Wednesday, September 10, 2008

লালমনিরহাটের ৫ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত শত শত একরের আমন চারা বিনষ্ট

১০.০৯.০৮
।।ডেসটিনি।। লালমনিরহাট প্রতিনিধি

দফায় দফায় বন্যা আর ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাটের কুলাঘাট এলাকার ৫টি গ্রাম প্লাবিত ও শত শত একর জমির আমন ধানের চারা বিনষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি বন্যার পানিতে লালমনিরহাট জেলা শহরের একমাত্র যোগাযোগে ফুলবাড়ী রাস্তাটির ১৫০ মিটার ভেঙে যাওয়ায় কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার সঙ্গে লালমনিরহাট জেলা শহরের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফুলবাড়ী উপজেলার সঙ্গে লালমনিরহাট যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাঝপথে রয়েছে ধরলা নদীর ২টি ছড়া। সেখানে পারাপারের মাধ্যম হচ্ছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা। প্রতিনিয়ত ২ উপজেলাবাসী এ রুট দিয়ে যাতায়াত করলেও দীর্ঘদিনেও কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে তারা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
জানা গেছে, ৫-৬ দিন ধরে দফায় দফায় বৃষ্টি ও ধরলা নদীর পানি বাড়া-কমাতে কলাঘাটবাসীর ভাগ্যের উত্থানপতন হচ্ছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের খাটামারী, কুলাঘাট, ধাইরখাতা, শিবেরকুটি ও বনগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা ৫-৬ দিন পানিতে প্লাবিত রয়েছে। তলিয়ে গেছে শত শত একর জমির আমন ধানের চারা। পানির নিচে আমন ধানের চারাগুলো ডুবে থাকায় দিন দিন নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে ধরলা নদী ও পাশ দিয়ে ঘেঁষে যাওয়া রতনাই নদীতে দিন দিন ভেঙে যাচ্ছে ছিটমহলগুলো। এদিকে নদীতে পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গত কয়েকদিন ধরে এ ইউনিয়নে শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দীর্ঘদিনেও পানিবন্দি মানুষগুলো কোনো ত্রাণ সহায়তা পায়নি। ফলে তাদের দিন কাটছে অনাহারে-অর্ধাহারে। তাদের দুঃখ-দুর্দশা চরমে পৌঁছলেও শুধু সংশ্লিষ্ট দফতরে রিপোর্ট পাঠানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন অনেক স্থানে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রাখলেও এ ইউনিয়নের দিকে কোনো প্রশাসন চোখ তুলে তাকাচ্ছে না। এবারে ৫টি গ্রামের শত শত একর জমির ধান পানির নিচে পড়ে আছে। ধরলা নদীর ভাঙনে অনেক বাড়ি-ঘর, গাছপালা, রাস্তা-ঘাট, ছিটমহলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের খাটামারী, কুলাঘাট, ধাইরখাতা, শিবেরকুটি ও বনগ্রাম পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নজরুল, গোমস্তা, হাসেম, নুরুজ্জামান, আবুল, জব্বার ও মকবুল জানান, এবারে বর্ষা মৌসুমে ইতিমধ্যে দু’দফা জমির আমন ধানের চারা পরিবর্তন করেছি। এবারে যে বন্যা পানির নিচে পড়ে আছে ধানের চারা। এ বন্যায় ধান নষ্ট হলে আর চারা লাগার বুদ্ধি ও সময় নেই। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে ধরলা নদীর পানি না কমলে এ ধানের চারা পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
ভারী বর্ষণ আর ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধিতে ঘর-বাড়ি ও আমনের চারা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে অকে পুকুরের মাছ। ফলে এলাকার সাধারণ কৃষকরা আরও এক দফা হতাশা হয়ে পড়েছেন। কুলঘাট ইউনিয়নজুড়ে অনেক গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে ধরলা নদী। এ নদীতে রয়েছে অসংখ্য বাঁশের সাঁকো। এসব সাঁকো এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে নির্মাণ করা হলেও বন্যা পানিতে তাও নষ্ট হয়েছে। ছিটমহলবাসীরা ভোটার হওয়ার সুযোগ না পাওয়ায় নদী ভাঙন ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা হচ্ছে না।
অপরদিকে ফুলবাড়ী যোগাযোগের রাস্তাটির ১৫০ মিটার ভাঙন ও ধরলা নদীর ভাঙন পানি উন্নয়ন বোর্ডে অনীহা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। যদিও মাঝে মধ্যে বাস্তবায়ন হচ্ছে তাও প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এলাকায় মঙ্গা স্থায়ী প্রভাব পড়বে, দুর্ভোগ পড়বে এ অঞ্চলের মানুষের ওপর।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor