Thursday, January 29, 2009

সার ও জ্বালানি তেলের দাম কমলেও বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত কৃষক

ডেসটিনি ।। মাসুদ পারভেজ, সিরাজগঞ্জ

সরকারি ঘোষণায় জ্বালানি তেল ও সারের দাম কম, তারপরও সিরাজগঞ্জ জেলার কৃষকেরা বৈরী আবহাওয়ার কারণে আসন্ন বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত। দীর্ঘস্থায়ী ঘন কুয়াশা, তাপমাত্রা বৃদ্ধি না পাওয়ায় বোরো আবাদে ক্ষতিকর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বীজতলা লালচে হয়ে যাচ্ছে। চারাও বৃদ্ধি পাচ্ছে না সঠিকভাবে। কোথাও কোথাও চারা পচে যাচ্ছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ বছর ১ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আকস্মিকভাবে জ্বালানি তেল ও সারের মূল্য কমে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বোরো আবাদের চাষ বাড়বে বলে তাদের ধারণা ছিল। কিন্তু বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বোরো আবাদ এবার ব্যাহত হবে। তাদের মতে সাধারণত প্রতি বছর শীতকালের চলতি মৌসুমে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা ২/১ দিন বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এ বছরই এর ব্যতিক্রম। বৃষ্টি যে হবে তারও কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। মৌসুমের এ সময় বৃষ্টিপাত হলে বোরো আবাদের উপযোগী পরিবেশ দ্রুত সৃষ্টি হয়। তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে ধানের চারা দ্রুত সবুজবর্ণ ধারণ করে এবং সতেজ হয়। কিন্তু বর্তমানে জেলায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই ঘন কুয়াশার চাদর পরতে শুরু করে, যা ভেত করে সকাল ১০টায়ও সূর্যের দেখা মেলে না। দুপুরে খানিকটা সূর্য দেখা গেলেও প্রকৃতিতে তাপ মেলে অপর্যাপ্ত। বিরূপ এ আবহাওয়ার কারণে অনেক কৃষক বোরো ধানের চারা লাগাতে পারছে না। এ কারণে এ বছর বোরো আবাদ বিলম্বিত হচ্ছে। এতে করে ফলনও হবে কম।
তবে কুয়াশা কেটে গেলে কৃষকরা বোরো চাষে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এ জন্য তারা আগাম প্রস্তুতি হিসেবে জমিতে পানি ও চাষ দিয়ে প্রাথমিকভাবে তা তৈরি করে রাখছে। বীজতলা মরে যাওয়ার কারণে হঠাৎ করে এ দামও উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। কয়েকদিন আগেও প্রতিপণ বীজতলার দাম ছিল ১৫০ টাকা, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮০ টাকায়। এ দামও আরো বাড়তে পারে বলে কৃষকরা আশঙ্কা করছে।
দীর্ঘস্থায়ী ঘন কুয়াশা এবং সূর্য ঢেকে থাকায় আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও অন্যান্য সবজিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবজির ফুল পড়ে যাওয়ায় ফল ধরছে না। কৃষি বিভাগের মতে এসব জমিতে ৭/৮ দিন পর পর পেনকোজেন ছিটালে এ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কৃষকদের এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে কৃষকরা এ ব্যাপারে সাড়া না দেয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। এদিকে দীর্ঘস্থায়ী কুয়াশা এবং তাপমাত্রা কম থাকায় এবার গমের ফলন আশাতীত হবে বলে কৃষি বিভাগ জানায়।
এদিকে সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমালেও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিকরা এর সুফল ভোগ করতে পারছে না। কৃষকরা অভিযোগ করে জানান, গত বছর সেচ মালিকরা প্রতি শতক জমির সেচ বাবদ ৫৫ টাকা করে নিয়েছিল। কিন্তু এ বছর জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমলেও সেচের দাম আগের ৫৫ টাকাই রয়েছে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor