Friday, February 27, 2009

তজুমদ্দিনের শম্ভুপুরে রেণুপোনা চাষিদের দুর্দিন

২৪.০২.০৯

ডেসটিনি ।। ভোলা প্রতিনিধি
তজুমদ্দিন উপজেলার শম্ভুপুর মৎস্য পল্লীতে রেণু পোনা উৎপাদনে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন চাষিরা। সার ও খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে চাষিরা সহজশর্তে ঋণ না পাওয়ায় অর্থ সংকটে উৎপাদনের হার অনেকটা কমে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি হ্যাচারি। চালু হ্যাচারিগুলো আসন্ন মৌসুমে পুরোমাত্রায় রেণু উৎপাদন করতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে মৌসুমের শুরুতে মৎস্যচাষি ও ব্যবসায়ীসহ সবাই উদ্বিগ্ন। বিগত মৌসুমে অনেকেই লোকসানের শিকার হয়েছেন। এ ইউনিয়নটিতে প্রায় অর্ধশত হ্যাচারি রয়েছে। কিন্তু অর্থ সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মৎস্য কর্মকর্তাদের সঠিক পরামর্শের অভাবে এবং সরকারিভাবে সহজশর্তে চাষিরা ঋণ না পাওয়ায় দিন দিন এ অঞ্চলের রেণুপোনা উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। চৈত্র থেকে মধ্য আষাঢ় পর্যন্ত রেণু পোনা উৎপাদনের ভরা মৌসুম। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি রেণু পোনা উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে অগ্রহায়ণের শুরু হয়ে যায় আসন্ন মৌসুমের প্রস্তুতি। তজুমদ্দিনের লামছি শম্ভুপুরের হ্যাচারিগুলোয় রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, তেলাপিয়া পাঙ্গাশসহ প্রভৃতি মাছের পোনা উৎপাদন হয়ে থাকে। এ উপজেলার হ্যাচারিগুলো থেকে ভোলা জেলার অন্যান্য উপজেলায় দৈনিক কয়েক লাখ পোনা ক্রয় বিক্রি হয়। প্রায় ২ হাজার লোকের বেশি মাছ উৎপাদন ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট পেশায় জড়িত রয়েছে। চাষি নাছির পাটওয়ারী জানান, সার ও প্রয়োজনীয় দ্রবমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং উৎপাদন ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে অনেকের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মাছ চাষ করবেন না। এ মুহূর্তে চাষিদের ঋণের প্রয়োজন। এ ছাড়া গত বছর অনেককেই লোকসান গুনতে হয়েছে। এবার মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রেণুর মূল্যে বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

গোয়ালন্দে ভেজাল কীটনাশকের কারণে উৎপাদন হ্রাস

২০.০২.০৯
ডেসটিনি ।। গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

গোয়ালন্দে ভেজাল সার ও কীটনাশকের কারণে গোয়ালন্দের সাধারণ কৃষকদের মাথায় হাত দেয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উৎপাদন খরচ না ওঠায় অনেক কৃষকই দিশেহারা হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার গোয়ালন্দে ১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়। এর মধ্যে শুধু টমেটোর আবাদ হয়েছে ৫৭৫ হেক্টর জমিতে। অন্যান্য সবজির কোনো পরিসংখ্যান কৃষি অফিস দিতে পারেনি। সবজি চাষে অন্যান্য বছরে কৃষকরা বেশ সাফল্য লাভ করলেও এবার চাষাবাদ একটু বেশিই হয়েছিল; কিন্তু তেমন ফলন হয়নি। সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু উজানচরের নতুন পাড়া এলাকায় প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়েছে; কিন্তু অন্যান্য বছরের মতো এবার তারা ভালো ফলন পাননি।

বড়লেখায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহতের আশঙ্কা

২০.০২.০৯
ডেসটিনি ।। বড়লেখা (মৌলভীভাজার) প্রতিনিধি

বড়লেখায় বোরো চাষের মৌসুম শুরু থেকেই বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন কৃষকরা। গত বছর লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ জমিতে বোরো ফসলের বাম্পার ফলন হলেও চলতি মৌসুমে নানা প্রতিকূলতার কারণে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা যায়, উপজেলা কৃষিবিভাগ এবার প্রায় সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। মৌসুমের শুরুতেই দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কবলে পড়েন কৃষকরা। পাহাড়ি ছড়া, নালা ও খালে পানি প্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে যায়। উপজেলার ৪০/৫০টি ছড়া-নালায় বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ না নেয়ায় পানির অভাবে ফসলের মাঠ চৌচির হয়ে ওঠে।
বোরো চাষিরা জানান, সুষ্ঠু সেচ ব্যবস্থা না থাকায় বোরো ফসলের মাঠ ফেটে যাচ্ছে, দেখা দিচ্ছে নানা মড়ক। উপজেলায় বোরো চাষে ব্যবহারের জন্য যে কয়টি সেচ পাম্প রয়েছে তা নিয়েও ঘটছে তুঘলকি কা-। কৃষিবিভাগ ফসলের মাঠ থেকে সেচপাম্প জব্দ করছে আবার তাৎক্ষণিভাবে তা অন্য কৃষককে বরাদ্দও দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি মিটাতে না পারলে কৃষকের ওপর নেমে আসছে নানা খড়গ। প্রকৃত অনেক কৃষকের অভিযোগ বোরো ধান চাষাবাদে নানা সমস্যার সম্মুখীন হলেও কৃষি অফিসের পছন্দের ২/৪ জন কৃষক ছাড়া অন্যরা কৃষি অফিস থেকে তেমন সাহায্য সহযোগিতা পান না। উপজেলায় বিশাল কৃষিজমি থাকা সত্ত্বেও ঘুরেফিরে একই স্থানে স্থানীয় কৃষিবিভাগ সরকারি কার্যক্রম পরিচালিত করায় কৃষকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নীরব ক্ষোভ বিরাজ চলছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল মোন্নাফ জানান, ১০০টি সেচ পাম্পের মধ্যে ৮৫টি সচল রয়েছে। বিভিন্ন যন্ত্রপাতির অভাবে বাকিগুলো সচল করা যাচ্ছে না। বাঁধ নির্মাণের জন্য সরকার থেকে কোনো বরাদ্দ আসেনি। তবে স্থানীয়ভাবে পানি সেচের সুবিধার্থে বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে।
এদিকে হাকালুকি হাওরপাড়ের কৃষকরা জানান, পরিকল্পনার অভাবে প্রতি বছর অকাল বন্যায় বিপুল পরিমাণ পাকা-অর্ধ পাকা বোরো ফসল তলিয়ে যায়। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ফসল রক্ষার্থে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। যদিও বেড়িবাঁধ নির্মাণের উপযুক্ত সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী নাজির আহামেদ চৌধুরী জানান, বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই।

উত্তরাঞ্চলের আলুচাষিদের মাথায় ১০ হাজার কোটি টাকা দেনা

১৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। সুমন হাসান/নজরুল মৃধা, রংপুর থেকে

‘আলুর দাম যেমুন কমতছে তাতে মোর বস্তা প্রতি প্যারায় ৩০০ টাকা লোকসান হবার নাগছে। গেলোবার ভালো দাম পাইছিনু। তাই এইব্যার ধারদেনা করি আলু খেতত নাইগাইসিনু। কিন্তু আশা মতন ফলন না হওয়ায়, আর দাম কমি যাওয়ায় মোরগুলার অবস্থা ক্যারাসিন। মুই দেনা কি করি শোধ করিম। ছৈল, পৈলক কি খিলাইম। এই চিন্তাত মুই অস্থির। এবার ঠাঁইমোক মরা খাইবে।’ সারা মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কথাগুলো বললেন রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের স্বচাষ গ্রামের আলু চাষি বুলবুল। এমন অবস্থা কেবল বুলবুলেরই নয়, পুরো উত্তরাঞ্চলের দেড় লক্ষাধিক আলু চাষির। তারা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে এখন দিশেহারা। চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই অনেক প্রত্যাশা নিয়ে চাষিরা মাঠজুড়েই আরম্ভ করেছিল আলু চাষ। কারণ একদিকে গেল বছর হয়েছিল আলুর বাম্পার ফলন ও পেয়েছিল ভালো দাম। তাই এবার কৃষকরা দেনা করে হলেও জোরালোভাবে আলু চাষে ঝুঁকেছিল। ধারদেনা করতেও পিছপা হয়নি। এমনকি অনেকে জমি লিজ নিয়েও আলু আবাদ করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা হওয়ার তাই হয়েছে। বিভিন্ন এনজিও, দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আজ তারা বড় বেকায়দায়। আর এর অন্যতম কারণ লেটব্লাইট রোগের সংক্রমণে ফলন ও দাম কমে যাওয়া। ফলে ঋণের দায় থেকে মুক্ত হতে চাষিরা অপরিপক্ব আলু জমি থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করছে উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রতি বস্তায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা লোকসানে।
রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট কুড়িগ্রাম, নীলফামারীসহ এ অঞ্চলের মাঠপর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, গত বছর এক বিঘা আলু আবাদ করতে চাষ থেকে আরম্ভ করে আলু উত্তোলন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। আবার এলাকাভেদে তা ২০ হাজার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এবার সমপরিমাণ জমি আবাদ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, গত বছর বাম্পার ফলন হওয়ায় উৎপাদিত ৮৫ কেজির বস্তার খরচ পড়েছিল ৪৮০ টাকা থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার টাকায়। এর অন্যতম কারণ হিসেবে জানা গেছে, গত বছর প্রতি বস্তা টিএসপি সারের দাম ছিল সাড়ে ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা; যা এবার কৃষকদের কিনতে হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার থেকে প্রায় ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। তেমনি ২৯৫ টাকার ইউরিয়া এবার কিনতে হয়েছে প্রায় ৬০০ টাকায়। ১২০০ টাকার ভিটামিন গ্রুপের ওষুধ কিনতে হয়েছে আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকায়। এভাবে বিভিন্ন বালাইনাশক ওষুধ কিনেছে দ্বিগুণেরও অধিক দামে। এ ছাড়াও লেবার, সেচসহ অনান্য খাতে খরচ হয়েছে গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, অধিক দামে ওষুধ কিনে তা জমিতে ব্যবহারের মাধ্যমে মড়ক রোগ দমন করতে গিয়ে আলুর গাছ জীবিত থাকলেও মাটির নিচের আলু পচে গেছে। আলুর সাইজ হয়েছে ছোট। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তা ছাড়াও ফলন আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কায় অপুষ্ট আলু জমি থেকে তুলতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। এসব আলু কোল্ড স্টোরেজ করার উপযোগী না হওয়ায় সংরক্ষণের অভাবে বাজারে কমমূল্যে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। যার কারণে বাজারে আলুর দাম কমে গেছে অনেকের মন্তব্য।
স্থানীয় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। অথচ গত বছর এ সময়ে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি হয়েছিল ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। ফলে প্রতি বস্তা আলুতে চাষিরা লোকসান গুনছেন ৩৫০ থোক ৪০০ টাকা। এ অবস্থার উত্তোরণ করা না গেলে উত্তরাঞ্চলের ৪০ হাজার ক্ষুদ্র, ২০ হাজার বর্গা ও ২৫ হাজার জমি লিজে নেয়া চাষি লাভ তো দূরে থাক উৎপাদন খরচই তুলতে পারবে না বলে চাষিরা বলছেন।
আঞ্চলিক খামারবাড়ি একটি সূত্র জানায়, অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত বছর উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় প্রায় আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়। যা থেকে আলু প্রতি হেক্টরে গড়ে ২০ মেট্রিক টন করে অর্থাৎ ৫০ লাখ টনের ওপরে আলু উৎপাদন হয়েছিল গত বছর। আর আলু উত্তোলনের সময় যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এবার ২ লাখ ৮৬ হেক্টর অর্থাৎ ৮ লাখ ৫৮ হাজার একর জমিতে আলুর চাষ করেছেন চাষিরা।
পীরগাছা উপজেলার আলু চাষি আফতাব হোসেন জানান, উৎপাদন খরচের সঙ্গে ফলন ও বিক্রয় মূল্যের আকাশ-পাতাল ব্যবধানের কারণে আমাদের ঘুম নেই। ভারত থেকে যদি আলু আরো অধিকহারে দেশে প্রবেশ করে তবে আলুর দাম প্রতি বস্তা ৫০০ টাকার নিচে নেমে যাবে, যা হবে এই অঞ্চলের আলু চাষিদের জন্য বড় সমস্যা। তার দাবিÑ এ অঞ্চলের চাষিদের কাছ থেকে সরকারিভাবে হাজার টাকা দিয়ে প্রতি বস্তা আলু ক্রয় করা হোক। অন্যদিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর হরিশংকপুরের চাষি আবুল কালাম, লালমনিরহাটের আদিতমারির মহিশখোচা চাষি ওবায়দুল ইসলাম, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা চরের চাষি আবদুল কুদ্দুস এমন ধরনের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
রংপুর চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী জানিয়েছেন, উত্তরাঞ্চলে বিকাশমান আলু উৎপাদনে ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থেই সরকারের কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ প্রয়োজন। নইলে আগামী মৌসুমে চাষিরা হয়তো আলু আবাদ থেকে সরে দাঁড়াবে।

চকচকে মোড়কে ভরে বিক্রি করা নিম্নমানের বীজ কিনে কৃষকরা বারবারই ঠকেছেন

১৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি

রকমারি ফসলের মধ্যে নানা নামে চকচকে মোড়কে ভরে বিক্রি করা নিম্নমানের বীজ কিনে কৃষকরা বারবারই ঠকেছেন। এবার বাসরী জাতের সরিষা আবাদ করে দামুড়হুদা এলাকার কৃষকরা প্রত্যাশিত ফলন না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। তারা বলেছেন, বাসরী জাতের সরষের বীজ বাজার থেকে কিনে আবাদ করার পর গাছের ধরন দেখে আবাদ ভালো হওয়ার স্বপ্ন জাগে। ফুলও ধরে বেশি। কিন্তু ফলে নেই সরিষা। অথচ যখন বীজ কেনা হয় তখন বিক্রেতারা ভালো ফলন হবে বলে প্রচার করে বাসরী জাতের তুলনাই বিএডিসির পাক্কারাম জাতের সরিষা ফলন বেশ ভালো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সরষে চাষের আবাদ লক্ষমাত্রা অতিক্রম করে। ১ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে সরষে আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমি। সরষের আবাদ দেখে কৃষকদের মধ্যে লাভের আশা জাগে। বিশেষ করে বাসরী জাতের সরষের আবাদের জমিতে সরিষা গাছ ও ফুল দেখে। কৃষকের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করে। অবাক হলেও সত্য যে গাছ ও ফুলের তুলনায় ফলের মধ্যে কোনো সরিষা নেই। যারাই বাজার থেকে বাসরী জাতের বীজ কিনে সরিষা আবাদ করেছে তাদের দশা এবার একেই রকম। বীজ বিক্রেতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রত্যাশিত সরিষা না পেয়ে কৃষকরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, কৃষকদের সঙ্গে বীজ ও কীটনাশক বিক্রেতাদের প্রতারণা থেমে নেই। বীজ বিক্রয়ের সময় লোভনীয় নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বীজ বিক্রয় করে। সেই বীজ নিয়ে আবাদ করে প্রতারিত হন কৃষকরা। দামুড়হুদা এলাকার সরিষা চাষিদের মধ্যে দামুড়হুদা হাওলী গ্রামের শুকুর আলী খা, গোলাম হোসেন, আবুল কালামসহ অনেকেই অভিন্ন ভাষায় বলছেন, বাসরী জাতের সরিষে বীজ যখন কিনেছিলাম তখন বিক্রেতাদের অনেকেই বলেছেন ৬ থেকে ৭ মণ সরষে পাওয়া যাবে। সেই আশায় বিক্রিতাদের ওপর অন্ধ বিশ্বাস ওই বীজ নিয়ে আবাদ করে এখন সেই আশার গুড়েবালি। বিঘাপ্রতি ২ থেকে আড়াই মণের বেশি সরিষা পাওয়া যাচ্ছে না। ।

বোরোতে স্বপ্ন বাঁধছেন সাভারের কৃষক

১৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। সাভার প্রতিনিধি

সাভারের কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষাবাদে। আসছে বৈশাখে ঘরে উঠবে তাদের সোনার ফসল বোরো ধান। সেই স্বপ্ন নিয়ে এখন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন অবিরত। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাভারের ১২টি ইউনিয়নে বোরো ধান উৎপাদনে ১১,৯১০ হেক্টর জমিতে ৪৬,২১৯ মে. টন চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১১,৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানো হয়েছে। সেচের সুবিধার্থে ১,৩৭৬টি সেচযন্ত্র চালু রয়েছে। সুষম সার ব্যবহারে গুটি ইউরিয়া ও এলসিসির ফলপ্রসূ কার্যক্রমে কৃষকদের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সমন্বিত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সেই প্রশিক্ষণ পেয়ে ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে ১,২৬৫ জন কৃষক গুটি ইউরিয়া ও ৩,৯৯০ জন কৃষক এলসিসি পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান ডেসটিনিকে বলেন, এবারে বোরোর যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে আশা করছি তা ছাড়িয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই কৃষকদের সুষম সার ব্যবহারে প্রশিক্ষণ, উন্নত বীজ ও সেচ ব্যবস্থাসহ সব প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে পর্যায়ক্রমে সাভারের ১২ টি ইউনিয়নে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার বিতরণ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

দিনাজপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে

১৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। দিনাজপুর অফিস

দিনাজপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে আড়াই লাখ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। বাজারে দেশীয় সরিষার চাহিদা থাকায় চাষীরা সরিষা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় বিভিন্ন এলাকায় এ সরিষা চাষ করা হয়। সরিষার জমিতে বোরো চাষ করতে কিছু চাষী আগাম সরিষা বীজ বপন করায় ইতিমধ্যে তারা মাড়াই কাজ শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার ফলনও বাম্পার হবে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে।
কৃষি স¤প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এই ১৬ জেলায় ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা ছাড়িয়ে গেছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ টন। এর মধ্যে দিনাজপুরে ৪ হাজার ৫০০ হেক্টরে, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টরে, পঞ্চগড়ে ৬ হাজার হেক্টরে, রংপুরে ১২ হাজার হেক্টরে, গাইবান্ধায় ১৪ হাজার হেক্টরে, কুড়িগ্রামে ১৪ হাজার হেক্টরে, লালমনিরহাটে ১ হাজার হেক্টরে, নীলফামারীতে ৫ হাজার হেক্টরে, রাজশাহীতে ২১ হাজার হেক্টরে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০ হাজার হেক্টরে, নওগাঁয় ২৩ হাজার হেক্টরে, নাটোরে ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টরে, জয়পুরহাটে ৫ হাজার হেক্টরে, পাবনায় ২৯ হাজার ১৫০ হেক্টরে, বগুড়ায় ১০ হাজার হেক্টরে এবং সিরাজগঞ্জ জেলায় ৮০ হাজার হেক্টরে সরিষা আবাদ করা হয়েছে।

বন্ধ হয়ে গেছে বিকল্প সেচ ব্যবস্থা কিশোরগঞ্জে পানির অভাবে ৪০০ একর জমির ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা

১৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

পানির অভাবে সেচ দিতে না পারায় কিশোরগঞ্জের ২টি উপজেলার ১০টি গ্রামের ৪০০ একর জমির বোরো আবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এবং ১৩টি সেচ পাম্প মাটির নিচের পানির অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন কোনো ভূমিকা রাখছে না বলে অভিযোগ করেছেন বোরো চাষিরা। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চংশোলাকিয়া, কোর্টশোলাকিয়া, বাদেশোলাকিয়া, কালোরারচর, আগপাড়া, সালিম গাজী, দরিয়াবাদ ও মহিনন্দ এবং করিমগঞ্জ উপজেলার সাংগাইল, পাঠানপাড়া ও সাতারপুর গ্রামে ১০টি স্কিমের আওতায় ৪০০ একর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়। যাতে ধান উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪ হাজার মণ। উপযুক্ত সময়ে পানির প্রচ- অভাব দেখা দেয়ায় প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেচ পাম্প মালিকদের অব্যবস্থাপনা এবং বিএডিসির খামখেয়ালিপনার কারণে এ করুণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। চংশোলাকিয়া গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, ‘প্রচুর টাকা খরচ করে ধান রোপণ করেছি। স্কিমের সেচ প্রদানকারী ধান কাটার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পানি প্রদানের আশ্বাস দিলেও এখন পানি দিতে পারছে না। জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।’ কালোরারচর গ্রামের কৃষক রাসেল মিয়া জানান, ‘আমাদের দুর্দশার দিকে কেউ তাকায় না। আল্লাহর দয়া চাওয়া ছাড়া কি করবো আমরা?’
রঘুখালী-দরিয়াবাদ ও রঘুখালী-সাতারপুর মজিদ বিকল্প ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মজিদ জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে বিকল্প সেচ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলাম এবং অনেক কৃষক উপকৃতও হচ্ছিলেন। কিন্তু একশ্রেণীর অর্থলোভী ব্যক্তি আমার গড়া প্রকল্পে অবৈধভাবে মেশিন বসিয়ে পানি তুলে ফেলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিএডিসিকে অবহিত করলেও প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করছে না।

পানির অভাবে বোরো চাষ ব্যাহত

১৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ

‘এবার বরুয়া (বোরো) অইত নায়। আমরার মরা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। এক কিয়ার জমিনে আড়াই হাজার টেকা খরছ করিয়া অখনও পানি নাই। আগে লাঘাটাতে পানি ভরা থাকত আর অখন লাঘাটাতও পানি নাই।’ অসহায়ের মতো কথাগুলো বলছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের কৃষক শেরওয়ান আলী ও আক্তার মিয়া। বর্তমান বোরো আবাদের ভরা মৌসুমে কমলগঞ্জের নদী ও ছড়াগুলোর উজানে একাধিক ক্রসবাঁধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা। ফলে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক জমিতেও বোরো চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না। নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা বেশি নির্ভরশীল ছিলেন লাঘাটা নদীর ওপর। কিন্তু তারা এখন সেই নদীর পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাম্পের মাধ্যমে সেচ দেয়ার মতো পানিও পাচ্ছেন না কৃষকরা। তাই আবাদ করা জমিগুলোও এখন পানির অভাবে খাঁ খাঁ করছে। ফলে ১৬০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ গত বছর কমলগঞ্জে একসময়ে পড়ে থাকা অনাবাদি ১২০৯ হেক্টর জমিতে সরকারি সহযোগিতায় বোরো আবাদের মধ্য দিয়ে উপজেলা কৃষি অধিদফতরের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ বোরো চাষাবাদ হয়েছিল।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে ৮৮০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১৬৩০ হেক্টর জমিতে উফসীসহ মোট ২৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ২১০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ৭০৫ হেক্টর জমিতে উফসী আবাদ হয়েছে। সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, প্রতি বছর লাঘাটা নদী থেকে সেচ সুবিধা নিয়ে নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা বোরো চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করেন। কিন্তু এ বছর সেই নদীতে পানি সংকটের কারণে ও পর্যাপ্ত সেচ সুবিধার অভাবে বোরো চাষাবাদের ভরা মৌসুমে বোরো নির্ভরশীল কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। চলতি বছর লাঘাটা নদীতে পানি একেবারেই কম, তার ওপর উজানের একাধিক স্থানে ক্রসবাঁধ নির্মিত হওয়ায় নদীর নিম্নাঞ্চল এলাকায় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। কমলগঞ্জের নিম্নাঞ্চল এলাকা শমসেরনগর, মুন্সীবাজার ও পতনউষার ইউনিয়নের বোরো চাষাবাদকৃত কেওলার হাওর সংলগ্ন এলাকায় বিদ্যুতায়ন না থাকায় পড়ে থাকা অনাবাদি প্রায় ৫০০ একর জমিতে বোরো চাষাবাদ সম্ভব হচ্ছে না। শমসেরনগর ইউনিয়নের কৃষক ফজলু মিয়া, সিদ্দিকুর রহমান, পতনউষার ইউনিয়নের কৃষক আক্তার মিয়া, শেরওয়ান আলী, জুয়েল আহমদ, ডা. আবু বক্কর ও মুন্সীবাজার ইউনিয়নের কৃষক মোজাহিদ আলী বলেন, উপজেলার নিম্নাঞ্চল এই এলাকায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকরা সাধারণত বোরো চাষের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু উজানের ক্রসবাঁধগুলো থেকে অতিরিক্ত পানিও ছাড়া হচ্ছে না। তাছাড়া কেওলার হাওর সংলগ্ন শ্রীসূর্য ও ধূপাটিলা গ্রাম এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। এলাকায় বিদ্যুৎ থাকলে সেচ সুবিধার মাধ্যমে পড়ে থাকা অনাবাদি আরো ৫০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা যেত। কিন্তু যথাসময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং নদীতে পানি না পাওয়ায় বোরো চাষের ওপর নির্ভরশীল কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়ছেন। লাঘাটা নদীসহ ছোটবড় বিভিন্ন ছড়ার উজানে একাধিক বাঁধ নির্মাণ করায় সৃষ্টি হয়েছে পানির সংকট। কৃষি বিভাগ বা উপজেলা প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিয়ে পলি নালার ব্যবস্থা করছে না। এতে কৃষকরা পড়েছেন মহাচিন্তায়। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নরেশ চন্দ্র বাড়ৈ বলেন, পানি সংকট কমানোর জন্য অচিরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎ ও গলাচিপায় পানি সংকটে বোরো চাষ ব্যাহত

১৭.০২.০৯
ডেসটিনি ।। শ্যামল বাংলা ডেস্ক

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎ ও গলাচিপায় পানির অভাবে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আমাদের লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধে জানান, বোরো আবাদ মৌসুমে পুরো মাত্রায় শুরু হলেও অনেক সেচ প্রকল্পের মালিক এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ পাননি। বিদ্যুতের সংযোগ কবে নাগাদ পাওয়া যাবে সে ব্যাপারেও নিশ্চিত নন তারা। এ ছাড়া ঘনঘন লোডশেডিংয়ের ও লো-ভোল্টেজের কারণে বেশিরভাগ সেচ প্রকল্পেই চাহিদা মতো পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না এমন অভিযোগ করছেন সেচ প্রকল্পের মালিক ও কৃষকরা। এদিকে সেচ প্রকেল্পে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রসঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো সেচ কাজে নতুন সংযোগ মিটার নিয়ে সারা দেশে অভাব চলছে। আরইবি থেকে চাহিদা মতো মিটার না পাওয়ার সেচের জন্য যত আবেদন জমা পড়েছে তার বিপরীতে মিটার দেয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (সদস্য সেবা) মৃণাল কান্তি চৌধুরী জানান, এ বছর সেচের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ চেয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন জমা পড়ে ৫৫১টি। এর মধ্যে গত ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪৫৩ জনকে মিটার দেয়া হয়েছে। বাকি ৯৮ জনকেও পর্যায়ক্রমে মিটার দেয়া হবে। কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে চাহিদা মতো মিটার না পাওয়ায় তাদের এমন সমস্যা পড়তে হয়েছে বলে তিনি জানান। সমিতিরি জেলা নসদর দফতর অফিসের আওতায় সেচ সংযোগ দেয়া হয়েছে ২৮৭টি। এর মধ্যে এলএলপি ১৮৪, অগভীর ৮৮, গভীর ১৫টি। রায়পুর জোনাল অফিসের মাধ্যমে দেয়া হয় ৪৯টি। এর মধ্যে এলএলপি ৪৭, অগভীর ২টি। রামগঞ্জ জোনাল অফিসের আওতায় দেয়া হয় ১১৭টি। এর মধ্যে এলএলপি ২৯, অগভীর ৮৭ গভীর ১টি। সেচ মালিকদের অভিযোগ, বিদ্যুতের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বার বার ধরনা দিয়েও তারা মিটার পাচ্ছে না। সংযোগ পতে পেতে বোরো আবাদের সময় পার হয়ে যেতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন তারা। এ ছাড়া আবাদকৃত ফসলি জমিতে ঠিকমতো পানি দিতে না পারলে ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হতে পারে। এদিকে যে সব সেচ প্রকল্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে সেসব প্রকল্পের মালিকরাও স্বস্তিতে নেই। তাদের অভিযোগ, ঘনঘন লোডশেডিং এবং বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে কৃষকের চাহিদা মতো পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না ফলে তাদের নানা বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এনিয়ে সেচ মালিক ও কৃষকদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। লোডশেডিং প্রসঙ্গে এজিএম মৃণাল কান্তি চৌধুরী জানান, জেলায় ২৮ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকলেও তারা প্রতিদিনই গড়ে বিদ্যুৎ পাচ্ছেন ৬ থেকে ৭ মেগাওয়াট। যে কারণে ঘনঘন লোডশেডিং দেয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। লো ভোল্টেজ প্রসঙ্গে তিনি জানান চাহিদা ৩৩ কেভি হলেও তারা পাচ্ছেন ২৪ কেভি। এ ছাড়া চৌমুহনী থেকে জেলার অবস্থানগত দূরত্ব এবং বিদ্যুতের লাইনগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়া লো- ভোল্টেজের কারণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে আমাদের গলাচিপা প্রতিনিধি জানান, গলাচিপার কৃষকদের মধ্যে পানির জন্য হাহাকার চলছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রবাহিত অনেক খাল এখন ভরাট হয়ে পড়েছে। কয়েকটি খালের মুখ নষ্ট হয়ে থাকায় সøুইসগেটের কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নেই। যেখানে পানি পাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানে সেচপাম্প মালিকরা কৃষকদের পানি দিচ্ছে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো একর প্রতি মূল্য ধার্য করে। আবার কোনো কোনো এলাকায় মজুদ পানির ব্যবহার নিয়ে চলছে পক্ষ-বিপক্ষে বাদ-প্রতিবাদ। এ রকম পরিস্থিতিতে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে গলাচিপার শত শত কৃষক। বোরো চাষাবাদের শুরু গত মাসে সূচনা হলেও উপজেলায় এখনো ৪ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। জানা গেছে, যারা সেচপাম্প বসিয়ে জমিতে পানি দেয় তারা যার যার মতো করে কৃষকদের কাছ থেকে একবার পানির মূল্য ধার্য করে। কৃষকদের স্বার্থ দেখার কেউ না থাকায় মনগড়া পানির মূল্য দিতে হয় সেচপাম্প মালিকদের। চালিতাবুনিয়ার কৃষক খোকন হাওলাদার জানিয়েছেন, তার জমিতে সেচ দেন পাম্প মালিক আমির হোসেন। প্রতি একর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে তাকে দিতে হবে ১৭০০ টাকা। পাশের মাওলানারচরে সেব দেন আলতাফ মিয়া। তিনি একরপ্রতি পানির মূল্য ধার্য করেছেন ২ হাজার টাকা। সেচপাম্প মালিকদের দাবি কামলার দৈনিক মজুরি, খাওয়া ও থাকা দিয়ে আড়াইশ টাকা দিতে হয়। রয়েছে তেল, ডিজেল ও নানা রকম খরচ। এ হিসেবে তারা পানির মূল নির্ধারণ করেছেন। রাক্তাবালী ইউনিয়নের আললিবাড়িয়া এলাকায় সেচ দেন পাম্প মালিক ইব্রাহিম ফকির। তিনি নিচ্ছেন একর প্রতি দেড় হাজার টাকা। এখানে দেখা গেছে, সময়মতো পানি পেয়ে কৃষকরা জমিতে চাষাবাদ নেমেছে। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, চিকনিকান্দি, বকুলবাড়িয়া, গজালিয়া, আমখোলা এলাকার অনেক জমি এখানো গরু-ছাগলের দখলে। মুক্ত বিরাণভূমি। এখানে চাষাবাদ হবে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি চাষাবাদের আওতায় এসেছে বলে তাদের দাবি। সেচপাম্প মালিকদের পানির মূল্য নির্ধারণ ও ভরাট খালের পানির প্রবাহ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওসমান খান বরেন, ভরাট খাল নিয়ে বারবার কথা হয় বিভিন্ন সভায়। এর সমাধান দরকার। পানির মূল্য নির্ধারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বসে কৃষকদের স্বার্থে ফয়সালা করতে পারে। এ ব্যাপারে তারা সহায়তা দেবেন।

Saturday, February 14, 2009

কনসার্ভেশন এ্যাগ্রিকালচার

১৫.০২.০৯
ইত্তেফাক ।। মাটি ও মানুষের কৃষি

সারা বিশ্বেই টেকসই কৃষি ব্যবস্থায় দ্রুত উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ এসেছে কৃষকদের মাঝে। এর কারণ দুটিÑ এক, ‘জনসংখ্যার চাপ’, এবং দুই, ‘জলবায়ু পরিবর্তন’। এই মুহূর্তে টেকসই কৃষি ব্যবস্থায় অতিরিক্ত শস্য উৎপাদন ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ আমাদের সামনে উন্মুক্ত নেই যার মাধ্যমে নিরসন হতে পারে দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা। ‘কনসার্ভেশন এগ্রিকালচার’ বা ‘সংরক্ষণ কৃষি’ এমনই একটি কৃষি ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত যার মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্যের সুপরিচর্যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন সম্ভব একই জমি থেকে। প্রায় ২৫ বছর আগে প্রথম এই পদ্ধতির শুরু। আর বর্তমানে, পুরো পৃথিবীতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে এই পদ্ধতিতে চলছে চাষাবাদ। আমরা জানি, প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতির কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটছে। যার ফলে, কৃষি উৎপাদনশীলতা কমেছে দারুণভাবে। যেখানে এই মুহূর্তে সব ধরনের শস্য উৎপাদন দরকার দ্বিগুণহারে, সেখানে উৎপাদন কমে আসাটা একটি ভয়াবহ সংবাদ নিশ্চয়ই। আর এই দ্বিগুণ উৎপাদন প্রয়োজন আগামী ২০৫০ সালের ভেতরেই। এদিকে, শস্যের নিবিড় চাষাবাদ পদ্ধতির নামে বিশ্ব জুড়ে যা হয়েছে তা হলÑ জমিতে অধিক কর্ষণ, অতিরিক্ত সার প্রয়োগ, অতিরিক্ত সেচ প্রয়োগ এবং অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার। ফলাফল যা দাঁড়িয়েছে তা হলÑ মাটি, পানি, জমি এবং জীববৈচিত্র ক্ষতিগ্র¯- হচ্ছে। এসবের কারণেই ফলন কমে আসছে প্রতিদিন। সা¤প্রতিক তথ্যের আলোকে দেখা যায়, বর্তমান সময় থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষি উৎপাদন কমে আসবে ১.৫% যা ২০৩০ থেকে ২০৫০ সালের ভেতর যোগ হবে আরও ০.৯%। এই সংখ্যাটি অবশ্য ১৯৬১ সালে ছিল ২.৩%। উন্নয়নশীল বিশ্বে গমের উৎপাদন ১৯৮০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যš- কমেছে ৫% থেকে ২%। একই সময়ে ধান উৎপাদন কমেছে ৩.২% থেকে ১.২% এবং ভুট্টা উৎপাদন কমেছে ৩.১% থেকে ১%। বিভিন্ন দেশের সরকার এবং দাতা সংস্থার সহযোগিতায় কনসার্ভেশন এ্যাগ্রিকালচার এগিয়ে যেতে পারে আরও বহুদূর। এই নতুন পদ্ধতি সবার মাঝে পরিচিত করিয়ে দেবার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, ব্যবহারিক গবেষণা এবং শক্তিশালী কৃষক সংগঠনের দৃঢ় সহযোগিতারও রয়েছে প্রয়োজন। এছাড়া এই নতুন পদ্ধতি গ্রহণ অসুবিধায় ফেলতে পারে কৃষককে। কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যেও উন্নয়নে নীতি-নির্ধারকগণ এ বিষয়ে সারা বিশ্বব্যাপী জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনÑ এমনটি আশা করছি আমরা। Ñতৌফিক আহমেদ

কৃষক ও কৃষির দিন বদল চাই

১৫.০২.০৯
ইত্তেফাক ।। আলী ইদ্রিস

এদেশের ৮০% মানুষ যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সবার জন্য খাদ্য উৎপাদন করে তাদের দারিদ্র্য দূর করতে না পারলে দেশের দারিদ্র্য দূর হবে না। এদেশের কৃষকের জীবনে প্রবৃদ্ধি অর্থাৎ সঞ্চয় ও উন্নতি কখনও দেখা যায় না। সারা বছর মাঠে খেটে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে ওরা ফসল ফলালেও ওদের নূন আনতে পান্তা ফুরোয় অথবা দাদন ব্যবসায়ীরা ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ে। এর সুস্পষ্ট কতকগুলো কারণ রয়ে গেছে- (ক) ফরিয়া. দালাল মজুতদারদের দৌরাত্মে ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় না (খ) ওরা সময় মতো ও ন্যায্যমূল্যে বীজ, সার, সেচ ওষুধ ও কীটনাশক পায় না (গ) ওরা সময় মতো কৃষি দপ্তরের মাঠ কর্মীদের দ্বারা অথবা রেডিও, টেলিভিশনের মাধ্যমে কৃষি পরামর্শ পায় না (ঘ) বন্যা খরায় ফসল নষ্ট হলে ওদেরকে সময় মতো ঋণ বা বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ দেয়া হয় না (ঙ) উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে ওরা শহরে বা ক্রয়কেন্দ্রে ফসল পরিবহন করতে না পেরে অথবা দাদন ব্যবসায়ীর ঋণ পরিশোধ করার জন্য মাঠেই ফরিয়াদের নিকট ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হয়। ফলে একদিকে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়ে, অন্যদিকে সে ন্যায্য বাজারমূল্য না পেয়ে লোকসানের মুখোমুখী হয়। এজন্য দারিদ্র্য তার নিত্যসঙ্গী। সঞ্চয় বা উন্নতি তার স্বাপ্নাতীত ব্যাপার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে হবে। শিল্পে উন্নতি ও প্রবৃদ্ধি আনতে হলে অতিরিক্ত পূঁজি বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়, তথাপি শিল্পে আশানুরূপ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় না, কিন্তু সামান্য ভর্তুকি বাড়িয়ে, উন্নতমানের উপকরণ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো যায়। (ক) উন্নতমানের ও হাইব্রিড বীজ সরবরাহ করা বিএডিসি ও কৃষি বিভাগের দায়িত্ব, কিন্তু দু’টি প্রতিষ্ঠানই এ কাজে ব্যর্থ হয়েছে, এদেরকে আরও কার্যকরী করে তুলতে হবে। বেসরকারী সংস্থাগুলো যারা বীজ সরবরাহ করে তাদেরকে সরকারের কৃষি বিভাগের ছাড়পত্র নিতে হবে যাতে তারা কৃষককে খারাপ বীজ দিয়ে ঠকাতে না পারে। দ্বিতীয় উপকরণ সার। এই সার নিয়ে কেলেঙ্কারি হয় না এমন কোন বছর নেই। ডিলারদের দাম বেঁধে দিলেও তারা উচ্চমূল্যে ইচ্ছামতো গ্রাহকের নিকট সার বিক্রয় করে অথবা সার লুকিয়ে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরী করে। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে ডিলারের সংখ্যা দ্বিগুণ, তিনগুণ করতে হবে। প্রাকৃতিক জৈব সারের উপকারিতা সম্পর্কে কৃষকদেরকে ওয়াকেফহাল করে ঐ সারের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে হবে, জৈব সার উৎপাদনে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ডিজেলের দাম কমানোর পরও সেচে প্রকৃত কৃষক ফায়দা পায় না, যারা পানি বিক্রি করে তারাই ফায়দা লুটে। এজন্য একর প্রতি সেচের দাম নির্ধারণ করে দিতে হবে এবং তা যাতে পালিত হয় স্থানীয় প্রশাসনকে নজরদারী করতে হবে। ওষুধ ও কীটনাশকের সরবরাহ করা উচিত বিএডিসি ও কৃষি বিভাগের, প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্বও তাদের। কিন্তু দু’টি সংস্থাই এ ব্যাপারে ব্যর্থ। বাধ্য হয়ে কৃষককে সেবরকারী কীটনাশক বিক্রেতার নিকট ধরণা দিতে হয় যারা ভেজাল ওষুধ ও কীটনাশক সরবরাহ করে এবং কৃষককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। (খ) কৃষক কখনই তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। মাঠে যে পণ্যের দাম ৫ টাকা ঢাকা শহরে এসে সেটা বেড়ে হয় ২০ টাকা। মাঝখানে ফরিয়া, দালাল পাইকার মুনাফা লুটে। এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে সরকারকে প্রতিটি উপজেলায় টিসিবি বা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে ক্রয়কেন্দ্র খুলতে হবে যেখানে থেকে শহরের ক্রয়কেন্দ্রে পণ্য আসবে। অন্যথায় সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকরাই যাতে একটি ক্রয়কেন্দ্র খুলতে পারে তার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এটা করলে সারাদেশে পণ্যের খুচরা মূল্যও কমবে। সমবায় মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। সমবায়ের মাধ্যমে বীজ, সার সংগ্রহ এবং সেচ কাজও পরিচালিত হতে পারে। (গ) একই জলবায়ু আবহাওয়া বিশিষ্ট পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল থেকে আমরা চাল, মাছ, পিঁয়াজ, রসুন, ডাল, মসলা সবজি ফলমূল আমদানি করছি, অথচ একই আবহাওয়ায় আমাদের দেশেএ সব উৎপাদন করা সম্ভব। অথচ ভাল জাতের বিভিন্ন রকম বীজ, বারমাসী ফসল উৎপাদন পদ্ধতি, আধুনিক উপায় উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন করে কৃষককে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিলে আমাদের দেশেও প্রয়োজন মতো এবং রপ্তানি করার মতো চাল, ডাল, সবজি, ফলমূল উৎপাদন করা যেতে পারে। এ দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের । তাদের আরও দায়িত্ব কৃষি রিসার্চ করে উন্নত মানের ও পরিমাণে অধিক উৎপাদনশীল ফসল উদ্ভাবনও বাস্তবায়ন। আমাদের কৃষি মন্ত্রণালয়কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় হিসাবে গণ্য করা উচিত। সার, বীজ, ওষুধ, সেচের সরবরাহ নিশ্চিত করার পরও এ সমস্ত উপাদানের সাশ্রয়ী ব্যবহার, আধুনিকায়ন, রাসায়নিক উপাদানের বিকল্প জৈব উপাদান উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন। এ সমস্ত কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে দেশে কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটানোর দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের। কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়ে দেশের প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছানো যায়। (ঘ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন বন্যা, খরা, পোকার আক্রমণ, এ সব আমাদের দেশে লেগেই আছে। এ সব থেকে পুরোপুরি বাঁচা না গেলেও ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়। প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে বন্যাও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। খরার বিকল্প সেচ, পোকা-মাকড়ের আক্রমণে রাসায়নিক ও জৈব ওষুধ প্রয়োগ। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যদি নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে এবং বেসরকারী এনজিও বা বিদেশের সাহায্য নিয়ে এসব দুর্যোগের প্রতিকার করে তাহলে কৃষির ক্ষয়-ক্ষতি কমানো যায়। অতঃপর ক্ষয়-ক্ষতি হয়ে গেলেও কৃষককে সুদবিহীন ঋণ দিয়ে পরবর্তী ফসল ফলানোর জন্য উৎসাহিত করা যায়।

কৃষি এদেশের কেন, যে কোন দেশের মেরুদণ্ড। উন্নত দেশও কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। আমরা তাহলে কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব না কেন, আমার মতে স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে একদিন কৃষি পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারব। সেই দিন অতিসত্বর আসুক- এই কামনা করি।

[লেখক : কথাশিল্পী ও চার্টার্ড একাউনটেন্ট]

কৃষি ব্যবস্থাপনা অর্থনীতি

সমকাল ।। মোঃ শরিফুল ইসলাম

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উল্পুয়নে কৃষি একটি গুরুÍ^পহৃর্ণ খাত। কৃষি খাতের উল্পুয়ন ও বহুমুখীকরণের মাধ্যমেই বাংলাদেশের উল্পুয়নের স্ট^পু দেখতে হবে। বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ লোকই গ্রামে বসবাস করে এবং তারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কাজেই কৃষি খাতের উল্পুয়ন ব্যতীত ব্যাপক জনগোষ্ঠীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্ট’ান তথা অর্থনৈতিক সমৃ™িব্দ অর্জন কখনো সল্ফ¢ব নয়। তবে একথা সত্য, গুরুÍ^পহৃর্ণ এ অর্থনৈতিক খাতটি স্ট^াধীনতার প্রায় ৩৮ বছর পরও অবহেলিত এবং বিভিল্পু সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ক্ষুধা, পুঁজি ও কর্মসংস্ট’ান এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কৃষি, কৃষক ও কৃষি ব্যবস্ট’াপনার ওপর আশু নজর দেওয়া উচিত। গ্রাম ও কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে কৃষিক্ষেত্রে এবং কৃষকদের সমস্যাগুলো চিহিক্রত করে সেগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। কৃষিক্ষেত্রে প্রতি বছর গ্রামবাংলার কৃষকরা যেসব সমস্যার সল্ফ§ুখীন হন সেগুলো হলো : ১. কৃষকদের মহৃলধনজনিত সমস্যা। অধিকাংশ কৃষক অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র; ২. উৎপাদনের বিভিল্পু উপকরণের দু®ক্স্রাপ্যতা, অনিয়মিত, অধিক মহৃল্য এবং নিল্ফুমানের; ৩. কৃষিপণ্যের সুসংগঠিত বাজারের অভাব; ৪. সুসমল্পি^ত যোগাযোগ ব্যবস্ট’ার অভাব। গ্রাম, গ্রামের কৃষক, কৃষিবাজার ও শহরের মধ্যে অবকাঠামোগত ব্যাপক ব্যবধান বিদ্যমান।
কৃষকদের মহৃলধন বা অর্থজনিত সমস্যার কারণে দরিদ্র কৃষকরা সময়মতো কৃষি উপকরণ কিনতে পারে না। গ্রাম্য মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়, যার ঘানি টানতে হয় সারা বছর ধরে। প্রাšিøক কৃষকদের তালিকা তৈরি এবং তাদের প্রয়োজন চিহিক্রত করে সুনির্দি®দ্ব কমিটির মাধ্যমে সময়মতো কৃষিঋণ বিতরণের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। উচ্চফলনশীল উল্পুত জাতের বীজের অভাবে জমিতে অধিক ফলন সল্ফ¢ব হয় না। এক গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, মোট ধানি জমির প্রায় ৬৫ শতাংশে আধুনিক জাতের ধান চাষ করা হয় এবং আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ এর পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৮০ শতাংশ। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের উচিত গবেষণার মাধ্যমে উচ্চফলনশীল কৃষিবীজ উদ্ভাবন এবং সুষ্ঠু ব্যবস্ট’াপনার মাধ্যমে কৃষকদের হাতে তা সময়মতো পৌঁছানোর ব্যবস্ট’া করা।
কৃষিক্ষেত্রে সার একটি প্রধান উপকরণ। প্রতি বছর কৃষকদের সারের জন্য আন্দোলন করতে হয়। শুধু তা-ই নয়, জীবন পর্যšø দিতে হয়। মনে হয় কৃষকরা শুধু নিজের পরিবারের জন্য উৎপাদন করেন। সার কখন, কোথায়, কত পরিমাণে প্রয়োজন হয় তা আগে থেকেই চিহিক্রত করতে হবে। আমরা কি পারি না পহৃর্বপরিকল্কপ্পনা করে সারের উৎপাদন বাড়িয়ে বা আমদানি করে সময়মতো এলাকাভিত্তিক নির্দি®দ্ব কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাšিøক কৃষকদের হাতে তা পৌঁছে দিতে? প্রতি বছর পোকায় বহু ফসল ন®দ্ব করে। কৃষকরা সময়মতো পর্যাপ্টø পরিমাণে এবং সঠিক মানের কীটনাশক পান না। অনেক সময় খারাপ মানের ওষুধ হওয়ায় জমিতে তা ব্যবহার করেও সুফল পাওয়া যায় না।
সুসমল্পি^ত যোগাযোগ ব্যবস্ট’ার অভাব। গ্রাম, গ্রামের কৃষক, কৃষিবাজার ও শহরের মধ্যে অবকাঠামোগত ব্যাপক ব্যবধান বিদ্যমান। যোগাযোগ ব্যবস্ট’া খারাপ থাকায় গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য দহৃরবর্তী কোনো বাজার বা স্ট’ানে তা বিত্রিক্র করতে পারে না। ফলে মৌসুমি ফসল হয়তো পচে যায় বা সস্টøায় সেগুলো বিত্রিক্র করে দিতে হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রামের সঙ্গে উপজেলার এবং উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে রাস্টøাঘাট ও পরিবহন ব্যবস্ট’ার উল্পুয়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশের সর্বত্রই একটি প্রধান সমস্যা হলো বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের অভাবে কৃষকদের সেচ কাজে যেমন সমস্যার সৃ®িদ্ব হয়, তেমনি পর্যাপ্টø বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণে বিভিল্পু গুদামে প্রতি বছর প্রচুর পণ্য পচে ন®দ্ব হয়ে যায়। বিশেষ করে গোল আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি মৌসুমি কাঁচামাল অধিক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্টø হয়ে থাকে। স্ট’ানীয় বিভিল্পু গুদামে পর্যাপ্টø বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। কৃষিপণ্যের বেশিরভাগই পচনশীল। তাছাড়া এগুলো মৌসুমি পণ্য। বছরের একটি নির্দি®দ্ব মৌসুমে উৎপাদন হয় এবং ব্যবহার হয় সারা বছর ধরে। এ সময় পচনশীল পণ্যকে ধরে রাখার জন্য স্ট’ানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্টø পরিমাণে সংরক্ষণাগার প্রয়োজন। এর অভাবে প্রতি বছর ন®দ্ব হয় গোল আলু, পেঁয়াজ, টমেটো, আম, আনারস, ধান ইত্যাদি অর্থকরী ফসল। এলাকাভিত্তিক চাহিদা নির্ধারণ করে পর্যাপ্টø পরিমাণে সংরক্ষণাগার তৈরি হলে বছরব্যাপী এসব পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। গ্রামবাংলার কৃষকরা সাধারণ অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত। কৃষি ব্যবস্ট’াপনা ও চাষাবাদ স¤ক্সর্কে তাদের কোনো তত্ত্বীয় শিক্ষা বা জ্ঞান নেই। ফলে অধিক উৎপাদনের জন্য সুনির্দি®দ্ব কাজটি তারা করতে পারে না। উপজেলাভিত্তিক পর্যাপ্টø কৃষিবিদ নিয়োগ দিয়ে প্রাšিøক কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্ট’া করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। কৃষিকে শুধু চাষিদের পেশাগত কাজ হিসেবে না দেখে আমাদের দৃ®িদ্বভঙ্গি বদলানো প্রয়োজন। এ খাতটিকে একটি লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে গুরুÍ^ দেওয়া প্রয়োজন। কৃষি একমাত্র খাত যেখানে অপেক্ষাকৃত কম মহৃলধন ব্যয় করে অধিক রিটার্ন পাওয়া সল্ফ¢ব।
প্রকৃতপক্ষে আমরা অনেক কিছুই ভাবি ও চিšøা করি কিন্তু খাদ্য সংকট সৃ®িদ্ব না হলে কৃষি বা কৃষকদের কথা আমরা ভুলে যাই। বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদ-কে মজবুত করার জন্য কৃষি ও কৃষি ব্যবস্ট’াপনাকে উল্পুয়ন করা প্রয়োজন। উপরে উল্কিèখিত বিষয়গুলোর যথাযথ পরিকল্কপ্পনা করে সুনির্দি®দ্বভাবে দায়িÍ^ বণ্টন ও জবাবদিহিতা সৃ®িদ্বর মাধ্যমে তা মনিটরিংয়ের ব্যবস্ট’া করা হলে বাংলাদেশের কৃষি, কৃষক ও জাতীয় অর্থনীতির অগ্রগতি হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
হ লেখক : সহকারী অধ্যাপক
ব্যবস্ট’াপনা বিভাগ, ঢাকা কমার্স কলেজ

অবশেষে কৃষিমন্ত্রীর নির্দেশে সার পাচ্ছেন সুনামগঞ্জের কৃষক

১৫.০২.০৯
সমকাল ।। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

‘কেউ কেউ চেয়ারম্যান সাবরে লইয়া আইয়া সার লইয়া যায়গি’ : সুনামগঞ্জে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সার পাচ্ছেন না কৃষক’ শিরোনামে শুত্রক্রবার সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর শনিবার পত্রিকার উ™ব্দৃতি দিয়ে কৃষিমšúী বেগম মতিয়া চৌধুরী ও কৃষি সচিব জেলা প্রশাসক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়ার সঙ্গে কথা বলেন এবং ফেঞ্চুগঞ্জ ও আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে ৭১০ মেট্রিক টন সার সুনামগঞ্জের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন।
জেলা প্রশাসক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া জানান, মšúী সকালে তাকে ফোন করে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের কথা উল্কেèখ করে সারের বিষয়ে খোঁজ নেন এবং ফেঞ্চুগঞ্জ ও আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে ৭১০ মেট্রিক টন সার পাঠানোর ব্যবস্ট’া করে দেন। পাশাপাশি কৃষিমšúী প্রতিদিন ৭০০ মেট্রিক টন করে সার আজ থেকে তিনদিন সুনামগঞ্জে পাঠানোর ব্যবস্ট’া করে দিয়েছেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।

পদ্মার ২৫টি শাখা নদীতে পানি নেই, বোরো চাষে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

১৫.০২.০৯
ডেসটিনি ।। সালেহ আকরাম

পাবনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল, সাতক্ষীরা ও ফরিদপুর অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রায় ২৫টি উপশাখা নদীর উৎসমুখ ‘পদ্মা’। পানির অভাবে বর্তমানে এসব শাখা-উপশাখা নদীগুলো শুকিয়ে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছে। জমিতে ঠিকমতো সেচ দিতে না পারায় বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতাধীন অধিকাংশ হস্তচালিত গভীর-অগভীর নলকূপ থেকে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না বলে জানা গেছে। জিকে (গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প) ক্যানালে পানিশূন্যতার কারণে এই বিপর্যয় হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এবারের বোরো মৌসুমে প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চত না হলে ইরি-বোরো আবাদ হুমকির মুখে পড়বে। এদিকে কৃষক জেগে ওঠা চরের জমিতে বাদাম, ভুট্টা ও আখের আবাদ শুরু করেছে। জেগে ওঠা চর দখল নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে পদ্মাপাড়ের মৎসজীবীদের জীবন এখন বিপর্যস্ত। পানিহীন পদ্মায় মাছ সংকটে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, সেচের মাধ্যমে এ অঞ্চলের ফসল উৎপাদনের স্বার্থে সরকার ১৯৫৪ সালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ‘গঙ্গা-কপোতাক্ষ’ সেচ প্রকল্প গ্রহণ করে। ১৯৬৯-এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়। এই প্রকল্পের ১২টি ছোট পাম্প ও ৩টি বড় পাম্প চালু রাখতে ন্যূনতম ১৫ ফুট পানির স্তর প্রয়োজন। মোট সাড়ে ৩ লাখ একর জমি এই সেচ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। বর্তমানে পদ্মায় পানিস্বল্পতার কারণে মাত্র ১ লাখ একরের বেশি জমিতে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। জিকে প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের ৮টি পাম্প বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। কৃষক বোরো মৌসুমের জমিতে সেচ দিতে
না পারায় চরম বিপাকে পড়েছে। জিকে প্রকল্পের ক্যানালে পানিশূন্যতার কারণে বোরো মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বোরো মৌসুমে ২ হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে আবাদ করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ভেড়ামারায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল ফলানোর প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে কৃষক। অন্যদিকে পাবনাসহ পদ্মার আশপাশের উপশাখা নদীর চরাঞ্চলেও পুরোদমে কৃষিকাজ চলছে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুম না আসতেই পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ এলাকার কৃষক বিপাকে পড়েছে। জিকে প্রকল্পের আওতাধীন ভেড়ামারার জুনিয়াদহ, বাহিরচর, চাঁদগ্রাম, মোকারিমপুর, বাহাদুরপুর, ধরমপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ হস্তচালিত গভীর-অগভীর নলকূপ থেকে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৩০ বছরের গঙ্গার পানি চুক্তির ১৩তম বর্ষে পদার্পণ করলেও গত ১২ বছর ওই চুক্তির শর্তানুসারে বাংলাদেশ ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সংশিষ্টরা বলছেন, প্রতি বছর বাংলাদেশ ভারত সরকারের কাছে লিখিতÑঅলিখিতভাবে পানির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে এলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। গত বছরও ভারত সবচেয়ে কম পানি দিয়েছে বাংলাদেশকে। একতরফাভাবে ভারত বাংলাদেশের কাছ থেকে পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার কারণে খরা মৌসুম শুরুর আগেই পাকশী পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৬ স্প্যানের ইতিমধ্যে ৮-১০টি স্প্যান পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে ধু-ধু বালুচর। সেই সঙ্গে ২৫টি উপশাখা নদীর পানি শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। ১৯৯৬-এ তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেব গৌড়ের মধ্যে হায়দরাবাদ হাউসে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাইড্রোলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী দৌলতুজ্জামান এ বিষয়ে দৈনিক ডেসটিনিকে জানান, পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে বর্তমানে ৮ মিটার পানির স্তর রয়েছে। ভারত বাংলাদেশকে প্রাপ্য পানি বণ্টন করছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, চলতি জানুয়ারি মাসের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট অনুযায়ী সাড়ে ৫১ হাজার কিউসেক পানি পাওয়া গেছে। কিন্তু তার দেয়া তথ্য ও সরেজমিন ঘুরে কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
আমাদের পাবনা প্রতিনিধি জানান, পানির অভাবে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের তলদেশে ১৬টি স্প্যানের মধ্যে বর্তমানে ৮-১০টি স্প্যান পানিশূন্য রয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে অবস্থা আরো ভয়াবহ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দিনাজপুরে সেচের পানির দাবিতে কৃষকদের সড়ক অবরোধ

১৪.০২.০৯
ডেসটিনি ।। দিনাজপুর অফিস

দিনাজপুরে সেচের পানির দাবিতে গতকাল শুক্রবার সকালে কৃষকরা দিনাজপুর-রংপুর সড়ক ৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের এস-৮ডি ও এস-৯ডি ক্যানেলের প্রায় ৫ হাজার একর ইরি আবাদি জমিতে পানি না পাওয়ায় ফসল নষ্ট হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার গোয়ালদিহী ইউনিয়নের ১ হাজার একর, চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর, আব্দুলপুর ও ইশবপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার একর এবং পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচ-ী ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ১ হাজার একর জমিতে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের ক্যানেলের মাধ্যমে বোরো মৌসুমে
সেচ সুবিধা দেয়া হয়। চলতি মৌসুমের শুরুতে ক্যানেলের পানি সরবরাহ করা হলেও গত ১২ দিন থেকে ক্যানেলে পানি নেই। ফলে বিস্তীর্ণ এলাকায় কৃষকদের আবাদি জমির ফসল বিবর্ণ হয়ে নষ্ট হতে চলেছে। এখনই সেচের পানি দেয়া না হলে ৫ হাজার একর জমির ফসল পাওয়া যাবে না। প্রতিবাদে এলাকার হাজার হাজার কৃষক দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের দেবীগঞ্জ ও বেকীপুল এলাকায় গতকাল সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করে রাখে। সমাবেশে ক্ষুব্ধ কৃষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আনিসুর রহমান, মখলেছুর রহমান, মতিনুর রহমান, আশফাকুর, আব্দুল গফুর, মাসুদ, লোকমান হোসেন প্রমুখ। এ সময় মহাসড়কের দুদিকে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পানির জন্য কৃষকদের এ বিক্ষোভের খবর জানতে পেরে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনারকলি মাহবুব, চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুস সামাদ, ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম ও জাবেদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসেন। কৃষকের দাবির ব্যাপারে একমত হয়ে নির্বাহী অফিসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা ব্যারেজের দুটি ক্যানেলে পানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন। এ প্রতিশ্রুতি পেয়ে কৃষকরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ তুলে নেন।

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে সমস্যার পাহাড়

১৪.০২.০৯
ডেসটিনি ।। চাঁদপুর সংবাদদাতা

চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলো বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ১০ বছর আগে ১৩টি ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও বাধ্য হয়ে এ অযোগ্য ভবনগুলোতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে এখানকার গবেষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। দুটি হ্যাচারি জরাজীর্ণ ও একটি হ্যাচারি সিডরের আঘাতে ল-ভ- অবস্থায় পড়ে আছে। অর্থাভাবে তা আজো মেরামত করা হয়নি। অথচ এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কৃত্রিম প্রজনন ও রেণু পোনা উৎপাদন কাজ করতে হচ্ছে।
১৯৬১-৬২ সালে নির্মিত চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিটউটে রয়েছে গবেষণাগার, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, একটি প্রসিদ্ধ লাইব্রেরি, মিলনায়তন এবং ১৫টি আবাসিক ভবন। এর মধ্যে বিগত বছরগুলোতে কোনো বড় ধরনের সংস্কার করা হয়নি। ফলে এ ভবনগুলোতে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল এবং প্রতিনিয়ত আস্তর খসে পড়ছে। যে কোনো মুহূর্তে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে জেনেও এখানে কর্মরত লোকজন তাদের ছেলেমেয়েসহ বাধ্য হয়ে বসবাস করছে। ১৯৬৪-৬৫ সালে নির্মিত হ্যাচারিটি সংস্কার না করায় এর বিভিন্ন স্থান ভেঙে পড়েছে। হ্যাচারির ওভারহেড ট্যাংক, ইনকিউবেশন ট্যাংক, স্পনিং ট্যাংক, ৬টি সিস্ট্রান ও নলকূপ দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। কয়েক দফা বন্যায় এই হ্যাচারির সঙ্গে সংযুক্ত ৪০টি পুকুরের পাড় ভেঙে এখন দু’তিনটি পুকুর এক হয়ে গেছে। এ ছাড়া লাইব্রেরিতে পানি পড়ে বহু মূল্যবান বই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার পর চল্লিশ একর সম্পত্তির ওপর গড়ে ওঠা এই গবেষণা কেন্দ্রটি একটি ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়। অথচ দেশে সর্বপ্রথম গড়ে ওঠা এই গবেষণা কেন্দ্রটি দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সাফল্যজনক অবদান রেখেছে। এর মধ্যে জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশ মাছ রক্ষাকল্পে বিভিন্ন সময়ে সরকারকে বিভিন্ন সাজেশন দেয়া, পুকুরে পাঙ্গাস মাছ চাষ ও কৃত্রিম প্রজনন, ধানক্ষেতে সমন্বিত মৎস্য চাষ, খাঁচায় মাছ চাষ, ফসলের ক্ষেতে পরিবেশ নষ্টকারী কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও ক্ষতিকর এ ধরনের কীটনাশক নিষিদ্ধ ঘোষণা ইত্যাদি বিষয়ে যথেষ্ট অবদান রেখে আসছে। চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিউিটের সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে ২০০৪ সালে ৫ কোটি টাকার একটি প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়; কিন্তু আজো সেখানে অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ হয়নি।

মহাদেবপুরে বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট

১৪.০২.০৯
ডেসটিনি ।। মহাদেবপুর (নওগাঁ) সংবাদদাতা

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট প্রকট আকার ধারণ করেছে। উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে কৃষক-শ্রমিকসহ ছাত্রছাত্রী এবং গৃহিণীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ থাকায় বোরো ধান চাষে ব্যবহৃত উপজেলার বিদ্যুৎচালিত গভীর ও অগভীর নলকূপের মটর, পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার এবং এর যন্ত্রাংশ পুড়ে যাওয়াসহ বিকল হওয়ার ঘটনা অহরহ ঘটছে। এ ছাড়াও উপজেলার বাসা-বাড়িতে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত অধিকাংশ ফ্রিজ, টেলিভিশনসহ অন্যান্য বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রাংশ লো-ভোল্টেজ ও ভোল্টেজ কমা-বাড়ার কারণে পুড়ে যাওয়াসহ অকেজো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে উপজেলার বোরো চাষিরা এবং আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের জন্য এলাকার কৃষকরা একেবারে প্রস্তুতি নিলেও শুধু বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে অনেক কৃষকই এখনো জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না। এবার সার, বীজ ও ডিজেল নিয়ে কৃষকদের মধ্যে খুব বেশি উৎকণ্ঠা না থাকলেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে তারা পড়েছে চরম বিপাকে।

দক্ষিণাঞ্চলে সেচ সুবিধা নিশ্চিত হয়নি।। ড্রামসিডার ব্যবহার করতে কৃষকরা আগ্রহী নয়

১৪.০২.০৯
ইত্তেফাক ।। লিটন বাশার, বরিশাল অফিস ।।

সেচ সুবিধা নিশ্চিত না হওয়া এবং ড্রাম সিডারের ব্যবহার না জানায় দক্ষিণাঞ্চলের ইরি-বোরো চাষে সাফল্য আসছে না। এখনো অধিকাংশ সেচযন্ত্র চালু করা হয়নি। ড্রাম সিডার তিন বছর যাবৎ বিতরণ করা হলেও এখন পর্যন্ত কৃষকরা তার নামই জানেন না।

দেশের সিংহভাগ ধান উৎপাদন হয় দক্ষিণাঞ্চলে। কিন্তু এখানে ফসলের গড় উৎপাদন প্রতি হেক্টরে মাত্র ৪ দশমিক ১ টন। উন্নত প্রযুক্তিতে ফসল উৎপাদন না করায় ইতিবাচক সাফল্য পাচ্ছেন না এ অঞ্চলের কৃষকরা। ফসল উৎপাদনে প্রযুক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যে গত তিন বছর পূর্বে ১১ জেলায় ড্রাম সিডার সরবরাহ শুরু হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে ১৫৬০টি ড্রাম সিডার বিতরণ করা হয়েছে। ২০০৬ সালে বিপিজেবিএএইচপি প্রকল্পের অধীনে বীজ বুননের লক্ষ্যে এ ড্রাম সিডার বিতরণ করা হয়। কিন্তু কৃষকরা ড্রাম সিডার ব্যবহারে আগ্রহী নয়। ব্যবহার কম থাকায় অধিকাংশ কৃষক ড্রাম সিডারের নাম পর্যন্ত জানেন না। যারা ড্রাম সিডার পেয়েছেন তারা জানান, এ অঞ্চলের চাষাবাদের জমিতে বীজ বুননের সময় পানি জমে থাকায় ড্রাম সিডার ব্যবহার সম্ভব হয় না। সমতল ভূমি ছাড়া ড্রাম সিডার ব্যবহার করা মুশকিল।

আউশ-আমন ও বোরো মৌসুমে ড্রাম সিডার ব্যবহার করা সম্ভব বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা। এই লক্ষ্য নিয়েই বরিশাল জেলায় ২০২টি, পিরোজপুরে ৫৭টি, ঝালকাঠীতে ৪১৬টি, পটুয়াখালীতে ১১৬টি, বরগুনায় ১১১টি, ভোলায় ৫৯টি, ফরিদপুরে ২শ’, গোপালগঞ্জে ৮৩, মাদারীপুরে ২০৪টি, রাজবাড়িতে ৭৫টি ও শরিয়তপুরে ৩৭টি ড্রাম সিডার সরবরাহ করা হয়। বিনামূল্যেই বীজ বুননের লক্ষ্যে কৃষকদের এসব ড্রাম সিডার দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ ড্রাম সিডার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে পড়ে রয়েছে। অনেক কৃষক ড্রাম সিডার নেয়ার পর তা আবার ফেরত দিয়েছেন। তাদেরকে আর কৃষি কর্মকর্তারা উদ্বুদ্ধ করেননি। ড্রাম সিডারের মাধ্যমে বীজ বুনলে ১০ থেকে ২০ ভাগ ফসল বেশি উৎপাদন করা সম্ভব। ফলন ফলতেও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় কম লাগবে। এ পদ্ধতিতে খুব সহজেই একজন চাষী ঘন্টায় এক বিঘা জমিতে বীজ বুনন করতে পারেন। কিন্তু এর বাস্তবায়ন নেই। এর সাথে যোগ হয়েছে সেচযন্ত্র চালু না হওয়ার বিষয়টি। গত এক মাস আগে এ অঞ্চলে ইরি-বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু পানি সরবরাহের জন্য এখন পর্যন্ত সর্বত্র সেচযন্ত্র চালু হয়নি।

বরিশাল ও ঝালকাঠী জেলার অধিকাংশ এলাকায় ইরি-বোরো চাষ শুরু না হওয়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকায় পড়েছেন কৃষকরা। এ বিভাগের পিরোজপুরসহ তিনটি জেলায় মোট ৭টি উপজেলার ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছিল। ঐ প্রকল্পের অধীন ৭১ হেক্টর জমি সেচ ব্যবস্থার আওতায় আনার কথা ছিল। কিন্তু ধীর গতিতে চলছে ঐ প্রকল্পের কাজ। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো ৭৮টি পাম্প স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। প্রতিটি পাম্পে প্রতি সেকেন্ডে ২৫ কিউসেক পানি উত্তোলন করা সম্ভব। এ পর্যন্ত ৩০টি পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে পানি সরবরাহ হচ্ছে ২১ থেকে ২২টি পাম্পের মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত ২ হাজার কৃষক ইরি-বোরো চাষাবাদের আওতায় আসলেও অধিকাংশ কৃষকের জমি অনাবাদি রয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, খুব শীঘ্রই বাকি সেচ পাম্পগুলো চালু করা হবে। তা না হলে ইরি-বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

সুনামগঞ্জে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সার পাচ্ছেন না কৃষকরা

১৩.০২.০৯
ডেসটিনি ডেস্ক

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আপ্তাবনগর ইউনিয়নের কৃষক সামছুল বারী (৪৫) শহরের পশ্চিমবাজার এলাকায় সারের জন্য এসেছেন সকাল ৯টায়। দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনি সার পাননি। শুধু সামছুল বারী নন, ভোর থেকে সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ডিলারের দোকান থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে অনেক কৃষককে। বিডিনিউজ।
ডিলার বলছেন, চাহিদার তুলনায় কম সার পাওয়ায় সবাইকে সার দেয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, দু-একদিনের মধ্যেই সমস্যা কেটে যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের সার ডিলার সুধাংশু অ্যান্ড সন্সের সামনে গিয়ে দেখা যায় বাইরে সারের জন্য কয়েকশ কৃষক দুটি লম্বা সারিতে অপেক্ষা করছেন।
সুধাংশু অ্যান্ড সন্স সদর উপজেলার আপ্তাবনগর ইউনিয়নের ডিলার হলেও সার বিক্রি হচ্ছে শহরে। দোকানের ভেতর ঢুকে দেখা গেল আরো কয়েকজন কৃষককে। তাদের সার দিচ্ছেন ডিলার। পাশেই বসা কৃষি কর্মকর্তা। বাইরে পাহারা দিচ্ছে কয়েকজন পুলিশ।
বাইরে দাঁড়ানো লোকজনকে না দিয়ে ভেতরে ঢোকা লোকদের সার দেয়া হচ্ছে কেন জানতে চাইলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভানু চন্দ্র নাথ বলেন,
আমাদের বাধা সত্ত্বেও আপ্তাবনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসে এই লোকগুলোকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এরা তার লোক, তাই সার দিতে হবে। একই কথা বললেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মনির হোসেন।
কৃষকরা অভিযোগ করেন, বাইরে লাইনে দাঁড়ানো একজন কৃষককেও সার দেয়া হয়নি। যারা কৃষক নয়, তারাই সার নিয়ে যাচ্ছে। ৬০০ টাকা দরের এক বস্তা সার বাইরে ৮০০ টাকায় কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এদের সঙ্গে ডিলার ও কৃষি কর্মকর্তার যোগাযোগ রয়েছে। যে কারণে প্রকৃত কৃষকরা সার পাচ্ছেন না। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সার ডিলার সুধাংশু পাল দাবি করেন, সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩৬ বস্তা সার দিয়েছি ৩৬ জন কৃষককে। বুধবার ২০০ বস্তা সার পেয়েছি। অথচ বাইরে ৬০০-৭০০ কৃষক অপেক্ষা করছেন। সার কম পাওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেই তিনি শহরে ইউনিয়নের সার বিক্রি করছেন।
তার দোকানের দরজায় লাইনের একেবারে প্রথমে দাঁড়ানো কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, ভোরবেলা তিনিই প্রথম এসে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত দোকানে ঢুকতে পারেননি।
দেলোয়ারসহ সারিতে দাঁড়ানো কৃষকরা অভিযোগ করেন, এতক্ষণ লাইন ছাড়াই সার দেয়া হয়েছে। কথা বললেই পুলিশ ধমক দেয়। আপ্তাবনগর ইউনিয়নের হাছনবাহার গ্রামের কৃষক আমজাদ আলী, রফিক আলী ও সেলিম মিয়া সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন সারের জন্য। কিন্তু না পেয়ে এক বস্তা সার বাইরে থেকে ৮০০ টাকায় কেনার জন্য টাকা জোগাড় করছিলেন। তারা জানান, বাইরে ২০০ টাকা বেশি দিলে এক বস্তা সার দেবে বলে একজন আশ্বাস দিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা ভানু চন্দ্র নাথ বাইরে বেশি দামে সার বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা প্রকৃত কৃষককে সার দেয়ার চেষ্টা করছি।
সুনামগঞ্জ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, কেবল ফেব্রুয়ারি মাসে সুনামগঞ্জে সারের চাহিদা ৫ হাজার ৩৯৭ মেট্রিক টন। অথচ সার পাওয়া গেছে মাত্র ৫৬৩ মেট্রিক টন। ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে সার পাচ্ছেন না ডিলাররা। এ কারণে সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া বলেন, কিছুটা সংকট আছে। তবে টাকা জমা দেয়া হয়েছে। সার আসছে। দু-একদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

সেচের জন্য ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার

১৩.০২.০৯

ডেসটিনি রিপোর্ট
সেচপাম্পে ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও প্রতিমন্ত্রী। এজন্য প্রয়োজন হলে শহরাঞ্চলে লোডশেডিং করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্যাসের অভাবে যাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত না হয় সেজন্য প্রতিদিন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেচপাম্পগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে সারাদেশে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে এমনই আশঙ্কায় গত বুধবার উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এ নির্দেশ দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, সেচপাম্পে ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতেই আমরা এ নির্দেশনা দিয়েছি। এ ছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হবে এবং বিদ্যুৎ পরিস্থিতি জোর মনিটরিং করা হবে। তিনি বলেন, বিদ্যুতে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা বলেছি কাফকোতে গ্যাস সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে আনতে। কেননা এ মুহূর্তে সেচের প্রয়োজনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা জরুরি। এ ছাড়া বিদ্যুতের জন্য প্রতিদিন ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছি।
সূত্রমতে, আগামী সেচ মৌসুমে সেচপাম্পে ব্যবহারের জন্য চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা না গেলে আশানুরূপ ফসল উৎপাদিত হবে না। সূত্রমতে, সেচ মৌসুমে সারাদেশে প্রতিদিন বিদ্যুৎ ঘাটতি দাঁড়াবে ২ হাজার মেগাওয়াট। এ সময় সেচে ব্যবহৃত পাম্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে।
তবে সরকার এ বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে ও সেচপাম্পগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে জানান বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে তারা ৩০ হাজার সেচপাম্পে সংযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া সেচ এলাকায় বিভিন্ন কার্যক্রম মনিটরিং করতে কমিটি করা হয়েছে। সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্পগুলোয় প্রয়োজনীয় ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সেচপাম্পগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো এবং সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনগুলোয় প্রয়োজনীয় মেরামত ও সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বোরো চাষ সফল করতে সেচপাম্পগুলোয় মানসম্পন্ন ও পূর্ণ ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, এ বছর দেশে ২ লাখ ২৩ হাজার বিভিন্ন ধরনের সেচপাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হবে। যা গত
বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি। নতুন সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি সেচ প্রকল্পগুলো এবং অধিকতর এলাকায় সেচ করা হবে এমন বেসরকারি সংযোগকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। অন্যদিকে শীতের কারণে বিদ্যুতের চাহিদাও কম হবে। সূত্রমতে, চলতি সেচ মৌসুমের শুরুর দিকে সান্ধ্য পিক সময়ে সেচসহ মোট বিদ্যুৎ চাহিদা ৪ হাজার ৭১ মেগাওয়াটÑ যা মার্চে গিয়ে বেড়ে দাঁড়াবে ৪ হাজার ৫৯২ মেগাওয়াট। তবে এ সময় ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৯৮০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে সক্ষম হবে না পিডিবি। যার ফলে আগামী সেচ মৌসুমে সান্ধ্য পিক সময়ে প্রতিদিন বিদ্যুৎ ঘাটতি দাঁড়াবে ৬৫০ মেগাওয়াট থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট।
জানা গেছে, সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ঢাকায় ১ হাজার ৯০২ মেগাওয়াট, ময়মনসিংহে ২৩২ মেগাওয়াট, সিলেটে চাহিদা ২২৫, কুমিল্লায় বিদ্যুৎ চাহিদা ৩৯৬ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামে ৫৯৫ মেগাওয়াট, খুলনায় ৫০১ মেগাওয়াট, বরিশালে ১০২ মেগাওয়াট, রাজশাহীতে ৪১৭ মেগাওয়াট এবং রংপুরে ২২০ মেগাওয়াট।
চলতি সেচ মৌসুমে সেচপাম্পের বিদ্যুৎ চাহিদা মোট ১ হাজার ৭৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ঢাকায় বিদ্যুৎ চাহিদা ৭৩ মেগাওয়াট, ময়মনসিংহে ২০৯ মেগাওয়াট, সিলেটে ১৫ মেগাওয়াট, কুমিল্লায় ১০২ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামে ২৪ মেগাওয়াট, খুলনায় ১২৮ মেগাওয়াট, বরিশালে ৩ মেগাওয়াট, রাজশাহীতে ৩০৯ মেগাওয়াট এবং রংপুরে ২১৫ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সেচপাম্পের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হচ্ছে রাজশাহী বিভাগে। এখানে সেচপাম্পের সংখ্যা হচ্ছে দেশের মোট পাম্পের প্রায় অর্ধেক। এর পরই রয়েছে ঢাকা। তবে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সিলেট, চট্টগ্রাম ও বরিশাল অঞ্চলে সেচপাম্পের ঘনত্ব স্বল্প।
সূত্র মতে, গত কয়েক বছরে দেশে গ্যাসের নতুন কোনো মজুত আবিষ্কৃত হয়নি। ফলে মজুত কমে যাচ্ছে। যে কারণে বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনসহ সব ক্ষেত্রে প্রতি বছর গ্যাসের চাহিদা বাড়লেও গ্যাসের মজুত বাড়ছে না। গ্যাসের উৎপাদন না বাড়ায় ইতিমধ্যেই পেট্রোবাংলা বেশ কয়েকটি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহে অপারগতা জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মোট স্থাপিত ক্ষমতা ৫ হাজার ১৮৭ মেগাওয়াট। কিন্তু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বেশ কয়েকটি অনেক পুরনো। মোট ৯৭টি বিদ্যুৎ ইউনিটের মধ্যে ২৯টি ইউনিটের বয়স ২০ বছরের ঊর্ধ্বে, অর্থাৎ এগুলোর স্বীকৃত আয়ুষ্কাল ইতিমধ্যে পেরিযে গেছে। আর ১৬টি ইউনিটের বয়স ১৫ বছরের ওপরে। বয়সের ভারে এগুলোর ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, ফলে বর্তমানে সব ইউনিট মিলে সম্মিলিত ডিরেকটেড ক্ষমতা হচ্ছে ৪ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াট।

মাগুরার বোরো চাষিরা দেশের বৃহত্তর জিকে সেচ প্রকল্পের কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না

১৩.০২.০৯
ডেসটিনি ।। মুসাফির নজরুল, মাগুরা

মাগুরার বোরো চাষিরা দেশের বৃহত্তর জিকে সেচ প্রকল্পের কোনো সুবিধাই পাচ্ছেন না। ১৯৫৪ সালে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পটি মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ১৩টি উপজেলার আবাদি জমির আমন ও বোরো মৌসুমে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুই শতাধিক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হলেও প্রায় ৫৪ বছরের মাথায় কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রার ধারের কাছেও পৌঁছাতে পারেনি। উপরন্তু অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে এ প্রকল্পের আওতাধীন কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ। ফলে প্রতি বছর এ প্রকল্পে লোকসান যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এদিকে গত কয়েক বছর ধরে ভরা মৌসুমেও জিকে প্রকল্পের মাগুরা অংশের খালগুলোতে বিন্দু পরিমাণও পানি সরবরাহের বালাই নেই। ফলে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প এ জেলার কৃষকদের কোনো উপকারেই আসছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৫৪ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ২০০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প নির্মিত হয় । কাজ শেষ হয় ১৯৯৪ সালে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলের সেচ সুবিধাসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য পানি নিষ্কাশন এবং কৃষকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো। এ জন্য শুরুতেই চাষিদের আধুনিক চাষাবাদের সঙ্গে পরিচিত ও প্রশিক্ষণদানের জন্য ৪৯টি পাকা চাষি ক্লাবভবন নির্মাণ ও ৭টি উপজেলায় কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি গঠন করা হয়; যার অধীনে প্রাথমিক সমিতির সংখ্যা ছিল ৭৪৯টি। আর এসব কাজ সুচারুরূপে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ভাগ করে ১৯৫৫-৫৬ অর্থবছরে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ১৯৭০ সালে সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম পর্যায়ের এবং ১৯৮৩ সালে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ।
১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে প্রকল্পের পুনর্বাসন কাজ শুরু হয় এবং ২১২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৯৯৪ সালে শেষ হয়। এ সময় ভেড়ামারায় প্রকল্পের পা¤পহাউস নির্মাণসহ ১৯৩ কিলোমিটার সেচ খাল, ৪৬৭ কিলোমিটার শাখা সেচ খাল, ৯৯৫ কিলোমিটার উপ-শাখা সেচ খাল খনন ও ২ হাজার ১৮৪টি পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো, ২২৮ কিলোমিটার সড়ক, ১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প পরিচালনার জন্য বাসা সেকশন, সাবডিভিশন ও ডিভিশন অফিস নির্মাণ করা হয়। এ ছাড়া মাগুরায় নির্মাণ করা হয় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রেগুলেটর ও একটি প্রধান পাম্প। কিন্তু এত কিছুর পরও ১৯৬৩ সালের আউশ-আমন মৌসুমে এই প্রকল্প থেকে সেচ সুবিধা পাওয়া যায় মাত্র ১৭ হাজার ২৬৭ একর জমিতে, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৫ শতাংশ মাত্র। প্রথম খরিপ মৌসুমে প্রকল্পটি ১ লাখ ২০ হাজার একর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে সক্ষম হয়, যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৩৪ শতাংশ। দ্বিতীয় খরিপ মৌসুমে ২ লাখ ২৫ হাজার একর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হয়, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৪ শতাংশ। পরে কোনো সময়েই আর এ প্রকল্পটি এই লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছেও যেতে পারেনি।
এদিকে জেলার নাকোল, সাচিলাপুর, শ্রীপুর, গোয়ালদা, আমলসার, লাঙ্গলবাঁধ, গাংনালিয়া, আমতৈল, বড়ইচারা, প্রভৃতি স্থানের ডিভিশন, সাবডিভিশন ও সেকশন অফিস ও বাসার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। স্থাপনাগুলোর জানালা-দরজাসহ অনেক কিছুই চুরি হয়ে গেছে কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে। মাঠপর্যায়ের প্রকল্প অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্মরত কর্মচারীরা দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় অনেকে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন অন্য কাজে। এ প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করলে মাগুরা তথা পার্শ্ববর্তী জেলার কৃষকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রভূত উন্নতি সম্ভব হবে। খালের দুপাশের জমি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে আংশিক উদ্ধার করলেও তা সেভাবেই পড়ে আছে। সেদিকে কর্তৃপক্ষের কোনো ভ্রƒক্ষেপ নেই।

ফুলকপি চাষে মহম্মদপুরের ২০ কৃষকের দারিদ্র্য জয়

১৩.০২.০৯
ডেসটিনি ।। মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি

মাগুরার মহম্মদপুরের কৃষকেরা ফুলকপি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। উপজেলার ২০ কৃষক ফুলকপি চাষে সাফল্য পেয়েছেন। এ চাষে তারা অভাবকে জয় করেছেন। সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে অভাবকে জয় করা এক কৃষকের নাম সিদ্দিকুর রহমান। তার বাড়ি উপজেলার ধুলজুড়ি গ্রামে। সিদ্দিকের সংসারে অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারতেন না। পরিবারের অন্য সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী ভরণপোষণ জোগাতেও অক্ষম ছিলেন তিনি। এখন আর সিদ্দিকের সংসারে সেসব হতাশার চিত্র নেই। ফুলকপি চাষ এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। এক আত্মীয়ের পরামর্শে গরু বিক্রি করে বাড়ির পাশের একখ- জমিতে ফুলকপির আবাদ করেন। এরপর পরিশ্রম ও পরিচর্যায় ফুলকপিতে ভরে যায় তার ক্ষেত। বাজারে শিতকালীন ওই সবজির দাম বেশি থাকায় লাভবান হন তিনি। সিদ্দিকুর রহমান জানান, প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। এ পর্যন্ত জমি তৈরি, সার, কিটনাশক, সেচ ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে তিনি ৬০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। ক্ষেতের অবশিষ্ট কপি বিক্রি করে আরো প্রায় ১০ হাজার টাকা আসবে বলে তিনি জানান।

সার ও জ্বালানি তেল নিয়ে চরম ভোগান্তিতে কিশোরগঞ্জের কৃষক

১৩.০২.০৯
ডেসটিনি ।। কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

বোরো মৌসুমের শুরুতে কিশোরগঞ্জের ৫টি হাওর উপজেলাসহ জেলার সর্বত্র চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে জমি তৈরি থেকে শুরু করে ধানের চারা রোপণের কাজে। কাকডাকা ভোর থেকে দিনের পুরো সময় এখন মাঠে কাটছে চাষিদের। এমনকি সকাল ও দুপুরের খাবারও সারছেন মাঠেই। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বোরো উৎপাদনকারী জেলা কিশোরগঞ্জের বিশাল হাওরের একমাত্র ফসল বোরো ধান। তাই বোরো আবাদের এ সময়ে চাষিদের দম ফেলাবার ফুসরত নেই। চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৪৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সার সংকট ও জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্যের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ব্যাপারে চাষিদের সংশয় রয়েছে। সময়মতো সার না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে চাষিদের মাঝে। করিমগঞ্জ উপজেলার গাংগাইল গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, চার দিন ধরে সারের জন্য ঘুরছি। বিএসকে (ব্লক সুপারভাইজার) সময়মতো পাই না, তাই সারও নিতে পারছি না।
সদর উপজেলার শোলাকিয়া গ্রামের কৃষক আবু তাহের জানান, সময়মতো সার পাই না। যেটুকু পাই তাতে চলে না। যেখানে প্রয়োজন ১০ বস্তা সার সেখানে যাওয়া যায় ১০ কেজি। সার সংকটের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. কফিউদ্দিন বলেন, কিশোরগঞ্জে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মজুদ রয়েছে। কোনো সংকট নেই। আশা করি এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হবে। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের সব মাঠকর্মী ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন। এদিকে আমাদের জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ডিজেল সংকটের পাশাপাশি চরম লোডশেডিংয়ের কারণে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ। জানা গেছে, উপজেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে। ডিজেলচালিত ২৭টি গভীর এবং ৩ হাজার ১২৭টি অগভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। এজন্য প্রতিদিন ডিজেলের চাহিদা ৩০ হাজার ৭৪৩ লিটার বলে কৃষি কর্মকর্তা জানান। তবে চাহিদার তুলনায় কম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানা যায়। বিদ্যুৎচালিত গভীর নলকূপের মধ্যে বরেন্দ্র প্রকল্পের ৩৩টি, বিএডিসির ৪টি ও বিআরডিপির সমিতির আওতায় ৫৮টিসহ ৩৮৪টি এবং অগভীর নলকূপ বিআরডিসির ৬৮টিসহ ৩৫৭টি চালু আছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাঁচবিবির ডিজিএম ইমদাদুল হক জানান, এখানে বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিদিন মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে দিনের বেলায় ২ থেকে আড়াই এবং রাতে ৩ মেগাওয়াট। কৃষকদের চাহিদার তুলনায় যা খুবই কম। ভরা মৌসুমে এ অবস্থা থাকলে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হতে পারে বলে আশঙ্কা সর্বমহলের।

চিরিরবন্দর খানসামা পার্বতীপুরে হুমকির মুখে ইরি-বোরো আবাদ সেচের পানি দাবিতে দিনাজপুর-রংপুর সড়ক অবরোধ

১৪.০২.০৯
সমকাল ।। সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা

দিনাজপুর ক্যানেলে পানির দাবিতে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা শুত্রক্রবার দেবীগঞ্জ এলাকায় দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক ৩ ঘণ্টা অবরোধ করেন। এতে করে ওই সড়কের উভয় পাশে শত শত বিভিল্পু ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে। এ সময় অবরোধে আটকা পড়া যানবাহনগুলোর যাত্রীসহ ওই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। পরে উপজেলা প্রশাসনের আশ^াস পেয়ে কৃষকরা অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্ট^াভাবিক হয়।
জানা যায়, তিস্টøা ব্যারেজের দিনাজপুর ক্যানেলের পানি দিয়ে দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর, খানসামা ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো লাগানো হয়। ইরি-বোরো লাগানোর সময় ক্যানেলে কিছুটা পানি থাকলেও গত ২০ দিন ধরে তিস্টøা ব্যারেজ দিয়ে দিনাজপুর ক্যানেলে কোনো পানি সরবরাহ করা হচ্ছে না। পানি না থাকায় দিনাজপুর ক্যানেলের আওতায় সদ্য লাগানো ইরি-বোরো চারা পানির অভাবে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও ইরির চারা মরে যাচ্ছে। পানির অভাবে ইরি ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। এ অবস্ট’ায় পানির জন্য কৃষকদের মধ্যে হাহাকার অবস্ট’ার সৃ®িদ্ব হয়েছে। পানি উল্পুয়ন বোর্ডে বারবার ধরনা দিয়েও কৃষকরা পানির কোনো সুরাহা করতে পারেননি। এতে করে এলাকার কৃষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শুত্রক্রবার বিক্ষুব্ধ কৃষকরা সকাল ৯টা থেকে ডাঙ্গারহাটে জড়ো হতে থাকেন। পরে হাজার হাজার কৃষক বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার দেবীগঞ্জ এলাকায় দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে মহাসড়কে অবস্ট’ান নেন। সেখানে তারা পানির দাবিতে বিভিল্পু স্টেèাগান দেন। এ অবরোধের কারণে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যšø শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। অবরোধের খবর পেয়ে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্ট’লে এসে অবরোধ তুলে দিতে ব্যর্থ হয়। পরে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনারকলি মাহবুব, চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্টø কর্মকর্তা আবদুস সামাদ, ফতেজংপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাবেদ আলী শাহ, আলোকদিহি ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম তারিক ঘটনাস্ট’লে এসে বিক্ষুব্ধ কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা আজ শনিবার বিকেল ৫টার মধ্যে ক্যানেলের পানি দেওয়ার আশ^াস দিলে কৃষকরা অবরোধ তুলে নেন।
এদিকে সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে সৈয়দপুর পানি উল্পুয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রমজান আলী প্রামাণিক ঘটনাস্ট’লে যান এবং তিনিও পানির সমস্যার দ্র“ত সমাধানের আশ^াস দেন। এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী রমজান আলী প্রামাণিক সাংবাদিকদের জানান, ভারতের গজলডোবা ব্যারেজে ভারত একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তিস্টøা নদী পানিশহৃন্য হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকদের চাহিদামতো ক্যানেলগুলোতে পানি সরবরাহ সল্ফ¢ব হচ্ছে না।

জেলায় জেলায় স্ট্রবেরী চাষে বিপ্লব

১৩.০২.০৯
সমকাল ।। মেহেরুল হাসান, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়

বাংলাদেশে ¯দ্ব্রবেরি ফল চাষের পথিকৃৎ প্রফেসর ড. মনজুর হোসেন দেশের ৪৫টি জেলায় ছড়িয়ে দিয়েছেন শীতপ্রধান দেশের এ ফলটির প্রায় দেড় লাখ চারা। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন সারাদেশে বেশ কিছু উদ্যোগী মানুষ চাষ করছেন এ ফল। উদ্যোগীদের পাশে সরকার এগিয়ে এলে এ ফল বিদেশে রফতানি করাও সল্ফ¢ব বলে মনে করেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক।
১৯৯৬ সালের ২ নভেল্ফ^র বাংলাদেশে প্রথম ¯দ্ব্রবেরির চারা নিয়ে আসেন ড. মনজুর হোসেন। জাপানে পিএইচডি করতে গিয়ে লাল টকটকে সুস্ট^াদু এ ফল দেখে দেশে তা চাষাবাদ করার উৎসাহ পান তিনি। জাপান থেকে আনা তিন জাতের ¯দ্ব্রবেরির চারা তিনি রোপণ করেন নিজের নার্সারিতে। কিন্তু আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ না খাওয়ায় চারাগুলো মরে যায়। পরে তিনি সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশনের (মহৃল চারা থেকে পরবর্তী সময়ে ব্যবহারের জন্য চারা তৈরির প™ব্দতি। এতে মহৃল চারা সবসময় সংরক্ষিত থাকে) মাধ্যমে টিস্যু কালচার ব্যবহার করে ৯ জাতের ¯দ্ব্রবেরির চারা তৈরি করেন। এই ৯ জাতের ¯দ্ব্রবেরির চারা নিয়ে ২০০৪ সাল পর্যšø অনেক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ চালান ড. মনজুর। সেসব গবেষণা থেকে তিনি রাবি-১, রাবি-২ ও রাবি-৩ জাতের ¯দ্ব্রবেরি উদ্ভাবন করেন। ২০০৪ সালে তিনি নিজস্ট^ নার্সারিতে রোপণ করেন এই তিন জাতের ¯দ্ব্রবেরি। চারাগুলোয় ফল ধরার পর দেখা যায় রাবি-৩ জাতের ¯দ্ব্রবেরিই দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপখাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ উপযোগী। এই জাতের ¯দ্ব্রবেরির আকার বেশ বড়। একেকটি ফল ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যšø হয়ে থাকে। এই জাতের ¯দ্ব্রবেরিই এখন সারাদেশে চাষ হচ্ছে।
এতদিন ড. মনজুর হোসেনের এই গবেষণা ও চে®দ্বা সবার অজাšেøই ছিল। ২০০৫ সালে বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয় তার এই কীর্তি। দেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশেও শীতপ্রধান দেশের ফল ¯দ্ব্রবেরি চাষ সল্ফ¢ব। ২০০৬ ও ২০০৭ সালে ¯দ্ব্রবেরি চাষাবাদ নিয়ে আরো গবেষণা চালান ড. মনজুর। ২০০৭ সালে তিনি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে আয়োজন করেন ¯দ্ব্রবেরি চাষ বিষয়ক কর্মশালার। দেশের ২৪ জেলার ৩৫ জন কৃষককে ওই কর্মশালায় ¯দ্ব্রবেরি চাষের ব্যাপারে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০০৮ সালেও আয়োজন করা হয় কর্মশালার। এভাবে ধীরে ধীরে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ড. মনজুর হোসেনের এই উদ্ভাবন।
ড. মনজুর হোসেন সমকালকে জানান, দেশের প্রায় ৪৫টি জেলায় এখন বাণিজ্যিকভাবে ¯দ্ব্রবেরির চাষ হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা ছাড়াও ময়মনসিংহ, গাজীপুর, পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোয়ও ছড়িয়ে পড়েছে এই ¯দ্ব্রবেরির চাষ। এ পর্যšø তার কাছ থেকেই উৎসাহীরা ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো ¯দ্ব্রবেরির চারা নিয়ে গেছেন। পঞ্চগড়ের গোল্ডেন সিডস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ¯দ্ব্রবেরি চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফলও হয়েছে। যেখানেই চাষ হচ্ছে, সেখানেই বিত্রিক্র হচ্ছে সুস্ট^াদু এ ফল। ¯দ্ব্রবেরি চাষের প™ব্দতি খুবই সহজ। এ স¤ক্সর্কে ড. মনজুর হোসেন জানান, অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এর চারা লাগানো শুরু করা যায়। জমি তৈরি করে বেড, ম্যাটেড সারি বা রিবোন সারি প™ব্দতিতে চারা লাগাতে হয়। জমির মাটির পিএইচ ৬-৭ হতে হয়। শুধু জৈব সারের মাধ্যমেই ভালো উৎপাদন পাওয়া সল্ফ¢ব। নভেল্ফ^র থেকে ফেব্র“য়ারি পর্যšø রোগ-বালাই তেমন একটা দেখা দেয় না। তাই কীটনাশকেরও প্রয়োজন হয় না। চারা লাগানোর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই ফুল ফুটে ফল ধরা শুরু হয়। মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ফল সংগ্রহ করা যায়। একবিঘা জমিতে ৫ হাজার চারা রোপণ করতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।
ড. মনজুুর আরো জানান, স্ট^াস্টে’্যর জন্য উপকারী এই ¯দ্ব্রবেরি শুধু ফল হিসেবে নয়; ক্যান্সার এবং এইডসের মতো রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এগুলো দেখা গেছে। বিভিল্পু খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও নানা ধরনের প্রসাধনীসহ আরো অনেক পণ্য তৈরিতে ¯দ্ব্রবেরির নির্যাস সুগল্পিব্দ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ফলের পু®িদ্বগুণ মানুষের বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে বলে জানান তিনি।
প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে ‘¯দ্ব্রবেরি বাড়ি বাড়ি’ স্টেèাগান নিয়ে এই উপকারী ফল চাষের চে®দ্বা চালিয়ে যাচ্ছেন ড. মনজুর হোসেন। দেশের কৃষক ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে ¯দ্ব্রবেরি চাষের উদ্যোগ তিনি ছড়িয়ে দিলেও এখনো সরকার এগিয়ে আসেনি এ ফল চাষে। ড. মনজুর বলেন, ‘শীতকালে বরফের কারণে ইউরোপের অনেক দেশে ¯দ্ব্রবেরি চাষ সল্ফ¢ব হয় না। অথচ সে সময় আমাদের দেশে তা চাষ করা যাচ্ছে। সুতরাং দেশে উৎপাদিত ¯দ্ব্রবেরি যদি বিদেশে রফতানি করা যেত তাহলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এ দেশে আসত। এমনকি রফতানি খাতে চিংড়িকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে এই ¯দ্ব্রবেরি। তাই সরকারের উচিত কৃষি স¤ক্স্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে ¯দ্ব্রবেরি চাষে এগিয়ে আসা এবং বিদেশে এ ফল রফতানির ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।’
শীতের দেশের সুস্ট^াদু ফল ¯দ্ব্রবেরি এখন পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে। এ ফলটি চাষে জেলায় জেলায় সংগঠিত হয়েছে বিপ্টèব। মাত্র কয়েক বছরের চে®দ্বায় এ বিপ্টèবের নায়ক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিপ্টèবেরও স্ট^পু দেখেছেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ এবং পৃষ্ঠপোষকতা। অনুসল্পব্দানের আজকের পুরো আয়োজন বাংলাদেশে ¯দ্ব্রবেরি চাষের নানা দিক নিয়েই।

পঞ্চগড় থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে স্ট্রবেরি বাজারজাত শুরু

১৩.০২.০৯
সমকাল ।। সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, পঞ্চগড়

বাংলাদেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে বাণিজ্যিকভাবে ¯দ্ব্রবেরি ফল বাজারজাত শুরু হয়েছে। পঞ্চগড়ের ¯দ্ব্রবেরি এখন যাচ্ছে ঢাকার আগোরা ও নন্দনে। যশোরের গোল্ডেন সিড ফার্ম ¯দ্ব্রবেরি ফল বাজারজাত করছে। এর মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়ের কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এ মৌসুমে এ বাগান থেকে দেড় টন ¯দ্ব্রবেরি উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন তারা। যার বাজার মহৃল্য ৬/৭ লাখ টাকা। প্রতিবছর গাছ বৃ™িব্দর পাশাপাশি উৎপাদনও বাড়বে।
মাত্র কিছুদিন আগে পঞ্চগড়ে ¯দ্ব্রবেরি চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে এর চাষ। যশোরের উলশী হিমাগার লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন সিড ফার্ম গত বছরের ১০ জুলাই পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের হালধরজোত গ্রামে প্রায় তিন একর জমিতে ¯দ্ব্রবেরির চাষ শুরু করে।
পঞ্চগড়ের মাটি ¯দ্ব্রবেরি চাষের উপযোগী যশোরের গোল্ডেন সিড ফার্মের পরিচালক হাফিজুর রহমান পিন্টু মাত্র আট মাসে তা প্রমাণ করেছেন। এখানকার মাটি ও আবহাওয়ায় ¯দ্ব্রবেরি চাষের উপযুক্ত বিবেচনায় তিনি ¯দ্ব্রবেরি চাষ শুরু করেছিলেন। ইতিমধ্যে ফুলে ফলে ভরে গেছে গোটা বাগান। ¯দ্ব্রবেরি ফল দেখতে প্রতিদিনই বিভিল্পু এলাকার লোকজন ভিড় করেন তাদের বাগানে।
গত ৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এ বাগান থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অর্থকরী ¯দ্ব্রবেরি ফল বাজারজাত কার্যত্রক্রমের উ™ে^াধন করা হয়। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মনজুর হাসান ভূঁইয়া এ কার্যত্রক্রমের উ™ে^াধন করেন। উ™ে^াধনী দিনে বাগান থেকে ২০ কেজি ¯দ্ব্রবেরি ফল তোলা হয়।
উদ্যোক্তারা জানান, চলতি মৌসুমে এ বাগান থেকে দেড় টন ¯দ্ব্রবেরি উৎপাদন হবে। যার বাজার মহৃল্য পাঁচ শ’ টাকা কেজি হিসাবে সাড়ে সাত লাখ টাকা। এ বাগানের উৎপাদিত ¯দ্ব্রবেরি ফল বিশেষ ধরনের প্যাকেটে ঢাকার আগোরা ও নন্দনে পাঠানো হবে। সেখানে প্রতিকেজি ৮৫০ টাকা দরে বিত্রিক্র হবে। এখানকার নার্সারি থেকে যে কেউ ¯দ্ব্রবেরির চারা সংগ্রহ করতে পারেন। এ বাগান থেকে প্রতি সপ্টøাহে ২০ কেজি করে ¯দ্ব্রবেরি সংগ্রহ করা যাবে।
প্রথম বাজারজাতকরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ¯দ্ব্রবেরির রাবি-৩ জাতের উদ্ভাবক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের জৈব প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক এম মনজুর হোসেন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্যাথলজি¯দ্ব অধ্যাপক শাহ আলম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম রাফিউল ইসলাম, দৈনিক কল্যাণ পত্রিকার স¤ক্সাদক একরাম উদ দৌলা এবং উদ্যোক্তা মফিজুল ইসলাম মোহন বক্তব্য রাখেন।
¯দ্ব্রবেরির উদ্ভাবক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের জৈব প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক এম মনজুর হোসেন বলেন, ১২ বছর ধরে ¯দ্ব্রবেরি নিয়ে গবেষণা করছি। ¯দ্ব্রবেরি নিয়ে অনেক স্ট^পু। পঞ্চগড়ে এত ভালো ¯দ্ব্রবেরি হবে তা ভাবিনি। পঞ্চগড়ে উৎপাদিত ¯দ্ব্রবেরি সুস্ট^াদু ও রসালো।
তিনি বলেন, ¯দ্ব্রবেরি চাষকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পঞ্চগড়ে ¯দ্ব্রবেরির বাগান করা হয়েছে। এখানে একটি নার্সারিও চালু করা হয়েছে। এ বাগান ও নার্সারিতে গবেষণা কার্যত্রক্রম পরিচালনা করা হবে। তিনি আরো বলেন, টিস্যু কালচার প™ব্দতির সোমোক্লোনার ভেরিয়েশন প্রযুক্তির সাহায্যে ¯দ্ব্রবেরির তিনটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ জাতগুলো হচ্ছে রাবি-১, রাবি-২ ও রাবি-৩। এর মধ্যে রাবি-৩ জাতটি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চাষের সবচেয়ে উপযোগী।
জাপান বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগাওয়ারা বলেন, ¯দ্ব্রবেরি সারাবিশে^ একটি জনপ্রিয় ফল। এটি সাধারণত শীতপ্রধান দেশের ফল হলেও আমাদের দেশে এর চাষ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। পু®িদ্বগুণ ও মানে সমৃ™ব্দ ¯দ্ব্রবেরি আসলে একটি গুল্ম জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। দেখতে অনেকটা লিচুর মতো। আমাদের দেশে চাষের সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহারও শুরু হয়েছে। ¯দ্ব্রবেরি ফ্লেভারসমৃ™ব্দ বিভিল্পু দ্রব্য (খাদ্য ও প্রসাধনসামগ্রী) এখন বাজারে এসেছে। ¯দ্ব্রবেরিতে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘ই’ এবং ফলিক এসিড, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, পলিফেনল, এলার্জিক, ফেরালিক এবং কুমারিক এসিড, কুয়েরসিটিন, জ্যন্থোমাইসিন এবং ফাইটো¯েদ্ববল আছে। এর মধ্যে এলার্জিক এসিড ক্যান্সার ও প্রৌঢ়Í^ প্রতিরোধী এমনকি এইডস প্রতিরোধী হিসেবে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন। বাংলাদেশেও এর চাষ হতে পারে।
গোল্ডেন সিড ফার্মের পরিচালক হাফিজুর রহমান পিন্টু বলেন, অর্থকরী ¯দ্ব্রবেরি চাষের উজ্জ্বল সল্ফ¢াবনা রয়েছে পঞ্চগড়ে। দীর্ঘ সময় তুলনামহৃলকভাবে ঠা-া আবহাওয়া বিরাজিত এ জেলায় ¯দ্ব্রবেরি চাষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। চাষিদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি উল্পুতমানের ¯দ্ব্রবেরির চারা সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই বাগান ও নার্সারি স্ট’াপন করা হয়েছে। এ নার্সারি প্রকল্কপ্প পহৃর্ণতা পেলে পঞ্চগড়ের মানুষ সহজেই ¯দ্ব্রবেরির চারা পাবে এবং এই সুমি®দ্ব ফল চাষে উদ্যোগী হবে। মাত্র এক বিঘা জমিতে চার মাসের ব্যবধানে চাষাবাদের খরচ বাদ দিয়ে লাভ হবে ২-৩ লাখ টাকা। ফলে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। দেশের মানুষ নতুন করে পরিচিত হবে এই সুমি®দ্ব ফলের সঙ্গে। পাশাপাশি পঞ্চগড়ের কৃষি অর্থনীতিতে যোগ করবে নতুন মাত্রা।

Wednesday, February 11, 2009

সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎ ঘাটতি ৩৫ মেগাওয়াট বোরো চাষ ব্যাহত, পানির জন্য হাহাকার

১২.০২.০৯
ডেসটিনি ।। সিরাজগঞ্জ/উল্লাপাড়া প্রতিনিধি

চলতি বোরো মৌসুমে সিরাজগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে লাখ লাখ বিঘা জমির বোরো ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে না পেরে ইতিমধ্যেই সাড়ে ৪ হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপের আবেদন সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বাতিল করে দিয়েছে। ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে গভীর ও অগভীর নলকূপ থেকে পানি উত্তোলন করে বোরো ক্ষেতে দিতে না পারায় বোরো ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে পড়ায় পানির জন্য কৃষকদের মধ্যে হাহাকার শুরু হয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ জেলায় সেচ মৌসুমে ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি নিয়ে ৯ লাখ ৩৫ হাজার বিঘা জমিতে চলতি মৌসুমে কৃষকরা বোরো চাষ করেছে। সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ৬০ মেগাওয়াট থাকলেও বর্তমানে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এ বিশাল পরিমাণ বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে চলতি সেচ মৌসুমে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষক।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উল্লাপাড়া সদর দপ্তর থেকে জানা যায়, ১ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩২ জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ চাহিদা ৬০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সরবরাহ পাচ্ছে ২৫ মেগাওয়াট, যা ঘাটতি চাহিদার তুলনায় ৩৫ মেগাওয়াট। জেলার বিদ্যুতে চালিত ১৩ হাজার ৭১৪টি সেচ পাম্প, ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৭৬টি আবাসিক, ১৭ হাজার ৮৯৫টি বাণিজ্যিক ও ৬ হাজার ৪৩৫টি দাতব্যসহ অন্যান্য সংযোগ রয়েছে। এ ছাড়া গত বছরে ৪ হাজার ৫শ’টি বিদ্যুৎচালিত সেচ পাম্পের নতুন সংযোগের জন্য আবেদন জমা ছিল, যা বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে না পারায় সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আবেদনকৃত সাড়ে ৪ হাজার আবেদনপত্র বাতিল করেছে। জেলায় ১৩ হাজার ৭১৪টি সেচ পাম্পের মধ্যে ১৩ হাজার ৭শ’টি অগভীর নলকূপ, ৫১১টি গভীর নলকূপ ও ১৩৩টি পাওয়ার পাম্পের মাধ্যমে জেলার কৃষকরা ৯ লাখ ৩৫ হাজার বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম থাকায় চলতি বোরো চাষ বিদ্যুৎ সংকটের কারণে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষক। সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার শহিদুজ্জামান জানান, আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে ৮০ ভাগ বিদ্যুৎ সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

শেরপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নেমে গেছে

১২.০২.০৯

ডেসটিনি ।। শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে গেছে। এতে প্রায় কয়েক হাজার নলকূপ সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে। আবার অনেক নলকূপে পানি উঠলেও পরিমাণ সামান্য। ইতিমধ্যেই যার প্রভাব পড়েছে অনেক এলাকায়। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানীয় জলের সংকট। এতে মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে পানি সংকটের কারণে উপজেলার ৮/১০ হাজার হেক্টর বোরো জমিতে সেচ সমস্যাও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিন বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পানি স্তর ব্যাপক নিচে নেমে গেছে। বিশেষ করে সীমাবাড়ী, সুঘাট, খামারকান্দী, খানপুর ও গাড়িদহÑ এ পাঁচটি ইউনিয়নে পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সীমাবাড়ীর শাহ আলী, সুঘাটের মোকছেদ আলী, খানপুরের সাখাওয়াত মাস্টার, গাড়িদহের নজরুলসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ইতিমধ্যে এসব এলাকার হস্তচালিত নলকূপে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। পানির স্তর ২৫ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত নেমে গেছে। সেচ সংকটের পাশাপাশি পানীয় জলের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। তারা আরো জানান, বোরো প্রকল্পের নলকূপ থেকে সংগৃহীত পানি গ্রামের লোকজন ২/৩ দিন ধরে সংরক্ষণ করেন। আর ওই পানি তাদের খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে। এ ছাড়া পানি সংকটে গরু, মহিষ, মানুষ একই ডোবা বা পুকুরে গোসল করছে। ফলে নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। অপরদিকে খাগা গ্রামের শুকুর আলী জানান, তাদের গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে তাদের এলাকাভিত্তিক শ্যালো মেশিনগুলোতে সকালে লাইন দিয়ে পানি নিতে হয়। আর সেই পানি দিয়ে খাওয়া দাওয়া সারতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় শ্যালো মেশিনচালিত মোট ৮ হাজার ৪৫৬টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে ডিজেলচালিত ৭ হাজার ৮০০টি ও বিদ্যুৎচালিত ৬৫৬টি। এ ছাড়া ৭৫টি গভীর নলকূপের মধ্যে ৬৫টি বিদ্যুৎচালিত ও ১০টি ডিজেলচালিত এবং ১৯৫টি পাওয়ার পাম্পের মধ্যে ডিজেলচালিত ১৯২টি ও বিদ্যুৎচালিত ৩টি। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো জমিতে সেচ দিতে কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে চলতি বোরো উৎপাদনে এর সামান্যতম প্রভাব পড়বে না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, এ উপজেলায় সর্বমোট ২ হাজার ৮৩১টি নলকূপ রয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ৪০০টি চালু ও বাকিগুলো অকেজো। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী এ কে এম বদরুল আলম জানান, পানির স্তর ১৮ ফুট নিচে থাকলে সেটাকে আমরা স্বাভাবিক বলে থাকি। কিন্তু ওইসব ইউনিয়নের পানির স্তর ইতিমধ্যে ২৬ ফুট নিচে নেমে গেছে। তিনি আরো বলেন, দিন দিন পানির স্তর আরো নিচে নেমে যেতে পারে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে নদী খনন করতে হবে। আর ফসল চাষের জন্য ওইসব নদীতে বিশেষ ব্যবস্থায় পানি রিজার্ভ রাখতে হবে।

বোরো মৌসুমে ডিজেল সংকট

১২.০২.০৯
ডেসটিনি ।। সম্পাদকীয়

উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বোরোর ভরা মৌসুমে ডিজেলের সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানা গেছে। সাধারণত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বোরো মৌসুম। বোরো আবাদের সময় এলে দেখা যায় ডিজেলের চাহিদা কমপক্ষে চারগুণ বৃদ্ধি পায়। দেশের অধিকাংশ বোরো চাষ উত্তরাঞ্চলেই হয়ে থাকে। ওই অঞ্চলের পেট্রোল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ডিলাররা অভিযোগ করেছেন, ডিপোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল ও ডিজেলের মজুদ থাকলেও নানা রকম হয়রানি করা হচ্ছে এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। ডিলাররা তাদের চাহিদা অনুসারে তেল কিনতে গেলে তাদের প্রয়োজনের অর্ধেক সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে। এসব কারণে গ্রামাঞ্চলে প্রতি লিটারে চার পাঁচ টাকা বেশি দামে তেল কিনতে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৭ দশমিক ২৭ ভাগ এবং উত্তরাঞ্চলে ১৫ দশমিক ৫৩ ভাগ বেশি বলে ধরা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পেট্রোলিয়াম পণ্যের এই সংকট একটি উদ্বেগের বিষয়ই বটে।
ফেব্রুয়ারি মাস বোরো আবাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় পেট্রোলিয়াম পণ্যের এই অস্বচ্ছতা দেশের বোরো উৎপাদনে ভয়ানক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এবার শুষ্ক মৌসুমে ক্ষেতে পানির চাহিদা বেশি বলে জানা গেছে। বোরোর বৈশিষ্ট্য হলো প্রয়োজনীয় পানি না পেলে বোরো ধান উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হয় এবং ধান গাছ শুকিয়ে যায়। সুতরাং কোনোক্রমেই ঝুঁকি নেয়া চলবে না। সরকারের যে করেই হোক কৃষকের কাছে প্রয়োজনীয় তেল ও ডিজিল সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তা না করতে পারলে ধান উৎপাদনে যে ঘাটতি দেখা দেবে তা দেশে মারাত্মক খাদ্য সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কৃষকের কাছে সঠিক মূল্যে তেল ও ডিজেল পৌঁছে দিতে সরকারকে খুব মেহনত করতে হবে বলে আমরা মনে করি না। এ জন্য প্রয়োজন শুধু সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছা এবং সচেষ্ট হয়ে ওঠা। প্রতিটি এলাকায় প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কৃষিবিভাগ ও অন্য সংশ্লিষ্টদের মনিটরিং করার নির্দেশ প্রদান করলে এ সমস্যা অনেকটা ঘুচে যেতে পারে বলে আমরা ধারণা করি। মূল যে সমস্যা থাকার কথা তা হলো ডিপোতে তেল বা ডিজেল না থাকা। কিন্তু বিভিন্ন হিসাব থেকে আমরা জানতে পেরেছি ডিপোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে তেল ও ডিজেল রয়েছে যা বোরো চাষিদের সরবরাহ করতে কোনো সমস্যা নেই। বর্তমান সরকার কৃষির ওপর যথেষ্ট জোর দিয়ে আসছে এবং কৃষিমন্ত্রী নিজে তা প্রচেষ্টার জন্য সবার প্রশংসাধন্য। অথচ বোরো চাষিরা বঞ্চিত হলে তা হবে খুবই দুঃখজনক।

এগ্রোবেজ সেক্টরে তিন বছরে ৯০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব

ইত্তেফাক ।। কারার মাহমুদুল হাসান

বিকেবি থেকে সংগৃহীত বিবরণীতে কৃষিভিত্তিক (অমৎড়নধংবফ) ৩৭টি বিভিন্ন বিষয়ে ঋণদান/বিতরণের চিত্রে দেখা যায় যে, (১লা জানুয়ারি-১৯৮০ থেকে জুন-২০০১ পর্যন্ত) সাড়ে একুশ বছরে মোট ৩৭৩৯টি প্রকল্পের কার্যক্রমে (প্রকল্প বলতে প্রতিটি এক লক্ষ টাকা এবং তার অধিক বুঝানো হয়েছে) মোট ৪৩০ কোটি ৩৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা ঋণ প্রদান/বিতরণ করেছে। আর এ কৃষিভিত্তিক খাতে বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে উক্ত সাড়ে একুশ বছরে বিকেবি ডেইরী, ফিশারী ও পোল্ট্রি এ তিনটি কৃষিভিত্তিক মূল খাতের হিসসা হলো-সর্বমোট ১০৯ কোটি ৫৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা মাত্র।

সংগৃহীত তথ্যাদি পর্যালোচনায় আরও যে চিত্র বেরিয়ে আসে তা হলো ঃ

উল্লিখিত প্রতিবেদন অনুসারে সাড়ে একুশ বছরে (০১/০১/৮০ খেকে ৩০/০৬৩২০০১) বর্ণিত ৩৭টি অমৎড়নধংবফ খাতে মোট ৩৭৩৯টি প্রকল্পে (প্রকল্প বলতে প্রতিটি ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকা এবং তার উপরে) বিতরণকৃত ঋণের (৪৩০ কোটি ৩৮ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা) বিপরীতে উক্ত সময়ে ঋণ আদায় (অসড়ঁহঃ জবপড়াবৎবফ) হয়েছে টাঃ ১৭১ কোটি ৯২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। ৩০/০৬/২০০১ তারিখে উক্ত বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে ওভারডিউ (ৃঙাবৎ উঁব) ছিল টাঃ ৪২৫ কোটি ০৪ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা এবং ঐ একই তারিখে (৩০/০৬/২০০১) উল্লিখিত ৩৭টি খাতে আউটস্ট্যান্ডিং (ৃঙঁঃংঃধহফরহম) ঋণের পরিমাণ ছিল টাঃ ৮১০ কোটি ৫৭ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা।

উল্লেখিত সাড়ে একুশ বছরের এ চিত্র পর্যালোচনান্তে যে কারোর কাছে প্রতীয়মাণ হবে যে, কৃষিভিত্তিক এ ঋণের প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কার্যক্রমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যথাযথ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কৌশল এবং সর্বোপরি মনিটরিং কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেননি।

সাড়ে ২১ বছরে কৃষিভিত্তিক মূল তিনটির প্রতিটি খাতে ঋণ প্রদান/আদায় ইত্যাদি পরিস্থিতি নিম্নরূপ ঃ



নং প্রকল্প মোট প্রকল্প সংখ্যা ঋণ বিতরণ ঋণ আদায় ঙাবৎ উঁব ঙাবৎ ঙঁঃংঃধহফরহম

ডেইরী ফার্ম/প্রজেক্ট ৯৮৯ ২০৬৪.৯৪ ১০১৫.৩৯ ২৯৪৮.১৪ ৪০১৯.৭০

পোলট্রি ফার্ম/প্রজেক্ট ৪৭৫ ৪০৬৮.৪২ ৯৩৬.২৪ ৩৫১২.৩০ ৭৪৫৮.৭১

ফিসারী ফার্ম/প্রজেক্ট ২৮৮ ৪৮২০.০৪ ৪৭৭.৫১ ১১০৯.০৪ ৪৯১৫.৭৬

মোট = ১৭৫২ ১০৯৫৩.৪ ২৪২৯.১৪ ৭৫৬৯.৪৮ ১৬৩৯৪.১৭



উল্লেখিত সময়ে (সাড়ে ২১ বছরে, উপরোল্লিখিত ৩টি খাতের সংগে সংশ্লিষ্ট আরও অতিরিক্ত ৪ ধরনের প্রকল্পে মাত্র ০১ (এক)টি ছাগল উৎপাদন কর্মকান্ডে/খাতে মোট ০১ লক্ষ টাকা, ৩২টি ঝযৎরসঢ় ঐধঃপযবৎু প্রকল্পে ৫৬১.৯৫ লক্ষ টাকা, ৩০৪টি ঝযৎরসঢ় পঁষঃঁৎব প্রকল্পে টাঃ ৭৭৪.৫৬ লক্ষ এবং ৩৩টি ইববভ ঋধঃবহরহম খাতে ১৫৯.০৬ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে বিকেবি থেকে।

উল্লেখিত ৪টি খাতে মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১৪৩৬.৫৭ লক্ষ টাকা, ঋণ আদায় ৪১৭.৯৪ লক্ষ টাকা এবং ঙঁঃংঃধহফরহম ঋণের পরিমাণ ২১১৬.১৫ লক্ষ টাকা (৩০/০৬/২০০১)। উক্ত খাত ৪টিতেও ঋণ প্রদান, কার্যক্রম বাস্তবায়ন, মনিটরিং ইত্যাদিতে অবহেলার চিত্র খুব পরিষ্কার।

কৃষিভিত্তিক (অমৎড়নধংবফ) মূল তিনটি খাতে (ডেইরি+পোল্ট্রি+ফিশারি) সালে ২১ বছরে ঃ

মোট ১৭৫২টি প্রকল্পে (প্রতি প্রকল্পে এক লক্ষ টাকা এবং তার উপর) ঋণ প্রদান করা হয়েছে সর্বমোট ১০৯ কোটি ৫৩ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।

উক্ত হিসেবে প্রতিবছর গড়ে উল্লেখিত ৩টি খাতে ঋণ বিতরণ পরিমাণ ৫ কোটি ৭ লক্ষ ১০ হাজার ১৮৫ টাকা মাত্র।

সাধারণ পর্যালোচনায় আরও দেখা যায় যে, উল্লেখিত তিনটি মূল উপখাতে প্রতিটি শাখা থেকে (মোট ৯২২টি শাখা বিবেচনায় আনা হলে) গড়ে প্রতি বছর মাত্র টাঃ ৫৫,০০০/- (পঞ্চান্ন হাজার টাকা)টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

এরপর প্রায় আট বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। ধারণা করা যায় যে উপরোল্লিখিত কর্মকান্ডে বিস্তার কম করে হলেও দ্বিগুণ বা তার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তা অব্যাহত আছে।

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) কর্তৃক ৩০/০৬/২০০২ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ পরিস্থিতি পর্যালোচনায় নিম্নে বর্র্ণিত বিবরণ পাওয়া যায় ঃ

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)-এর সর্বমোট ৩৪৯টি শাখা থেকে সংগ্রহকৃত (০১-১০-০২) তথ্য বিবরণী পর্যালোচনায় যে চিত্র পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় যে, উক্ত ব্যাংক শুরু থেকে এ পর্যন্ত (৩০-০৬-২০০২) ১) খামার/দুগ্ধবতী গাভী পালন কর্মকান্ডে টাঃ ৪২.২৬ কোটি, ২) ৫৪৯টি হাঁস-মুরগী খামার প্রকল্পে টাঃ ৪.৬৮ কোটি, ৩) ১০১০টি ছাগল-ভেড়া মিশ্র খামার প্রকল্পে টাঃ ১.৮১ কোটি টাকা, ৪) ৫৮৯৮টি পুকুর খনন/পুকুরে মাছের চাষ কর্মকান্ডে ২২.২৭ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।

রাকাব থেকে সংগৃহিত একই প্রতিবেদন ’অন্যান্য’ ঋণ খাতে শিরোনামে ৭১০১৬০টি কর্মকান্ডে ১৩৩৫.১৯ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতীয়মাণ হয় এ ঋণ এর (প্রতিক্ষেত্রে) প্রদানকৃত ঋণের পরিমাণ গড়ে ৩/৪ হাজার টাকা থেকে ৮/১০ হাজার টাকা হতে পারে।

বর্তমান মহাজোট সরকার তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে আগামী পাঁচ বছরে প্রতিটি পরিবার থেকে একজন বেকার যুবক/যুবতীর কর্মসংস্থান করার প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়েছে। পত্রিকান্তরে গত কয়েক সপ্তাহের পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরা খবর পাঠ করে জানা যায় যে সদাশয় সরকার ইতিমধ্যে দেশের প্রতি উপজেলায়, ইউনিয়ন ও গ্রামে বেকার লোকজনের তালিকা প্রস্তুতির পরিকল্পনা শুরু করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি তাঁর এক বক্তৃতায় বলেছেন যে, দেশের সকল অঞ্চলে কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রত্যেক উপজেলায় সরকার কর্তৃক কারিগরী ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। কিছুদিন আগে কর্মসংস্থান মন্ত্রী মহোদয় তাঁর দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন যে, প্রতিটি ইউনিয়নে বেকার যুবক-যুবতীদের তালিকা প্রণয়নের কাজ অচিরেই শুরু করা হবে। এসবই ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে এসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য যে প্রস্তুতি, পরিকল্পনা, প্রশাসনিক অবকাঠামো এবং উদ্যোগ আয়োজন দরকার তা আক্ষরিক অর্থেই সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আসল কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখা যাবে যে- চোখের সামনে অবলীলাক্রমে এক-দুই বছর পার হয়ে গেছে চিন্তা-ভাবনা করতে করতে। এখানে উল্লেখ্য যে, বিবিএস প্রকাশিত সর্বশেষ দলিলে (এপ্রিল-২০০৮) বাংলাদেশে বর্তমানে ২ কোটি ৫৪ লক্ষ ৯০ হাজার ৪ শত ২২টি পরিবার আছে।

উল্লেখিত প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এবং রাজশাহী কৃষি ব্যাংক (রাকাব), মূলত এই দু’টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তথা ব্যবহার করে সারা দেশে আগামী অনধিক তিন বছরের মধ্যে কৃষিভিত্তিক উৎপাদনশীল কর্মকান্ডে কমপক্ষে ৮০ লক্ষ থেকে এক কোটি বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব।

বাংলাদেশে বর্তমানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৮৭৩১৯টি গ্রাম আছে। এর মধ্যে অনধিক এক/দুই পারসেন্ট গ্রাম নদী ভাঙনের কারণে হারিয়ে গেছে - যার কিছু সংখ্যক অবশ্য অন্যত্র বা নদীর অন্য পাড়ে জেগে উঠেছে চর আকারে।

গ্রামের সংখ্যা কম বেশি ৮৬ হাজার ধরে চলতি ক্যালেন্ডার বছর থেকে গড়ে প্রতিটি গ্রামে নিম্নে বর্ণিত কর্মকান্ড আগামী দুই মাসের মধ্যে শুরু করা যেতে পারে।

প্রতি গ্রামে সরকার মূলত বিকেবি ও রাকাব-এর অর্থায়নের মাধ্যমে (ক) মিনি ডেইরী (খ) মিনি পোল্ট্রি (গ) বীফ ফেটেনিং (ইববভ ঋধঃবহরহম) এবং (ঘ) পুকুরে মাছের চাষ- এ চারটি কৃষিভিত্তিক (অমৎড়নধংবফ) খাতে বেকার যুবক (এবং ক্ষেত্র বিশেষে যুবতী/মহিলা) দেরকে কর্মসংস্থান কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে- প্রথম বছরে প্রতি গ্রামে ৫টি করে মিনি ডেইরী (অনধিক ৩টি থেকে ৫টি গাভী) ফার্ম, ২০০টি থেকে ৩০০ মোরগ-মুরগি সমন্বয়ে ৫টি করে পোল্ট্রি ফার্ম, ৩টি থেকে ৫টি গরু (ষাঢ় বা বলদ) সমন্বয়ে ৫টি ইববভ ঋধঃবৎরহম থ ফার্ম, ৩টি থেকে ৫টি পুকুরে আধুনিক পদ্ধতিতে মাছের চাষ (বর্তমানে বিবিএস এর তথ্য অনুযায়ী ১৯ লক্ষাধিক পুকুর আছে বাংলাদেশে) এর ব্যবস্থাদি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রথম বছরে ক,খ,গ,ঘ ভুক্ত কর্মসমূহ ৮৬০০০ ী ২০ (৫+৫+৫+৫) = ১৭ লক্ষ ২০ হাজার ফার্ম স্থাপন করে প্রতিটি ক্যাটাগরির কর্মে কমপক্ষে দুই জন বেকার যুবক-যুবতীর প্রথম বছরে প্রায় ৩৪ (চৌত্রিশ) লক্ষ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব। একই প্রক্রিয়া দ্বিতীয় ক্যালেন্ডার বছরে ৩৪ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ এবং তৃতীয় বছরে ৪০ লক্ষ বা তারও অধিক সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতী তথা বেকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। কাজটি আপাতত দৃষ্টিতে কঠিন মনে হতে পারে তবে সরকার যদি পরিকল্পিত ভাবে দক্ষতার সংগে দেশপ্রেমিক অভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে উপরোক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কাজে নিয়োজত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি উপযুক্ত ’মনিটরিং ও ইভাল্যুয়েশন সেল’ গঠন করে (সে সংগে উল্লেখিত দুইটি ব্যাংক-এর সদর দফতরে একইভাবে) দৈনন্দিন মনিটরিং ও ’ফলোআপ একশন’ নিশ্চিত করতে পারেন তবে দেশে আগামী তিন বছরে প্রায় এক কোটি বেকার লোকজনের কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা অবশ্যই করা সম্ভব। এখানে উল্লেখ্য যে, দেশে মাছ, মাংস, মোরগ-মুরগি ইত্যাদির উৎপাদন চাহিদার তুলনায় এক-চতুর্থাংশের কম।

উক্ত কার্যাদি সম্পাদনের জন্য প্রতিটি বিকেবি/রাকাব শাখায় (বিকেবি ৯২২+রাকাব ৩৪৫= মোট ১২৬৭) অতিরিক্ত ১টি করে সুনির্দিষ্টভাবে ’ অমৎড়নধংবফ প্রকল্প বুথ’ স্থাপন করার প্রয়োজন হবে শিক্ষিত ব্যাংক কর্মী নিয়োগ/নিয়োজিত করার কাজটি সম্পাদন/সম্পন্ন করতে হবে। কম্পিউটারের দক্ষতাসহ বাণিজ্যবিভাগে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণী ডিগ্রিপ্রাপ্ত কর্মী বিভিন্ন শাখায় নিয়োগ করা গেলে উদ্দেশ্যসাধন দ্রুত কর্যকর করা করা সহজ হবে। সে সাথে প্রয়োজন হবে ব্যাংক দুটির প্রতিটি আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও ব্যাংক সদর দফতরে (বাংলাদেশ ব্যাংকসহ) সমৃদ্ধ ও কার্যকরী ’মনিটরিং সেল’ স্থাপনের। পরিকল্পিত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এ কাজগুলো দ্রুত সম্পাদন করা সম্ভব। এ সেলগুলোকে সিদ্ধান্ত প্রদানের প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেয়া যেতে পারে।

তাছাড়াও অন্যান্য যে সকল উৎপাদনশীল কর্মকান্ড সম্প্রসারণ করা সম্ভব হবে তা হলো :-

ক) অমৎড়নধংবফ খাতে উৎপাদন ও বাজারজাত কর্মকাণ্ডে কোন কোন ক্ষেত্রে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি করা সম্ভব। খ) বেশ কিছু কৃষিপণ্য চৎড়পবংংরহম -এর মাধ্যমে অফফবফ মুল্য সংযোজন প্রক্রিয়ায় দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে ক্রম বর্ধিত বাজার সৃষ্টিতে অবদান রাখতে সম্ভব।

গ) চৎড়পবংংরহম ও বাজারজাত ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে আরো প্রায় কয়েক লক্ষ যুব-যুবতীর সাংবাৎসরিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ঘ) ব্যাপক কর্মসংস্থানের ফলে দেশে-গ্রামে-গঞ্জে জধফরপধষষু আইন শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন সাধন সম্ভব ও সহজতর হবে।

ঙ) তৃণমূল পর্যায়ে সারা বাংলাদেশের পল্লী গ্রামসমূহে বসবাসকারী কোটি পরিবারের পরিকল্পিতভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ সরকারের অর্থনৈতিক ভিত্তি (ইধংব) সম্প্রসারণ ও মজবুত হবে এবং দেশ-বিদেশে ওসধমব ইঁরষফরহম থ-এ বিশেষ অবদান রাখতে সহায়ক হবে। আপাতত; উপরোল্লিখিত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনাপূর্বক যথার্থ মনে হলে আমলে এনে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকার প্রধানকে সবিনয় অনুরোধ জানাই।

উক্ত কার্যাদি সম্পাদনের জন্য প্রতিটি বিকেবি/রাকাব শাখায় (বিকেবি ৯২২+রাকাব ৩৪৫= মোট ১২৬৭) অতিরিক্ত ১টি করে সুনির্দিষ্টভাবে ’ অমৎড়নধংবফ ঢ প্রকল্প বুথ’ স্থাপন করার প্রয়োজন হবে শিক্ষিত ব্যাংক কর্মী নিয়োগ/নিয়োজিত করার কাজটি সম্পাদন/সম্পন্ন করতে হবে। কম্পিউটারের দক্ষতাসহ বাণিজ্যবিভাগে কমপক্ষে দ্বিতীয় শ্রেনী ডিগ্রিপ্রাপ্ত কর্মী বিভিন্ন শাখায় নিয়োগ করা গেলে উদ্দেশ্য সাধন দ্রুত কর্যকর করা করা সহজ হবে।

সে সঙ্গে প্রয়োজন হবে ব্যাংক দুটির প্রতিটি আঞ্চলিক, বিভাগীয় ও ব্যাংক সদর দফতরসমূহে (বাংলাদেশ ব্যাংকসহ) সমৃদ্ধ ও কার্যকারী ’মনিটরিং সেল’ স্থাপনের। পরিকল্পিত ও কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এ কাজগুলো দ্রুত সম্পাদন করা সম্ভব। এ সেলগুলোকে সিদ্ধান্ত প্রদানের প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত ক্ষমতা দেয়া যেতে পারে।

[লেখক: সাবেক সচিব]

সারকারখানা স্থাপনে সহায়তা দিতে চায় চীন

১২.০২.০৯
ইত্তেফাক
বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জ জেলায় প্রস্তাবিত নতুন ইউরিয়া সার কারখানা নর্থ-ওয়েস্ট ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের আগ্রহ ব্যক্ত করেছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার আরো সার কারখানা স্থাপন সহায়তা চাইলে চীন ইতিবাচক সাড়া দেবে।

বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত জাং কুইংজিয়ান শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড় ুয়ার সাথে মন্ত্রণালয়ে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার, বাংলাদেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ শিল্পখাতে যৌথ বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে চমৎকার বিনিয়োগ পরিবেশ বিরাজ করছে, যার সুযোগ চীনা বিনিয়োগকারীগণ গ্রহণ করতে পারে। তিনি বাংলাদেশে সার কারখানা স্থাপন, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও পর্যটন খাতের বিকাশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য চীনা রাষ্ট্রদূতকে পরামর্শ দেন। তিনি বাংলাদেশে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ করে সার কারখানা স্থাপনে চীনা উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতার প্রশংসা করেন। এ সময় তিনি সাভার চামড়া শিল্পনগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) স্থাপন প্রক্রিয়ায় চীনের দক্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের বিশাল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে উভয় দেশই আর্থ-সামাজিকভাবে লাভবান হতে পারে। তিনি কক্সবাজার অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে কুংমিং মিয়ানমার-কক্সবাজার দ্বিতীয় সিল্ক রুট স্থাপনে এগিয়ে আসতে চীনা রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর ফলে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরো সুদৃঢ় হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের প্রশংসা করে বলেন, সরকারের দক্ষ নেতৃত্ব ও বিনিয়োগবান্ধব পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। চীনা উদ্যোক্তাগণ বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্পখাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে রাষ্ট্রদূত মন্ত্রীকে অবহিত করেন। -তথ্য বিবরণী

Tuesday, February 10, 2009

কৃষকের পাওনা সাড়ে ৪ কোটি টাকা নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের আখমাড়াই বন্ধ ঘোষণা

১১.০২.০৯
ডেসটিনি ।। ময়নুল ইসলাম, লালপুর (নাটোর)
আরো একমাস মাড়াই কার্যক্রম চলার উপযোগী আখ থাকার পরও কৃষকরা মিলে আখ সরবরাহ না করায় গতকাল মঙ্গলবার লালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। উৎপাদন শুরু হওয়ার পর অধিকাংশ মাড়াই মৌসুমে লোকসান হওয়ায় মিলটি পুঞ্জিভূত লোকসানের ঋণের বোঝা আরো বাড়লো। গত মৌসুমের ১ হাজার ৬৭৫ মেট্রিক টনসহ মোট ১৩ হাজার ৭৯৩ মেট্রিক টন চিনি এখনো অবিক্রীত রয়েছে। কৃষকদের পাওনা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
মিল সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মিলটি ১১০ কর্মদিবসে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৬০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১২ হাজার ১১৮ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করে। চিনি আহরণের হার ৭ দশমিক ২০ ভাগ। কিন্তু ১ হাজার ৬৭৫ মেট্রিক টনসহ মোট ১৩ হাজার ৭৯৩ মেট্রিক টন চিনি এখনো অবিক্রীত রয়েছে। ২০০৮-০৯ মাড়াই মৌসুমে ১৪৮ কর্মদিবসে ২ লাখ ৫২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১৯ হাজার ৪০৪ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত বছর ২৪ অক্টোবর মিলের মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়। আরো ৩৮ কর্মদিবস মাড়াই কার্যক্রম চলার উপযোগী আখ মাঠে দ-ায়মান থাকার পরও কৃষকরা মিলে আখ সরবরাহ না করায় ১১০ কর্মদিবসে মিলের মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে এ বছর লোকসানের পরিমাণ আরো বাড়বে।
মিল চালুর অনেক আগে থেকে মিল এলাকায় অবৈধভাবে প্রায় ১ হাজার ১০০ পাওয়ার ক্রাশারে অবাধে আখ মাড়াই করে গুড় তৈরি হয়ে আসছে। মিল কর্তৃপক্ষ ক্রাশারে আখ মাড়াইয়ে নিরুৎসাহিত করতে লিফলেট ও মাইকিং ছাড়াও প্রায় ৯০০ চিঠি দিয়ে সতর্ক করেও কোনো লাভ হয়নি। কৃষকরা জানান,
মিলের চেয়ে অনেক বেশি দামে গুড় প্রস্তুতকারীরা জমি থেকে নিজেদের খরচে আখ কেটে নিয়ে যায়। মিল প্রতিমণ আখের মূল্য দেয় ৬১.৫০ টাকা। পক্ষান্তরে গুড় প্রস্তুতকারীরা মণপ্রতি দাম দিচ্ছেন ৮০ থেকে ৯০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি গুড় প্রায় ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও গুড় উৎপাদনকারীরা সঠিক ওজনে আখ কেনার সঙ্গে সঙ্গে দাম পরিশোধ করেন। তারা কৃষকদের অগ্রিম টাকাও দেন। অথচ সঠিক ওজন এবং আখের মূল্য বাবদ মিলের কাছে কৃষকদের পাওনা নিয়ে চাষীদের আন্দোলন করতে হয়। এসব কারণে সুগার মিলে উৎপাদিত চিনির পরিবর্তে গুড় তৈরিতে বেশি আখ ব্যবহৃত হচ্ছে।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি খন্দকার শহিদুল ইসলাম জানান, মিলের শ্রমিক-কর্মচারী সবাই চিনি শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। চরম হুমকির মুখে যে কোনো সময় দেশের চিনি কলগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তিনি দেশীয় চিনি শিল্পকে বাঁচাতে আমদানিকৃত বিদেশি চিনির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করে বাজারে দেশি চিনির মূলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করার দাবি জানান।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম মোর্তুজা জানান, চাহিদার তুলনায় দেশীয় চিনির উৎপাদন অত্যন্ত কম। এ মিলে উৎপাদিত চিনির মান আমদানিকৃত চিনির চেয়ে অনেক ভালো। বাজারে নিম্নমানের ঝকঝকে বিদেশি চিনির চাহিদা বেশি। তাই চিনি ব্যবহারকারীদের গুণগত মান সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তিনি আরো জানান, মিল এলাকায় বর্তমানে যে পরিমাণ আখ দ-ায়মান রয়েছে তাতে আরো এক মাসের বেশি মিল চলার কথা। কিন্তু কৃষকরা মিলে আখ সরবারহ না করার কারণে যে কোনো সময় মিল বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে।

নীলফামারীতে ৬০০ সেচপাম্পে সংযোগ দেয়ার পরিকল্পনা

১১.০২.০৯
ডেসটিনি ।। নীলফামারী প্রতিনিধি
নীলফামারী জেলার অনাবাদি প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমি সেচনির্ভর ইরি-বোরো চাষাবাদের আওতায় আনতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চলতি অর্থবছর প্রায় ৬০০টি সেচ পাম্পে নতুন বিদ্যুৎ লাইন সংযোগের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসব সেচপাম্প বিদ্যুতায়িত হলে এ জেলার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিকটন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে জানা গেছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (এমএস) প্রকৌশলী মইনুদ্দীন এজিএম (নিপর) কামাল হোসেন জানান, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৭৯ হাজার ১৬৩ হেক্টর জমি। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮০ মেট্রিক টন। এ চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার বাইরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভৌগোলিক এলাকা নীলফামারী সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর অনাবাদি জমি সেচনির্ভর ইরি-বোরো চাষের আওতায় আনতে প্রায় ৬০০টি সেচপাম্পে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন স্থাপনের কাজ আগামী সপ্তাহে শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আর এসব এলাকার সেচপাম্পগুলো বিদ্যুতায়িত হলে কৃষি বিভাগের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন খাদ্য বেশি উৎপাদন হবে। এছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ সেচনির্ভর বোরো চাষাবাদে সেচ সুবিধায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সতর্ক ভূমিকায় রয়েছেন। এর ফলে এবার রবি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়েছে এ জেলার কৃষককুল। নীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নে গতকাল সরেজমিন বোরো চাষি মোজাম্মেল হক (৪৫), আফজাল হোসেন (৩৪) ও মজিবর রহমান (৫৫) জানান, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজনেরও বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে এখনো কোনো কারচুপি পাওয়া যায়নি। আগামী দিনের প্রচ- খরতাপে বিদ্যুৎ সরবরাহের ভূমিকা কি-হয় তখন বুঝা যাবে। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আশঙ্কা করেন চাহিদার তুলনায় যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে তাতে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে। বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে অবশ্যই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

বেগমগঞ্জে ভেজাল সারের রমরমা ব্যবসা

১১.০২.০৯
ডেসটিনি ।। বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে খোলাবাজারে সার না থাকায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সারের সংকট প্রকট। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল সারের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চলে চলছে বোরো মৌসুম। যার কারণে এখন সারের চাহিদা বেশি। এ সুযোগে সার ব্যবসায়ীরা আসল সারের পাশাপাশি কৃষকদের ভেজাল সার ধরিয়ে দিচ্ছে। এদিকে অনেক সময় কৃষকরা প্রকৃত মূল্যে সার পায় না। সরকার সারে ভর্তুকি দেয়ার পরও এখানকার সার ডিলার ও ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমারের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি বলেন, ভেজাল সার বিক্রি প্রতিরোধে আমরা মাঝে মধ্যে অভিযান চালাই। আর বেশি দামে বিক্রির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ওই ডিলার বা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনিশ্চয়তা

১১.০২.০৯
ডেসটিনি ।। ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো আবাদ মৌসুমের শুরুতে বিদ্যুতের লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে। দিনে-রাতে টানা ৮/৯ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। বিদ্যুতের অভাবে কৃষকরা জমিতে বোরো রোপণ করতে পারছে না। আর যেসব জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে তা সেচের অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় চারা রোপা ক্ষেতে মরে যাচ্ছে। জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫৭ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে ইরি- বোরো রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়। ইতিমধ্যে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। বাকি জমিতে রোপা রোপণের জন্য কৃষকরা উঠে পড়ে লেগেছেন। কৃষি বিভাগের মতে, ১৫ মার্চ পর্যন্ত ইরি-বোরো রোপণ কাজ চলবে। ইতিমধ্যে বেশিরভাগ কৃষক জমিতে রোপা রোপণের জন্য জমি ভিজালেও পর্যাপ্ত সেচের অভাবে চারা রোপণ করতে পারছে না। গড়েয়া এলাকার কৃষক মনজুরুল আলম শাহ জানান, তিনি গত ৩ দিন ধরে জমিতে রোপা লাগানোর উদ্যোগ নিলেও বিদ্যুতের অভাবে জমিতে পানি সেচ দিতে পাচ্ছেন না। ইতিমধ্যে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-২ এর আওতায় ১ হাজার গভীর নলকূপ চালু রয়েছে। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক আরিফ আহম্মেদ জানান, ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় জেলায় সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা ৪৭ মেগাওয়াট। কিন্তু বর্তমানে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ১৮ মেগাওয়াট, তাও অনিয়মিত। প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম পাওয়ায় রেশনিং পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা অনিয়মিতভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে জেলায় ইরি-বোরো আবাদে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের মাঝে শুরু হয়েছে হাহাকার। অপরদিকে শহর এলাকাতেও বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলায় শহরবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
প্রি-পেইড কার্ডের দাম ৩ গুণ
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-২ ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকদের কাছে ৫২ টাকার প্রি-পেইড কার্ড এখন ১৪০ টাকা আদায় করছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে এ অতিরিক্ত মূল্য আদায় শুরু করেছে। এর পূর্বে ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও প্রতি প্রি- পেইড কার্ড ৫২ টাকা করে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করে। কয়েকদিন পূর্বে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা অফিসের সামনে ‘কার্ড তৈরি বন্ধ’ বলে স্টিকার সাঁটানো হয়। এরপর থেকেই কর্তৃপক্ষ রাতারাতি ১৪০ টাকা হারে আদায় শুরু করে। এ ব্যাপারে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-২-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফিরোজ হোসেইন জানান, এখন প্রতিটি কার্ড ১৪০ টাকা হিসেবে কিনে ১৪০ টাকা দরে কৃষকদের সরবরাহ করা হচ্ছে। এই অতিরিক্ত দাম আদায় করা হলেও কৃষকদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকরা দাবি জানায়, প্রি- পেইড কার্ডের দাম পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত দামের কারণে কৃষকরা জমিতে সেচ দিতে পারছে না। তাই কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

পাটগ্রামে ডিজেল সংকট

১০.০২.০৯
ডেসটিনি ।। লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় এখন সর্বত্র ডিজেলের সংকট। বোরো মৌসুমের শুরুতে ডিজেল সংকটের কারণে বোরা চাষাবাদ হুমকির মুখে পড়েছে। সরেজমিনে গত শনি ও রোববার পাটগ্রাম উপজেলার ২টি পাম্প ও ৫ ডিলারের কাছে ডিজেল না থাকার কারণে বোরো চাষিরা তার জন্য ছোট বড় ড্রাম ও জারকিন নিয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। পাম্প ও ডিপোগুলোতে ডিজেল নেই মর্মে সাইনবোর্ড ঝুলছে। ফলে পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি দফতরের ৬ হাজার ৮৫ হেক্টর বোরো চাষ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হলেও তা এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
গত শনিবার রাত ১১টায় কথা হয় পাটগ্রাম পৌরসভার চাত্রার পাড় কালীরস্থান গ্রামের কৃষক জহরুল হক এর সঙ্গে তিনি জানান এখন এমন সময় ডিজেল পাওয়া না গেলে যে বোরো ধান রোপণ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে হক ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার ফকরুল ইসলাম জানান, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহ না পাওয়ার কারণে এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে না।
পাটগ্রাম উপজেলায় ডিজেল সংকটের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজি আবু তাহেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে জানান, আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি এবং পাটগ্রামের ডিজেল সংকট ব্যাপারটি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, খুব শিগগিরই ডিজেল সবরাহ বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উত্তরাঞ্চলে ভুট্টা চাষ, অন্য ফসল উৎপাদনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

১০.০২.০৯

ডেসটিনি ।। সুমন হাসান, রাজশাহী
উত্তরাঞ্চলের চরাঞ্চলগুলোতে ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টার চাষও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই উৎপাদন ধারা অব্যাহত থাকলে ভুট্টা ভা-ার হিসেবে এ অঞ্চল সারাদেশে পরিচিতি লাভ করবে। ইতিমধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চরাঞ্চলের জমি লিজ নিয়ে ভুট্টা আবাদ শুরু করেছে। যার জন্য চরাঞ্চল এলাকার প্রায় ৮৫ হাজার হেক্টর জমি লিজ দেয়া হয়েছে বলে ভূমি বিভাগ জানায়। রাজশাহী, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় লিজ দেয়া হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টর জমি। এটি কৃষি বিভাগের জন্য সুখবর হলেও এর সঙ্গে তৈরি হয়েছে অন্য পরিস্থিতি। চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষের কারণে অন্যান্য ফসলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। ফলে এ অঞ্চলে আগামীতে ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে। অধিক মুনাফা, খাদ্য ঘাটতি ও পশুখাদ্যের ঘাটতি কমাতে ২০০৪ সাল থেকে ভুট্টা চাষের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণ দিয়ে সহায়তা করার উদ্যোগ নেয় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে গত ৫-৬ বছর বিভিন্ন ব্যবসায়ী এসব জমি লিজ নিয়ে ভুট্টা চাষ করছেন। ভুট্টা চাষাবাদে সহযোগিতা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইনরক ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থা, দেশি এনজিও ব্র্যাক এবং কয়েকটি বেসরকারি বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। উইনরক বাংলাদেশে শিশুশ্রম নিবারণ, পরিবেশ, কৃষি প্রভৃতি ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রকল্প চালালেও ভুট্টা চাষে উৎসাহিত করার প্রকল্প শুরু করে ২০০৪-এ।
স্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, চরাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভুট্টা চাষ করে কৃষকরা সাময়িক লাভবান হলেও চিরায়ত ও প্রচলিত পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষকরা যেভাবে জমির উপরিভাগ রক্ষা করে চরাঞ্চলে আবাসন তৈরি করতো, এখন অপ্রচলিত ও নিবিড় চাষাবাদের কারণে মাটির উপরিভাগ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কমে আসবে ধান চাষের জমি। বিঘিœত হবে বসতি গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। চরের ফসলের বৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। হ্রাস পাবে ফসলের উৎপাদন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চরআষাঢ়িয়াদহের গোলাম আলী বলেন, চরের জমিতে ধান, বুট, খেসারি, কাউন, ধনিয়া, মৌরি, মিষ্টিআলু, লাউ, কুমড়া, বেগুন ও কলাসহ নানা জাতের দেশি ফসল আবাদ হয়। আউশ মৌসুমে জমিতে ধান ছাড়া অন্য কোনো ফসল চাষাবাদ হয় না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার চরাঞ্চলে কয়েক হাজার একর জমি ভুট্টা চাষের জন্য লিজ নেয়া হয়েছে। পঞ্চগড় জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা অনেকে জমি লিজ নিয়ে ভুট্টার পাশাপাশি বাউকুল চাষ করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসরকারি সংস্থার এক কৃষিবিদ জানান, ভুট্টা সাধারণত পতিত বা এক ফসলি জমিতে চাষযোগ্য একটি সারখেকো ফসল। দো-ফসলি জমিতে চাষ করলে মাটির উর্বরতা কমে যাবে এবং পরে ধান কিংবা অন্য ফসল চাষ করতে গেলে উৎপাদনে বিপর্যয় দেখা দেবে। তখন প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে ফসলের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা ধরে রাখতে হবে। অপরিকল্পিতভাবে ভুট্টা চাষ করে চরাঞ্চল জমির আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। কারণ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে রাসায়নিক কীটনাশক। ফলে নষ্ট হচ্ছে জমির স্বাভাবিক উর্বরতা। এ ছাড়াও অধিক কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ভুট্টা গাছে যখন ফুল আসে তখন ওই ফুলে মধু আহরণের জন্য বসা প্রজাপতি, মথ, ফড়িং প্রভৃতি পতঙ্গ মারা যায়। এসব পতঙ্গের অভাবে ওই এলাকায় লাউ, কুমড়া ও নানা জাতের শাকসবজির পরাগায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের চরাঞ্চলে এক ও দো-ফসলি জমির পরিমাণ প্রায় ২ লাখ হেক্টর। এর শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ জমিতে বিভিন্ন ধরনের দেশি জাতের ফসল উৎপাদিত হয়ে থাকে। অথচ যে জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয় সে জমিতে ধান কিংবা প্রচলিত ফসল ভালো হয় না। কারণ ভুট্টা চাষে বেশি পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহƒত হয় বলে জমির উর্বরতা কমে যায়।

ভর্তুকি মূল্যের সার অবিক্রীত নিম্নমানের সারের ফাঁদে কৃষক

১০.০২.০৯

শফিকুল ইসলাম
ভারতীয় নিম্নমানের সারের ফাঁদে আটকা পড়েছে দেশের কৃষক। সরকার ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সব ধরনের সারে অর্ধেক ভর্তুকি দিলেও গত ১ মাসে চাহিদার ৩ ভাগের ১ ভাগও কৃষক পর্যায়ে বিক্রি হয়নি। ভারতের নিম্নমানের কমদামি সার দেশের বাজারে ও কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা, সার ডিলার, বিএডিসি ও বিসিআইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্নমানের সারে ফসলি মাটির দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করবে। আশঙ্কাজনকহারে কমাবে কৃষি উৎপাদনও। তাদের মতে, সম্প্রতি আলুতে সৃষ্ট রোগের পেছনে বীজ-আবহাওয়ার পাশাপাশি ভেজাল সারের ভূমিকাও রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের সারের চড়াদামের সুযোগ নিয়ে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের সার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে চোরাই পথে আমদানি করে তা সারা দেশে বাজারজাত করছে। তারা ভারতের এমওপি ও টিএসপির নামে দানাদার এসএসপির ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ডিএপির নামে ভারতের টাটা কোম্পানির এনপিকে বিক্রি করছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। পক্ষান্তরে, সরকারের ভর্তুকি দামের টিএসপির প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়, এমওপি ১৭৫০ টাকায় এবং ডিএপি ২২৫০ টাকায়। তারা বলছেন, ভারতের ভেজাল সার বিক্রিতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিসিআইসির অনুমোদিত সিলসংবলিত ব্যাগও। এ ছাড়া ভেজাল সার বিক্রিতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও সীমান্ত এলাকাসহ সারাদেশের কৃষি উৎপাদন বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। ভেজাল সার দেশে ঢুকলেও তা বন্ধে সরকারের তেমন কোনো পদক্ষেপও নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, নিম্নমানের ভারতীয় সার আসা বন্ধে সীমান্ত এলাকার জেলাগুলোর সার বীজ মনিটরিং কমিটিকে সার্বক্ষণিক তদারকি করতে বলা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকের কাছে গিয়ে ভেজাল সার ব্যবহার থেকে চাষিদের বিরত থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন।
এদিকে রাজশাহীর মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, নওগাঁ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সংগৃহীত ডিএপি সার পরীক্ষার পর তাতে ফসফেটের পরিমাণ মেলে ১৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। অথচ যার আদর্শমান ৪৬ শতাংশ। এমওপিতে পটাশের আদর্শমান ৬০ শতাংশ হলেও পাওয়া যায় ৩৯ শতাংশ এবং টিএসপিতে ফসফেটের আদর্শমান ৬০ শতাংশ হলেও পাওয়া যায় ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। কর্মকর্তারা জানান, ভারতের অধিকাংশ সারেই মাত্রাতিরিক্ত লবণ, ইট, পাথর কুচি ও রেড অক্সাইড পাওয়া গেছে।
কৃষি মন্ত্রণায়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, কৃষির ক্ষতি রোধকল্পে এরই মধ্যে নওগাঁ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ সীমান্ত এলাকায় বেশ কিছু ভারতীয় নিম্নমানের সার আটক করা হয়েছে। চোরাই পথে আসা সারের আমদানি বন্ধেও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, কৃষকরা সচেতন হয়ে ভেজাল সার না কিনলে অসাধু ব্যবসায়ীরা সার আমদানি ও বিক্রি বন্ধ করবে। বিসিআইসি, বিএডিসি ও বিএফএ সূত্র জানায়, গত ২ মাসে বরাদ্দকৃত সার থেকে দেশের ৫০৪৮ ডিলারের কাছে মজুদ পড়ে গেছে প্রায় ২ লাখ টন ইউরিয়া, ৫০ হাজার টন টিএসপি, ৩০ হাজার টন এমওপি ও ৮ হাজার টন ডিএপি সার।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন আহমেদ জানান, ভারতের নকল সার বাজারে ঢুকলে সরকারি-বেসরকারিভাবে আমদানিকৃত উন্নতমানের সার অবিক্রীত থাকবে। ফসলেরও মারাত্মক ক্ষতি হবে। সার বিক্রি কমে গেলে ও মোটা অঙ্কের পুঁজিতে লাভ না এলে আমদানিকারকরা ব্যবসায় আগ্রহ হারাবে।

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor