Sunday, September 7, 2008

খাদ্য নিরাপত্তায় প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ

০৮.০৯.০৮
।।ইত্তেফাক।। মাটি ও মানুষের কৃষি

‘খাদ্য’ মানুষের প্রধানতম মৌলিক চাহিদা। পৃথিবীর শুরু থেকে মানুষ খাদ্যের অন্বেষণে ছুটেছে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এই খাদ্যের জন্য। ক্রমান্বয়ে কৃষি জায়গা করে নিল সারা বিশ্বে। কিন্তু লোকসংখ্যার তুলনায় কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা প্রথম থেকে অপ্রতুল থাকার কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে হয়েছে খাদ্য রায়ট। বেশিদিন আগের কথা নয়Ñ সংবাদ সংস্থা এএফপি এপ্রিল, ২০০৮ এর ১ম সপ্তাহে জানিয়েছে বিশ্বে ৩৩টিরও বেশি দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে যার ফলে বিরাজ করছে গণ-অসšে-াষ। ইতোমধ্যে হাইতিতে খাদ্যের জন্য দাঙ্গা হয়ে ১০জন মারা গেছে। মিশরসহ কয়েকটি দেশের সরকারি খাদ্য গুদামে হয়েছে লুটপাট।

বিশ্বের ৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও আছে। নীতি নির্ধারক ও জনগণের মধ্যে একটা অস্থিরতা বিরাজ করছে বর্তমানে। খাদ্য নিরাপত্তার সাথে জড়িত রয়েছে দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও মানুষের আয় বৃদ্ধির বিভিন্ন প্রশ্ন। গবেষক জাফর আহমেদ চৌধুরী এ সব বিষয়গুলোকে বিভিন্ন আঙ্গিকে ও সমন্বিতভাবে সময়োপযোগী আলোচনা ও পর্যালোচনা করে একটি রূপরেখা তুলে ধরেছেন তাঁর “কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচন” গ্রন্থটিতে।

এশিয়ার প্রেক্ষিত এবং বাংলাদেশের হালচিত্র যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব; কৃষি ও অকৃষি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশজ উৎপাদন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় এবং কী কী ধরনের সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব সবগুলো বিষয়ই স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। গ্রন্থটির প্রতিটি অধ্যায়ে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে লেখক বাংলাদেশের কৃষি খাতের সম্ভবনা, সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার বিভিন্ন কৌশল উপস্থাপন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের কলা-কৌশল সুবিন্যা¯-ভাবে উপস্থাপন করেছেন।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বিভিন্ন পরিকল্পনা দলিলে কৃষি খাতের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিনিয়োগ; প্রথম দারিদ্র্য নিরসন কৌশলপত্রে কৌশলসমূহ; বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে কৃষি খাতের বরাদ্দ এবং রাজস্ব বাজেটে কৃষি খাতে বিশেষ কর্মসূচি ও ভর্তুকিÑ ইত্যাদি বিষয় বইটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি খাতের বর্তমান অবস্থা, অধিক খাদ্য উৎপাদন, কৃষি খাতে সেচ সুবিধা, মাছচাষ ও পশুপালন এবং বনজ সম্পদ বিশদভাবে আলোচনা করেছেন লেখক। কৃষিকে সমর্থন ও কৃষি থেকে অধিকতর সুফল পেতে কার্যকর পল¬ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, পল¬ী অবকাঠামো ও পল¬ী উন্নয়নের বিভিন্ন দিক গ্রন্থটিতে আলোচিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কৃষি খাতে কী কী করা যায় তার আলোচনাও রয়েছে। বিভিন্নমুখী আলোচনার মাধ্যমে লেখকের কাছে প্রতিভাত হয়েছে যে, ঘনবসতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের সম্ভবনা খুবই উজ্জ্বল। প্রয়োজন নিবেদিত উদ্যোগ এবং কার্যকর কাঠামো।

সা¤প্রতিক তথ্যসমৃদ্ধ গবেষণা গ্রন্থÑ “কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্য বিমোচন” শুধুমাত্র কৃষি গবেষক, অর্থনীতিবিদ গোষ্ঠীর কাছে সুপাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হবে এমন নয় বরং সাধারণ পাঠকের কাছেও গ্রন্থটি বহুল সামাদৃত হবে বলে আশা করি। - সাহারা তুষার‘খাদ্য’ মানুষের প্রধানতম মৌলিক চাহিদা। পৃথিবীর শুরু থেকে মানুষ খাদ্যের অন্বেষণে ছুটেছে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে এই খাদ্যের জন্য। ক্রমান্বয়ে কৃষি জায়গা করে নিল সারা বিশ্বে। কিন্তু লোকসংখ্যার তুলনায় কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা প্রথম থেকে অপ্রতুল থাকার কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে হয়েছে খাদ্য রায়ট। বেশিদিন আগের কথা নয়Ñ সংবাদ সংস্থা এএফপি এপ্রিল, ২০০৮ এর ১ম সপ্তাহে জানিয়েছে বিশ্বে ৩৩টিরও বেশি দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে যার ফলে বিরাজ করছে গণ-অসšে-াষ। ইতোমধ্যে হাইতিতে খাদ্যের জন্য দাঙ্গা হয়ে ১০জন মারা গেছে। মিশরসহ কয়েকটি দেশের সরকারি খাদ্য গুদামে হয়েছে লুটপাট।

বিশ্বের ৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও আছে। নীতি নির্ধারক ও জনগণের মধ্যে একটা অস্থিরতা বিরাজ করছে বর্তমানে। খাদ্য নিরাপত্তার সাথে জড়িত রয়েছে দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও মানুষের আয় বৃদ্ধির বিভিন্ন প্রশ্ন। গবেষক জাফর আহমেদ চৌধুরী এ সব বিষয়গুলোকে বিভিন্ন আঙ্গিকে ও সমন্বিতভাবে সময়োপযোগী আলোচনা ও পর্যালোচনা করে একটি রূপরেখা তুলে ধরেছেন তাঁর “কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য বিমোচন” গ্রন্থটিতে।

এশিয়ার প্রেক্ষিত এবং বাংলাদেশের হালচিত্র যৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব; কৃষি ও অকৃষি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশজ উৎপাদন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় এবং কী কী ধরনের সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব সবগুলো বিষয়ই স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। গ্রন্থটির প্রতিটি অধ্যায়ে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে লেখক বাংলাদেশের কৃষি খাতের সম্ভবনা, সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার বিভিন্ন কৌশল উপস্থাপন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের কলা-কৌশল সুবিন্যা¯-ভাবে উপস্থাপন করেছেন।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে বিভিন্ন পরিকল্পনা দলিলে কৃষি খাতের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও বিনিয়োগ; প্রথম দারিদ্র্য নিরসন কৌশলপত্রে কৌশলসমূহ; বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিগুলোতে কৃষি খাতের বরাদ্দ এবং রাজস্ব বাজেটে কৃষি খাতে বিশেষ কর্মসূচি ও ভর্তুকিÑ ইত্যাদি বিষয় বইটিতে সন্নিবেশিত হয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি খাতের বর্তমান অবস্থা, অধিক খাদ্য উৎপাদন, কৃষি খাতে সেচ সুবিধা, মাছচাষ ও পশুপালন এবং বনজ সম্পদ বিশদভাবে আলোচনা করেছেন লেখক। কৃষিকে সমর্থন ও কৃষি থেকে অধিকতর সুফল পেতে কার্যকর পল¬ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, পল¬ী অবকাঠামো ও পল¬ী উন্নয়নের বিভিন্ন দিক গ্রন্থটিতে আলোচিত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কৃষি খাতে কী কী করা যায় তার আলোচনাও রয়েছে। বিভিন্নমুখী আলোচনার মাধ্যমে লেখকের কাছে প্রতিভাত হয়েছে যে, ঘনবসতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের সম্ভবনা খুবই উজ্জ্বল। প্রয়োজন নিবেদিত উদ্যোগ এবং কার্যকর কাঠামো।

সা¤প্রতিক তথ্যসমৃদ্ধ গবেষণা গ্রন্থÑ “কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্য বিমোচন” শুধুমাত্র কৃষি গবেষক, অর্থনীতিবিদ গোষ্ঠীর কাছে সুপাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হবে এমন নয় বরং সাধারণ পাঠকের কাছেও গ্রন্থটি বহুল সামাদৃত হবে বলে আশা করি।

- সাহারা তুষার

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor