Tuesday, September 2, 2008

হিমাগারে সংরক্ষিত আলু নিয়ে বিপাকে কুড়িগ্রাম রংপুরের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা

২৯.০৮.০৮ l সমকাল
আবদুল খালেক ফারুক, কুড়িগ্রাম

সংরক্ষণ মৌসুম দ্র“ত চলে যাচ্ছে; অথচ এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেন আলুর বাজার কমছে দিনে দিনে। ফলে হিমাগারে সংরক্ষিত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কুড়িগ্রামসহ রংপুর অঞ্চলের ছোট-বড় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এ বছর রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ হলেও এ পর্যন্ত সংরক্ষিত আলুর ৩০-৩৫ ভাগের বেশি এখন পর্যন্ত বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। বীজের জন্য সংরক্ষিত ১০ ভাগ আলু বাদ দিলেও বাকি আলু কোনোভাবেই নয়া আলুর মৌসুম শুরুর আগে অর্থাৎ আগামী ৪ মাসে বিক্রি সম্ভব হবে না। ফলে বিপুল পরিমাণ আলু আটকে যাওয়ার আশংকা করছেন হিমাগার মালিকরা।
একাধিক হিমাগার সহৃত্র জানায়, আগের বছরের চেয়ে আলুর উৎপাদন প্রায় ™ি^গুণ হওয়ায় এবার রংপুর অঞ্চলের মোট ৩৪ লাখ বস্তাধারণ ক্ষমতাস¤ক্সন্ন ২৮টি হিমাগারের সবকটি পহৃর্ণ হয়ে যায়। এসব হিমাগারের ধারণক্ষমতা প্রায় ৩৪ লাখ বস্তা। আগের বছরে আলুতে ভালো মুনাফা পাওয়ায় সাধারণ কৃষক থেকে নিয়ে হিমাগার ব্যবসায়ী সবাই এগিয়ে আসেন আলু সংরক্ষণে। হিমাগার মালিকরা কৃষকদের প্রতি বস্তার বিপরীতে আগাম ঋণ দিয়ে বিপুল অংেকর বিনিয়োগ করেন।
কিন্তু আলুর দাম তেমন না বাড়ায় এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের পাইকাররা কম আসায় আলু বিক্রি হয়েছে ধীর গতিতে। গত এক সপ্তাহে বস্তাপ্রতি (৮৪ কেজি) ১০০ টাকা কমে এখন গ্রানুলা ও বিনালা জাতের আলু ৯০০ টাকা ও ডায়মন্ড জাতের আলু ৯৫০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। কুড়িগ্রামের হক হিমাগার সহৃত্র জানায়, গড় সপ্তাহে এই হিমাগার থেকে প্রতিদিন ৪-৫টি ট্রাক আলু নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থ’ানে গেলেও এখন ১টির বেশি ট্রাক যাচ্ছে না। এই হিমাগারে ১ লাখ ৫০ হাজার বস্তাআলু সংরক্ষিত থাকলেও এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজার বস্তামাত্র।
অন্যদিকে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শিবরাম গ্রামের আলু চাষী আবদুস সালাম, আখতারুজ্জামান, হাবিবুর রহমান জানান, গত মৌসুমে প্রতি বস্তাআলু উৎপাদনে খরচ পড়েছে ৬০০-৭০০ টাকা। বর্তমানে ২০০ টাকা হিমাগার ভাড়া, ৫০ টাকা বস্তাছাড়াও পরিবহন আলু বাছাই খরচ ও ঘাটতি চুকিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে আলুতে। বন্যার মৌসুমে আলুর দাম বাড়বে এই আশায় তারা আলু বিক্রি করেননি এতদিন। এখন বন্যাও নেই। ক্রেতাও নেই। দাম কমছে দ্র“ত গতিতে।
হক হিমাগারের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, সংরক্ষিত আলু আটকে যাওয়ার আশংকায় তারা উ™ি^গ্ন। আগামী ডিসেল্ফ^র পর্যন্ত সংরক্ষিত আলু বিক্রি করা গেলেও নভেল্ফ^রের শেষে বাজারে নতুন আলু এলে বাজারে ধস নামার আশংকা রয়েছে। তিনি জানান, হিমাগার কর্তৃপক্ষ প্রতিবস্তাআলুতে ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা পর্যন্ত ব্যবসায়ী ও কৃষকদের ঋণ দিয়েছে। বর্তমানে আলুর মন্দা বাজারের কারণে তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ লোকসান ও আলু হিমাগারে আটকে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে। অনেক হিমাগার মালিক ইতিমধ্যে আলু বিক্রি করার জন্য সংরক্ষণকারীদের নোটিশ দিতে শুরু করেছে। পর পর ৩টি নোটিশের পরও আলু বিক্রি না করলে হিমাগার মালিকরা নিজ উদ্যোগে আলু বিক্রি করবেন। বাজার মন্দা থাকার পরিপ্রেক্ষিতে হিমাগার মালিকরা এক সঙ্গে আলু বিক্রি করতে চাইলে বাজারে বিপর্যয় নেমে আসবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor