Friday, September 12, 2008

প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকির মুখে দক্ষিণ এশিয়া

১৩.০৯.০৮
উপসম্পাদকীয়
জয়নুল আবেদীন

স¤ক্স্রতি দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্ট’ার (সার্ক) পঞ্চদশ শীর্ষ সল্ফে§লন শ্রীলংকার রাজধানী কলল্ফে^ায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। শীর্ষ সল্ফে§লন শেষে সšúাস নিমর্হৃল, খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলা, আঞ্চলিক বাণিজ্য প্রসার, সার্ক উল্পুয়ন তহবিল গঠন ও জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিল্পু ক্ষেত্রে যৌথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। কলল্ফে^া ঘোষণায় সšúাস সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও খাদ্য নিরাপত্তা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি পৃথক বিবৃতি অনুমোদন করা হয়। অধিকাংশ চুক্তি ও ঘোষণা গতানুগতিক। কেননা পহৃর্ববর্তী সল্ফে§লনগুলোতে গৃহীত চুক্তিগুলো কার্যকর হয়নি। সার্ক নেতারা সার্ক সামাজিক সনদ, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, পানিস¤ক্সদ, পরিবহন এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার ওপর গুরুÍ^ দিয়েছেন। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ অঞ্চলে উৎপাদন বাড়ানো, বিপণন ব্যবস্ট’ার উল্পুয়ন এবং কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপরও বিশেষ গুরুÍ^ পেয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তার একমাত্র উপায় হচ্ছে কৃষি উৎপাদন বৃ™িব্দ। কিন্তু খাদ্য উৎপাদনের অšøরায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এতদঞ্চলে বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের পহৃর্বাঞ্চলে এবং উপকূল অঞ্চলে বারবার অকাল বন্যায় জলোচ্ছ্বাস, সুনামি, প্রচ- ঘহৃর্ণিঝড় এবং উঁচু এলাকায় খরার প্রভাবে পানীয়জলের সংকট দেখা দেয় এবং কৃষিক্ষেত্রে সেচব্যবস্ট’া অচল হয়ে পড়ে। বৈশি^ক জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ অত্যšø ঝুঁকিপহৃর্ণ অবস্ট’ানে আছে। জলবায়ু দ্র“ত পরিবর্তনের প্রভাব কম-বেশি অনেক দেশে পড়লেও অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু নিল্ফু আয়ের দেশ বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্টø হচ্ছে বেশি। উল্পুত বিশে^ বিশেষ করে জি-৮ দেশগুলোর অতিদ্র“ত শিল্কপ্প উৎপাদন বৃ™িব্দ প্রতিযোগিতার ফলে বায়ুম-লে কার্বন মনোক্সাইড (ঈঙ), কার্বন ডাইঅক্সাইড (ঈঙ২), সালফার ডাইঅক্সাইড (ঝঙ২), নাইট্রোজেন অক্সাইড (ঘঙ২) ও ক্লোরোফ্লুরো (ঈঋঈ), বায়ুম-লের আবরণী ওজোন স্টøর ক্ষয় করে ফেলেছে। ফলে উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুর বরফ গলে সমুদ্রের পানি ফুলে উঠছে। এতে বাংলাদেশসহ অনেক দরিদ্র দেশে দেখা দেবে সীমাহীন দুর্যোগ। পানি এক মিটার বৃ™িব্দ পেলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, ভারত মহাসাগরীয় ™^ীপপুঞ্জ, পশ্চিমবঙ্গের উপকূল গোটা মাল™^ীপ তলিয়ে যাবে।
মেরু অঞ্চলের বরফ ও বিশাল আকারের হিমবাহগুলো গলতে শুরু করেছে। সমুদ্রের পানি এক মিটার বৃ™িব্দ পেলে সাগরতীরবর্তী বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ ডুবে যাবে। ফলে মনুষ্যসৃ®দ্ব পরিবেশের প্রভাবে সমুদ্রের পানি বৃ™িব্দর ফলে এখনই খুলনা, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ঢুকছে। সাতক্ষীরার শিবশা, রায়মঙ্গল, মালঞ্চ, খুলনার পশুর, কালিন্দি ও বাগেরহাটের বলেশ^র তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে বিস্টøীর্ণ অঞ্চলে লবণাক্ত পানি ঢুকেছে এবং লবণাক্ততার কারণে সুন্দরবনের কাছাকাছি অঞ্চলে ধান উৎপাদন প্রায় বল্পব্দ হওয়ার উপত্রক্রম হয়েছে। বাঁধ ভেঙে বৃহত্তর খুলনার দক্ষিণাঞ্চলের চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। অচিরেই নিঝুম ™^ীপ এবং নিকট ভবিষ্যতে ভোলাসহ ভোলার ™^ীপগুলো এবং হাতিয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও স›™^ীপ তলিয়ে যাবে। বৈশি^ক উষষ্ণতা বৃ™িব্দর প্রভাবে অতিবৃ®িদ্বর কারণে ও হিমালয়ের বরফ গলা জলে হিমালয় দুহিতা নেপাল ও ভারতের আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গে ও বাংলাদেশে বারবার বন্যা দেখা দেয়। উজানে বন্যা দেখা দিলে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্টøা, ভাগীরথী, মেঘনা, সুরমা, কুশিয়ারা প্রভৃতি নদী এবং এর শাখা নদীগুলো বিশাল জলরাশি নিয়ে বাংলাদেশকে প্টèাবিত করে বঙ্গোপসাগরের দিকে ধাবিত হয়। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে উত্থিত হয়ে ভারতের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলে একত্রে প™§া নাম ধারণ করে। আসাম ও ত্রিপুরার জলরাশি নিয়ে সুরমা, কুশিয়ারা ও গোমতী মেঘনায় মিলিত হয় এবং চাঁদপুরের কাছে প™§ার সঙ্গে মিশে ভয়গ্ধকর মহৃর্তি ধারণ করে। উজানের বন্যার সব জলরাশি ধারণ করতে হয় বাংলাদেশকে। ফলে বাংলাদেশে বর্ষা কম হলেও উজানে বেশি বর্ষা হলে বাংলাদেশে বন্যা দেখা দেবে। বৈশি^ক উষষ্ণতার ফলে বিভিল্পু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এবং বারবার বন্যার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশই বেশ ক্ষতিগ্রস্টø হয় এবং ব্যাপক ফসল ও প্রাণহানি ঘটে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে হিমালয় সল্পিুহিত অঞ্চলে বৃ®িদ্বপাতের ফলে বন্যা অতীতেও হয়েছে; কিন্তু বৈশি^ক উষষ্ণতা বৃ™িব্দর ফলে বিগত দুই দশক ধরে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের সঙ্গে সিন্ডিকেট পাথরনুড়ি এবং বালুরাশি যমুনা, গঙ্গা, প™§া, মেঘনা, ধলেশ^রী প্রভৃতি নদীতে অসংখ্য চর জেগে নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে ধারণক্ষমতার বাইরে বিশাল জলরাশির চাপে গঙ্গা, প™§া, যমুনা, মেঘনা প্রমত্ত রূপ ধারণ করে নদীর দু’কূল ভেঙে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাসিয়ে নিয়ে যায়। হাজার হাজার মানুষ হয় গৃহহারা এবং ব্যাপক ফসলহানির ফলে দুর্ভিক্ষ ও মহামারীতে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু ঘটে। এই ভয়াবহ দুর্যোগ যতটা না প্রাকৃতিক তার চেয়ে বেশি মনুষ্যসৃ®দ্বÑ একথা আগেই উল্কেèখ করেছি। বৈশি^ক উষষ্ণতার কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্টø বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভারত, নেপাল ও ভুটানকে যৌথ পদক্ষেপ নিতে হবে এই বিপর্যয় ঠেকাতে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের দায়িÍ^ দরিদ্র বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার উল্কিèখিত দেশগুলোর পক্ষে সল্ফ¢ব নয়। কিয়োটো প্রটোকল অনুযায়ী জি-৮ দেশগুলো তাদের মোট বাজেটের একটি অংশ দরিদ্র দেশগুলোকে ক্ষতিপহৃরণ প্রদানের জন্য তহবিল গঠন করেছে। কিন্তু সেই অঙ্গীকার বাস্টøবায়িত হয়নি এবং সার্ক সল্ফে§লনে ক্ষতিপহৃরণ প্রদানের প্রস্টøাব ও উত্থাপন করেননি। ডিসেল্ফ^রে অনুষ্ঠেয় জি-৮ সল্ফে§লনের আগেই ক্ষতিপহৃরণের দাবি তোলার মোক্ষম সময় ছিল সার্ক সল্ফে§লনে। যাহোক বুশের কর্মচারীরা ক্ষতিপহৃরণের দাবি তুলতে সাহস না পেলেও পুরো তৃতীয় বিশে^র দরিদ্র দেশগুলো এবং বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলোর জনগণের দাবি তুলতে হবে। জাতিসংঘের মানব উল্পুয়ন অনুসরণ করে অক্সফামের হিসাব অনুযায়ী যুক্তরা®দ্ব্র বেশি দায়ী।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জি-৮ দেশ দেশগুলোক চাপ প্রয়োগ করে ক্ষতিপহৃরণ আদায় করতে হবে। পাশাপাশি নিজেরা যৌথভাবে হিমালয় সল্পিুহিত দেশগুলো বৈশি^ক কারণে সৃ®দ্ব প্টèাবন, খরা প্রভৃতি দুর্যোগের কবল থেকে বাঁচার উপায় খুঁজতে হবে। ক. সার্ক তহবিল ছাড়াও অবিলল্ফে^ ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ মিলে উপ-আঞ্চলিক কমিটি গঠন করে যৌথ তহবিল গঠন করতে হবে এবং নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং করতে হবে যাতে বন্যার পানি দ্র“ত সাগরে পড়তে পারে। খ. ভারত ও নেপালের পাহাড়ের পাদদেশে যেখানে ফসল কম হয় বা মোটেই হয় না সেখানে বিশাল কৃত্রিম হ্রদ সৃ®িদ্ব করে বর্ষার পানি ধরে রাখতে হবে এবং খরা মৌসুমে ভারতের মরু অঞ্চলে খাল খেটে বা পাইপের সাহায্যে পানি সরবরাহ করে পানির তীব্র সংকট দহৃর করা যাবে এবং শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশের জন্য ফারাক্কায় অতিরিক্ত পানি ছাড়া সল্ফ¢ব হবে। গ. নদীগুলোর দু’পাড়ে সুউচ্চ বাঁধ নির্মাণ করে নদীর পাড়ে বোল্ডার ফেলে বাঁধ স্ট’ায়ী করতে হবে। ঘ. সবচেয়ে বড় স¤ক্সদ হচ্ছে পানিস¤ক্সদ। উজানের পার্বত্য অঞ্চলের খরস্রোতা নদীগুলোতে হাইড্রো ইলেক্ট্রিক প্রজেক্ট তৈরি করে হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে। ঙ. এই হাইড্রো ইলেক্ট্রিক প্রজেক্ট বাস্টøবায়িত হলে নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের পর্যাপ্টø বিদ্যুৎ চাহিদা পহৃরণ করা সল্ফ¢ব। এই প্রকল্কেপ্প উৎপাদিত বিদ্যুৎ আণবিক শক্তির সাহায্যে উৎপাদিত বিদ্যুৎ খরচের চেয়ে অনেক কম। আমেরিকার সঙ্গে আণবিক চুক্তি করে মনমোহন সিং যে বিতর্কের ঝড় তুলেছেন এবং বুশের বিশ^স্টø তাঁবেদার হিসেবে পরিচিত হয়েছেন তাতে মহাͧা গাল্পব্দী, নেহরু এবং ইন্দিরা গাল্পব্দীর জোটনিরপেক্ষতার খেলাপ করেছেন এবং বিপদের সময়কার বিশ^স্টø বল্পব্দু বামদের হারিয়েছেন। এজন্য কংগ্রেসকে আগামীতে অনেক মহৃল্য দিতে হবে। এখনই আমেরিকা বলা শুরু করেছে, তাদের অনুমতি ছাড়া কোনো আণবিক পরীক্ষা চালানো যাবে না, যাহোক ওই প্রসঙ্গে পৃথক আলোচনা করা যাবে। মোদ্দা কথা হচ্ছে, জি-৮ দেশগুলোর সৃ®দ্ব বৈশি^ক উষষ্ণতার হাত থেকে আত্রক্রাšø দেশগুলোকে রক্ষার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলোর যৌথ উদ্যোগ নিতে হবে এবং উল্কিèখিত উল্পুয়ন পদক্ষেপ Í^রাল্পি^ত করতে হবে। ™ি^তীয়ত, ডিসেল্ফ^রে অনুষ্ঠেয় জি-৮ সল্ফে§লনে বৈশি^ক উষষ্ণতার জন্য আমেরিকাসহ যারা বেশি দায়ী তাদের কাছ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপহৃরণ আদায়ের উদ্যোগ নিতে হবে।
হ লেখক : শিক্ষা গবেষক

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor