Thursday, September 4, 2008

ভবদহের চারদিকে দুলছে সোনালি ধানের শীষ চারদিকে পাকা সোনালি ধান। কৃষাণ-কৃষাণীরা দিনরাত ব্যস্ত ধান কাটা ধান মাড়াই আর ধান ওড়ানোর কাজে। দীর্ঘদিন পর আউশ ধান

০৩.০৯.০৮
।। যায়যায়দিন ।। কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা
যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসন হওয়ায় এলাকাজুড়ে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার মহোউৎসব। গত দুই দশকের শ্রাবণ-ভাদ্র মাসের সেই চিরচেনা জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলে এখন ধান আর ধান। অন্যবার এ সময় ভবদহ অঞ্চলে গেলে দেখা যেতো পানি আর পানি, কোথাও দাঁড়ানোর জায়গা নেই। সেনাবাহিনী, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, এনজিওসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ছিল ব্যস্ত রিলিফ বিতরণে। বন্যার্তদের উদ্ধার কাজে ব্যস্ত সেই ভবদহ আজ অন্য চেহারায় দেখা দিয়েছে। চারদিকে পাকা সোনালি ধান। কৃষাণ-কৃষাণীরা দিনরাত ব্যস্ত ধান কাটা ধান মাড়া আর ধান উড়ানোর কাজে। দীর্ঘদিন পর আউশ ধান উৎপাদন হওয়ায় কৃষক পরিবারের মধ্যে আনন্দ বইছে।
ভবদহের ৯ ও ২১ ভোল্টের স্লুইচ গেট অকেজো ও হরি নদী পানিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় ভবদহ অঞ্চলের ১৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর মধ্যে শুধু ১৪ হাজার ১৪২ হেক্টর কৃষি জমিতে কৃষক প্রায় দুই দশক সময় ধরে কোনো ফসল উৎপাদন করতে না পেরে হয়ে পড়ে হতদরিদ্র। এলাকার কৃষকদের আবাদের মাধ্যমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে গত বছর সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পানি উন্নয়ন বোর্ড জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্প শুরুর প্রথম বছরেই ৮০ শতাংশ এলাকা জলাবদ্ধতা মুক্ত হয়। প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জলাবদ্ধ মুক্ত জমিতে কৃষক বোরো ধানের আবাদ করে। সবুজ ধানে ভরে উঠে ভবদহের মাঠ। কৃষকের সেই বোরো উৎপাদনের আনন্দে শরিক হতে ২৪ এপ্রিল ভবদহ অঞ্চলে বোরো ধান কাটার উৎসবে হাজির হন সেনাবাহনী প্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ। তিনি সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে মাঠে কাচি দিয়ে ধান কেটে সেই উৎসবের উদ্বোধন করেন। বোরো ধান কাটা শেষে কৃষকরা আউশের আবাদ শুরু করে। ভবদহ অঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে স্থান ভেদে আউশের বাম্পার ফলন আবার কোনো স্থানে মাঝারি ফলন হওয়ায় প্রতি কৃষাণ-কৃষাণীর চোখে-মুখে বাড়তি আমেজ। বর্তমানে এসব এলাকার বাড়ির উঠান রাস্তা সব স্থানে আউশ ধান ঝাড়াই কাজ পুরোদমে চলছে। একর প্রতি ৩৫/৪০ মণ আউশ ধানের ফলন পাওয়ায় এলাকার হতদরিদ্র কৃষক পরিবারের খাদ্য সঙ্কটের চিন্তা অনেকখানি মুক্ত হবে। এ বছর আউশ ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার কারণে আগামী বোরো মৌসুম শেষে প্রতিটি জমিই আউশ আমন চাষের আওতায় নিয়ে আসবে বলে এ অঞ্চলের কৃষকদের আশা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবুবকর খান জানান, ভবদহ অঞ্চলে বর্তমানে ২ হাজার ২৮৪ হেক্টর কৃষি জমি জলাবদ্ধ রয়েছে। দ্রুতগতিতে যেভাবে প্রকল্পের কাজ চলছে তাতে আগামী বোরো মৌসুমের আগেই ভবদহ অঞ্চলের শতভাগ কৃষি জমি জলাবদ্ধ মুক্ত হয়ে ফসল উৎপাদনের উপযোগী হবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor