Tuesday, September 2, 2008

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে আরো ৪০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে : বিশ্বব্যাংক

২৭.০৮.০৮
সমকাল প্রতিবেদক

সা¤প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের অন্ত ত ৪০ লাখ লোক নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। কমে গেছে তাদের ক্রয়ক্ষমতা। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়। বিশ্বব্যাংক বলেছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তারা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অধিক উৎপাদনের পাশাপাশি নিন্ম আয়ের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে। তবে বিশ্বব্যাংক বলেছে, এ মূল্যবৃদ্ধি শুধু বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই ঘটেছে। মতবিনিময় সভায় বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ঝিয়ান জু, প্রধান অর্থনীতিবিদ ভিনয় স্বরূপ, সিনিয়র ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থি’ত ছিলেন। ভিনয় স্বরূপ ‘বাংলাদেশে খাদ্য সংকটের অর্থনীতি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থ’াপন করেন। প্রসঙ্গত, পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ। ব্যুরো এরপর আর কোনো জরিপ করেনি। বিশ্বব্যাংক বলেছে, তাদের হিসাব মতে ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আলোচ্য সময়ে অন্তত ৩ শতাংশ দারিদ্র্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মূল কারণ আন্ত র্জাতিক বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধি। এ প্রসঙ্গে ভিনয় স্বরূপ বলেন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি অনুযায়ী গত তিন বছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৩৫ ভাগে নেমে আসা উচিত। অথচ হয়েছে ৩৮ ভাগ। সাংবাদিকদের প্রশেুর জবাবে ভিনয় বলেন, খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির ফলে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। এতে ৪০ লাখ লোক নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে এসেছে। ঝিয়ান ঝু বলেন, সস্তায় খাওয়ার দিন শেষ হয়ে গেছে। খাদ্য সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি এখন সারাবিশ্বের সমস্যা। তিনি মনে করেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী আমদানিও করতে হবে। এক হিসাবে দেখা গেছে, গরিব জনগণ তাদের মোট আয়ের ৫৩ ভাগ খাবারের জন্য ব্যয় করে থাকে। এজন্য খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে গেলে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ে গরিব জনগোষ্ঠী। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, সরকারের উচিত নিন্ম ও সীমিত আয়ের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। কারণ একদিকে জনসংখ্যার অত্যধিক চাপ, অন্যদিকে আবাদি জমি ক্রমে হ্রাস পচ্ছে। কাজেই এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। উন্নতমানের বীজ ব্যবহার, কৃষিপণ্যের উপকরণ যথাসময়ে সরবরাহ নিশ্চিতকরণ ও কৃষি গবেষণায় আরো বরাদ্দ বাড়িয়ে বাংলাদেশ ৩০ থেকে ৬০ ভাগ উৎপাদন বাড়াতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে, চীন ও ভিয়েতনামের তুলনায় বাংলাদেশে যথাক্রমে ৪০ ও ২০ ভাগ কম খাদ্য উৎপাদন হয়। তাই দেশটির জন্য প্রকৃত চ্যালেঞ্জ হচ্ছে উৎপাদন বাড়ানো।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor