার ফলে সেচ পাম্পসহ ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রী নষ্ট হচ্ছে। আন্ডার ফ্রি কোয়েন্সি সম্পর্কে ডিজিএম জানান, বিভিন্ন গ্রীড সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুতের সমতা আনতে এ ব্যবস্থা চালু হলেও অতিষ্ঠ গ্রাহকদের গাল-মন্দ, হুমকির কারণে অধিকাংশ সময় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে হয়। উখিয়ায় ১২শ সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়। এছাড়াও বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর আশংকার কথা উল্লেখ করে দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নতি ও গ্রাহক যন্ত্রণার ফ্রি কোয়েন্সি পদ্ধতি প্রত্যাহার করতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী বরাবরে পত্র প্রেরণ করা হলেও পরিস্থিতির কোন উন্নতি ঘটছে না।

কৃষি বিভাগের উখিয়া সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সৈয়দ নূর জানান, চলতি বোরো চাষ, উৎপাদন, সেচ প্রভৃতি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে তারা চিন্তিত। চলতি বোরো মওসুমে সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের অবস্থা দেখে পাঁচ হাজার হেক্টরও পুরোপুরি চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। চাষকৃত বোরোতে প্রয়োজনীয় সেচ দিতে না পারায় অনেক কৃষক ফলনের আশা ছেড়ে দিচ্ছে। অনুরূপভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রভাব পড়ছে ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা অফিস পাড়া, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়ার এবং উখিয়ায় অবস্থিত ২৫টি চিংড়ি পোনা উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান মারাত্মক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানা গেছে।

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) সংবাদদাতা ।। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে পল্লী বিদ্যুতের লোডশোডিং চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন বিদ্যুৎ আসাযাওয়ার ভেল্কিবাজীতে জনসাধারণ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। গড়ে প্রতিদিন ৬/৭ ঘন্টা লোডশেডিং থাকে। সন্ধ্যার সাথে সাথে বিদ্যুৎ চলে গেলে আর আসার খবর থাকে না। বিদ্যুতের অভাবে কৃষকদের ইরি বুরো আবাদ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় নিয়মিত সেচ দিতে না পারার কারণে কৃষকও পাম্প মালিকদের মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া বিবাদের ঘটনা ঘটছে। এছাড়া এসএসসি দাখিল ও অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা লেখা পড়া করতে পারছে না। ঘন ঘন বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার কারণে টিভি ফ্রিজসহ ইলেট্রনিক্স মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

নাঙ্গলকোট পল্লী বিদ্যুৎ ডিজিএম রহমতে সোবহান জানান, নাঙ্গলকোটে ১০ মোগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে সরবরাহ পাওয়া যায় ২/৩ মেগাওয়াট।

মহাবেদপুর (নওগাঁ) সংবাদদাতা ।। নওগাঁর মহাদেবপুর বিদ্যুতের লোডশেডিং এর কারণে চলতি মৌসুমে ইরি বোরো চাষ চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিদু্যুতের অভাবে সেচ দিতে না পারায় অনেকস্থানে সদ্য রোপিত ইরি বোরোর চারা শুকিয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৯ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরোর চাষ হয়েছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএসডি) ৫১৪টি বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূল বসিয়েছে এসব ক্ষেতে পানি সেচের জন্য। কিন্তু দিনে রাতের বেশির ভাগ সময়ই বিদ্যুৎ না থাকায় এই এলাকার সেচ ব্যবস্থা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে।

স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন দিন-রাত ২৪ ঘন্টার মধ্যে ২-৩ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে সঠিকভাবে সেচ দিতে না পারায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ অফিস থেকে জানানো হয় সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ২৪ মেগাওয়াট সেখানে সরবরাহ রয়েছে মাত্র ৪ মেগাওয়াট। এ কারণে লোডশেডিং হচ্ছে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।