Thursday, June 11, 2009

এবার বাজারবান্ধব বাজেট চাই

ইত্তফোক-০৬.০৫.০৯
এবার বাজারবান্ধব বাজেট চাই
ড. শামসুল আলম মোহন

বাজার অর্থনীতিতেও বার্ষিক, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করা হয় না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে এবং একটি বাস্তবায়নযোগ্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত থাকতে হয়, যার ভিত্তিতে মধ্যমেয়াদী এবং বার্ষিক পরিকল্পনার ছক আঁকতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, দাতাদের পরামর্শে, পাঁচ বছর মেয়াদী লক্ষ্য মাত্রার ভিত্তিতে যে বাৎসরিক পরিকল্পনা হত তা ছেড়ে দিয়ে বিগত জোট সরকারের আমল থেকে পিআরএসপি নামীয় দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির নামে বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন শুরু করেছিলাম। আমার মনে হয়, জাতিগতভাবে এতে আমরা বড় কিছু অর্জনে লক্ষ্যচ্যুত হয়েছি। আমাদের উন্নয়ন প্রয়াস সবকিছু খুবই স্বল্পমেয়াদী কিংবা এডহক ভিত্তিতে চলছিল। উন্নয়নকে বেগবান করতে জাতির একটি স্বপ্ন চাই। স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা চাই। তেমন একটি প্রেক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৮-এ পেশ করা হয়েছে। ২০২১ পর্যন্ত দিনবদল নামীয় যে রূপকল্প (ভিশন) প্রণীত হয়েছে যে সনদে, সেটাই হতে হবে আগামী পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনার উন্নয়ন ও বাজেট যোজনার ভিত্তি। ২০২১ সাল পর্যন্ত সে প্রেক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাৎসরিক পরিকল্পনায় থাকবে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি। আমরা যখন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পথ ছাড়লাম তখন থেকে পরিকল্পনা কমিশনও গুরুত্ব হারিয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল যেন ফাইন্যান্স মিনিষ্ট্রির রুটিন একাউন্টিং দলিল প্রণয়ন। এরকম কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এক সময় বাজেট আসছে বলে, নতুন ট্যাক্সও আসছে, বাড়বে জিনিসপত্রের দর-দাম-বাজেট ঘোষণার প্রাক্কালে জনগণ এমন ভীতিতে আক্রান্ত হত। এরকম অবস্থা থেকে আমাদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। বাজেট হবে প্রেক্ষিত পরিকল্পনার রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মসূচির সুনির্দিষ্ট ঘোষণা। থাকবে দারিদ্র্য বিমোচনের কর্মসূচি, শ্রেণীতে শ্রেণীতে ও অঞ্চলে অঞ্চলে আয় বৈষম্য হ্রাসের স্পষ্ট নির্দেশনা। বাজেট একাউন্টিং দলিল না হয়ে সে কারণেই হতে হবে রাজনৈতিক লক্ষ্যাদর্শ বাস্তবায়নের, জাতিকে উজ্জীবিত করার দলিল। সে কারণেই ‘পরিকল্পনা কমিশন’কে দেখতে চাই একটি শক্তিশালী, প্রফেশনালদের সমন্বয়ে গঠিত ‘জাতির পরিকল্পনার থিংকট্যাঙ্ক’ হিসেবে, আমলা পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে নয়। আশা করি সরকার পরিকল্পনা কমিশনকে শক্তিশালীকরণে দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন।
জাতীয় পরিকল্পনা হওয়া উচিত একটি সমন্বিত পরিকল্পনা অর্থাৎ যতটি উপজেলা তার প্রতিটিতেই থাকবে বাৎসরিক পরিকল্পনা, জাতীয় দলিলটি হবে সে সবের একটি সমন্বিত চিত্র। এমন সমন্বিত জাতীয় পরিকল্পনাই জাতির সঠিক ক্ষমতা ও সম্ভাব্য কর্মযজ্ঞের একটি প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে পারে। বাৎসরিক যে বাজেট দলিল প্রণীত হচ্ছিল তা উপর থেকে চাপিয়ে দেয়ায় বলা যায় একটি সুপারফিসিয়েল দলিল। এর থেকেও আমাদের বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। দেশের প্রতিটি এলাকায় কর্মযজ্ঞের পরিকল্পনা ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা না গেলে উন্নয়ন হয় ভারসাম্যহীন কিংবা উপর থেকে চাপিয়ে দেয়ায় যা যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানে হয়তো তাই গড়ে উঠে, শেষ পর্যন্ত বহু প্রকল্পই হয় অপচয়ের শামিল। আমাদের দেশে প্রকল্প অপচয়ের উদাহরণ অসংখ্য।
আসন্ন বার্ষিক বাজেটটি (যা জুন মাসের প্রথমার্ধে ঘোষিত হবার কথা রয়েছে) আমরা চাই দেশের সর্বাধিক কল্যাণে হোক একটি বাজারবান্ধব দলিল অর্থাৎ উৎপাদক কিংবা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সবার জন্যই এটি যেন সমান সুযোগের সৃষ্টি করতে পারে, কাউকে সমর্থন করতে গিয়ে অন্য কোন উৎপাদক গোষ্ঠী যেন অতিরিক্ত খরচের সম্মুখিন না হয়। আমাদের ঘাটতি বাজেট প্রণয়ন করার প্রবণতা বেশ জোরদার। বিগত কয়েক বছর যাবৎ আমাদের ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ বাড়ছেই। এর কুফলটা পড়ে ব্যক্তিখাতের উৎপাদক শ্রেণীর উপর। কেননা, সরকারের ঘাটতি বাজেটের প্রধান উৎস ব্যাংক ঋণ অথবা অতিরিক্ত মুদ্রা ছাপানো। সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে অত্যধিক ঋণ গ্রহণ করলে ব্যক্তিখাতে ব্যাংক প্রদেয় ঋণ কমতে থাকে (অর্থনীতির ভাষায় ক্রাউডিং আউট)। সরকারি ঋণের অত্যধিক চাহিদার ফলে, সুদের হার বেড়ে গিয়েও, ব্যক্তি বিনিয়োগের খরচ বাড়িয়ে দেয়। সরকারি ব্যয়ের অদক্ষতা সর্বজন বিদিত। সরকারি ঘাটতি বাজেটের অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেতে পারে। এসব কারণে, যুদ্ধকালিন সময়, প্রাকৃতিক কারণে বিপর্যয় মোকাবেলা ব্যতীত ঘাটতি বাজেটকে কখনেই বাজার বান্ধব বাজেট ভাবা যায় না। আমরা সর্বান্তকরণে চাইবো, একটি বিশাল ঘাটতি বাজেট না হোক। আমরা যেন প্রায় ব্যালান্সড বাজেট প্রণয়নে সক্ষম হই। বিশাল আকারের ঘাটতি বাজেট আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য আত্মপরাজয়ী। যেখানে বাৎসরিক উন্নয়ন বাজেটের মাত্র ৪০-৪৫% শতাংশ বাস্তবায়নে আমরা সক্ষম হই সেখানে বাজেটের হিসেবে বড় বড় অংক দেখিয়ে লাভ কি? ষাট হাজার কোটি টাকা আমাদের রাজস্ব আয়, অথচ বাজেট করা হয় এক লক্ষ হাজার কোটি টাকার উপর, এটা অনেকটা পরিকল্পনাহীনতার নামান্তর।

একটা সাধারণ মাইন্ড-সেট এরকম যে, ভর্তুকি শুনলেই আমরা খুব খুশি হই। ভর্তুকির সুবিধা সরাসরি কতটা কৃষকের হাতে পৌঁছে, এসব ক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতির কাহিনী রয়েছে। ভর্তুকি মানে একখাতের টাকা অন্য খাতে ব্যয় করা। ভর্তুকির মাধ্যমে কৃষক উপকৃত হলে দরিদ্রের নিকট আয় হস্তান্তরে হয়তো একটা ভূমিকা থাকে। ভর্তুকি দেয়া উপকরণ যথা সার, ডিজেল বর্ডারের ওপাড়ের তুলনায় অনেক সস্তা হয়ে গেলে, স্মাগলিং এর ব্যাপকতা বেড়ে যেতে পারে। পণ্যের বাজার দাম, পণ্যের প্রকৃত মূল্যকে প্রতিফলিত না করলে, সেই পণ্যের ব্যবহারে অপচয়, অত্যধিক ব্যবহার কিংবা চোরাচালানকে উৎসাহিত করতেই পারে। এসব কারণে ভর্তুকি দেয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক এবং লাভ লোকসানের হিসেবটা খুব ভালভাবেই করতে হবে। ঢালাও ভর্তুকি অপচয়ের শামিল। ভর্তুকি দেয়া কিংবা মূল্য সমর্থন দেয়ার ক্ষেত্রে যত সমাদর কেবল ধান ফসলই পেয়েছে। সে কারণেই আমাদের শস্যখাত বিবেচনায়, আমাদের কৃষিকে বলা যায়, ‘মনো-ক্রপ’ এগ্রিকালচার বা প্রায় এক ফসলের প্রাধান্যের কৃষি। দেশের ৭৬ শতাংশ জমিই ধান চাষে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অন্যান্য সব ফসলই প্রায় অবহেলিত। মশলা ফসল, তেলবীজ, ডাল ফসলে আমাদের কোন উন্নয়ন অগ্রগতি নেই বললেই চলে। আমাদের পেঁয়াজ, রসুন, আদা এখনো খুবই ক্ষুদ্রাকৃতি আকারের এবং বিঘাপ্রতি ফলনও সামান্য। এসব ফসলে আমরা প্রায় পুরোটাই আমদানী নির্ভর। গবেষণার ক্ষেত্রে এসব গুরুত্বপূর্ণ ফসল এখনো খুবই অবহেলিত। ভর্তুকি ও মূল্য সমর্থন দিয়ে আমরা আমাদের কৃষিকে বাস্তবে ‘ধানের কৃষি’ করে ফেলেছি। সর্বতোভাবে কৃষিকে বহুমুখি করার প্রণোদনা থাকতে হবে বাজেট পরিকল্পনায়।

আসন্ন বাজেটে কৃষি গবেষণা ক্ষেত্রে, বিশেষভাবে বীজ উন্নয়ন ও উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি, জৈব প্রযুক্তি, টিস্যু কালচার ইত্যাদি বিষয়ে বরাদ্দ বৃদ্ধি ও বিশেষ থোক বরাদ্দ থাকা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগ উচ্চ প্রতিদান দিয়ে থাকে। গবেষণায় সফলভাবে বিনিয়োগে ১ টাকা ব্যয়ে ১০ টাকার প্রতিদান পাওয়া যায়। কৃষি গবেষণার জন্য ‘নার্স’ ভুক্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোরদার করা প্রয়োজন। পূর্বে কৃষি গবেষণায় থোক বরাদ্দ অব্যবহৃত কেন থেকেছে তা অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ হওয়া প্রয়োজন। গবেষণা কাজের মূল্যায়ন ও মনিটরিং এর জন্য কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। মূল্যায়ন ব্যবস্থা জবাবদিহিতা তৈরী করে। কৃষি জমিও খুব আশংকাজনকহারে কমছে। জনসংখ্যা কমছে বলে আমরা খুব তৃপ্তি অনুভব করতাম, অথচ বাংলাদেশে জনসংখ্যা এখনো যে অপরিকল্পিতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামী এক দশকেই দেশ একটি ভয়ংকর জনসংখ্যা বিস্ফোরণের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। এতদবিষয়ে এখনই সরকারকে আরো সতর্ক এবং কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। চীন, সিকি শতাব্দী পূর্ব থেকেই খুব কঠোর নিয়ম-কানুনের মধ্য দিয়ে এক দম্পত্তি এক সন্তান নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে। চীনের অবস্থার চেয়ে আমাদের জনসংখ্যা পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। অথচ আমাদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ খুব জোরালো নয় এবং বলা যায় খুবই বিচ্ছিন্ন ও হতাশাব্যঞ্জক।
দেশীয় শিল্প-কারখানা রক্ষার নামে কর কাঠামোর মাধ্যমে কোন অদক্ষতাকে লালন ও পোষণের ব্যবস্থা যাতে না করি। লোকসান হতে হতে বন্ধ হয়ে যাওয়া কল-কারখানা আমরা পুনরায় চালু করার কথা বলছি কার স্বার্থে? এসবের লোকসানের টাকা কার পকেট থেকে আসবে? দেশীয় শিল্পের নামে অত্যধিক চড়া দামে আমাদেরকে কেন চিনি খেতে হবে? দেশীয় শিল্প এমনভাবেই রক্ষা করতে হবে যাতে; আমদানী পণ্যের চেয়েও কম দামে ভাল মানের পণ্য ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে পারে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা করতেই হবে। শিল্পায়ন ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের এটাই হবে সর্বোত্তম উপায়। আমদানী যতটা সম্ভব উন্মুক্ত রাখুন। আমদানীর ক্ষেত্রে মূলধন যন্ত্রপাতি প্রযুক্তিকে যতটা সম্ভব সহজলভ্য করে দিন। এতে দেশে শিল্পায়নের গতি বৃদ্ধি পাবে। দেশে তৈরী হয় না এমন কৃষি যন্ত্রপাতি, প্রক্রিয়াজাতকরণ যন্ত্রপাতি নিম্নতম ‘আমদানী করে দেশে আসতে দিন। সব মিলিয়ে বিশ্ব বাজার ব্যবস্থায় আমাদের সংযুক্তিকে ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে। আন্তঃ দেশীয়, আন্তঃ মহাদেশীয় যোগাযোগ, স্থলপথে, আকাশপথে, নৌপথে যতশীঘ্র সম্ভব উন্মুক্ত করে পণ্য চলাচলকে অবাধ করে দেয়ার পদক্ষেপ দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। প্রতিযোগিতায় আমাদের উৎপাদক, ব্যবসায়ীরা, আরো দক্ষ হয়ে উঠবে। দক্ষতার সংগে পণ্য উৎপাদিত না হলে ভোক্তা কখনো কম দামে পণ্য পেতে পারে না।
আমাদের দেশে আয়-বৈষম্য এখন উৎকটভাবে দৃষ্টিকটূ। আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে বাজেটে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চাই। যেসব ব্যাংকিং বা শিল্পগোষ্ঠী সমাজ কল্যাণে, যেমন দরিদ্রের জন্য বৃত্তি, হাসপাতালে অনুদান, পাবলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষণা মূলধন প্রদান ইত্যাদিতে মুনাফার পঞ্চাশ শতাংশের অধিক ব্যয় করে, সে সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে এনে উৎসাহ প্রদান করা যেতে পারে। এসব ব্যয়ের সবটাই কর অবকাশের আওতায় আসতে পারে।

সর্বোপরি জনকল্যাণমুখি এই সরকারের কাছে আমাদের প্রস্তাবনা থাকবে, দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক নিরাপত্তা জাল আরো বিস্তৃত করতে হবে, যেমন বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, সন্তান-সন্ততিহীন দুস্থ পরিবারের জন্য ভাতা ইত্যাদি। এক সন্তানের জন্য দরিদ্র পরিবার ভিত্তিক মাতৃত্বকালীন ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে প্রতিটি উপজেলায় এর বিস্তৃতি ঘটাতে হবে। স্পেনীয় সরকারের সহায়তায় জনাব এ,এইচ,এম নোমান সাহেবের এনজিও ‘ডরপ’ এক্ষেত্রে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চমৎকার দৃষ্টান্ত রেখেছেন। সেই অভিজ্ঞতাকে গ্রহণ করে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৪ হাজার ইউনিয়নের প্রতিটিতে মাত্র ১৫ জন করে ষাট হাজার গর্ভবতী দরিদ্র মাকে বিগত অর্থবছরে ২৪ মাসের জন্য প্রতিমাসে ৩০০ টাকা করে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা রেখেছিলেন, যা সন্তান ধারণ ও লালন পালনে রাষ্ট্রের এই সহায়তা যথেষ্ট প্রভাব রেখেছে। এই কর্মসূচিটি সারা দেশে বিস্তৃত হওয়া প্রয়োজন, মাসিক ভাতার পরিমাণকেও অবশ্যই দ্বিগুণ করতে হবে। সর্বতোভাবে বাজেটের দর্শন স্থিরকৃত হবে দারিদ্র্য বিমোচনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে এবং বাস্তবায়নে এটি হতে হবে সার্বিকভাবে বাজার বান্ধব। সমষ্টিকে নিয়ে সব ব্যক্তি উদ্যোগ কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনই হবে বাজেটের শেষ কথা। প্রবৃদ্ধি হলেই খাদ্যসহ জীবনের সব নিরাপত্তাই অর্জিত হতে পারে। সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হলে এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় যথাযথ এগিয়ে যেতে পারলে বর্তমানের ৪০ শতাংশ বেকারত্বের হার ২০২১ সালে অবশ্যই ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। বাংলাদেশ পরিণত হবে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে।


[লেখক: কৃষি অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ ও প্রফেসর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়]

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।