Wednesday, September 17, 2008

সব ব্যাংকের জন্য কৃষিঋণ দেয়া বাধ্যতামূলক

১৭.০৯.০৮
।।ডেসটিনি।। মাসুদ শায়ান

সরকারি বেসরকারি বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য কৃষিঋণ দান বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খাদ্য সংকট মোকাবিলায় উৎপাদন বাড়ানো এবং সারা বছর কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও কৃষিঋণ মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান নজরুল হুদা এসব কথা বলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হলেও কৃষিখাতে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ছে না। যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে
আছে। অথচ এ খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো এখন খুবই জরুরি। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট এবং খাদ্য পণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তবে কৃষিঋণ বিতরণে ব্যাংকগুলোর জন্য কোনো লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হচ্ছে না। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে। ব্যাংকগুলো যাতে যুক্তিসঙ্গত পরিমাণে কৃষিঋণ বিতরণ করে তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের বিপরীতে পুনঃ অর্থায়নের বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক বিবেচনা করবে।
নজরুল হুদা বলেন, আমাদের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে এটা সুস্পট যে, কৃষিখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। ১৯৯০ সালে আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় ডিরেক্টেড লেন্ডিং প্রথা বিলোপ হওয়ার পর কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ ব্যাংকগুলোর ইচ্ছাধীন হয়ে পড়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যাংকগুলোর জন্য কৃষিঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ২০০৭-০৮ অর্থবছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছর কৃষিখাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৩০৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এবার ব্যাংকগুলোর জন্য কোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে মোট লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করে থাকে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। এ দুটি ব্যাংকের ডিপোজিট বেজ খুব কম, তাই এ দুটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, ‘রিভলবিং কোর্প ক্রেডিট লিমিট’ বা আবর্তক শস্যঋণ সীমা প্রচলন করা হবে। আমাদের দেশের কৃষকরা বিভিন্ন শস্য উৎপাদনের জন্য মূলত টার্ম ঋণ গ্রহণ করে থাকেন। উৎপাদন শেষ হলে ঋণ পরিশোধ করার পর তাঁকে পুনরায় ঋণের জন্য আবেদন করতে হয়। এজন্য তাঁকে বিভিন্নভাবে দালালের দ্বারস্ত হতে হয়। এক্ষেত্রে ৩ বছরের জন্য রিভলবিং ক্রেডিট লিমিট বা আবর্তক শস্যঋণ সীমা প্রচলন করা হবে। এতে কোনো কৃষকের ঋণ পরিশোধ হলে ঋণ এডজাস্টমেন্ট সাপেক্ষে অটোমেটিক রিসিডিউলের ব্যবস্থা থাকবে। তিনি বলেন, দেশে বর্গাচাষির সংখ্যা প্রচুর, অথচ তারা পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা পান না। এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংক বর্গাচাষিদের ঋণ বিতরণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। এতে বর্গাচাষিরা যাতে জামানতবিহীন ঋণসুবিধা পান তা নিশ্চিত করা হবে। সেই সঙ্গে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের ঋণপ্রাপ্তির বিষয়টিও নিশ্চিত করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর বলেন, যেসব ব্যাংকের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা নেই তারা এনজিওর মাধ্যমে ঋণ বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের দেশি-বিদেশি সরকারি বেসরকারি ৪৮টি ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ করতে বাধ্য হবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor