Monday, January 26, 2009

কৃষক যখন বিজ্ঞানী

অন্যদৃ®িদ্ব
সমকাল II আরিফ হোসেন
বাংলাদেশের কৃষকের অর্থনীতির জ্ঞান টনটনে, এটা অনেক ‘বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদও’ মানেন। কৃষিবিজ্ঞানও তারা ভালো বোঝেন। আর এ জ্ঞান পুঁথি থেকে নয়, তারা আয়ত্ত করেন একেবারে বাস্টøব অভিজ্ঞতা থেকে। টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইলের আবদুল আজিজকে আমরা এ দলেই ফেলতে পারি। তিনি আনারসের চাষ করতেন। বোরো চাষে যেমন ইউরিয়া ব্যবহার হয়, তেমনি আনারসেও তা দরকার হয়। বাগানে ছিটিয়ে দেওয়া হয় এ সার। তার আনারস বাগান বড় এবং প্রয়োজন পড়ে প্রচুর সার। সারের দাম বাড়তে থাকায় তিনি এর জোগান নিয়ে সমস্যায় পড়েন। আর এ থেকেই নতুন বু™িব্দ মাথায় আসে। তিনি সার ছিটিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে পানিতে গুলিয়ে ¯েক্স্র করার সি™ব্দাšø নেন। এতে অবশ্যই ঝুঁকি ছিল। কম সার প্রয়োগের কারণে ফলন কম হতে পারত। কিন্তু তিনি ঝুঁকিতে জিতে যান। দেখা গেল, ছিটিয়ে দিলে যেখানে ১০০ কেজি সার প্রয়োজন, সেখানে গুলিয়ে ৫-৭ কেজিতেই কাজ হয়ে যায়। আনারসের পর তিনি এ প™ব্দতি প্রয়োগ করেন বরই চাষে। তারপর ধানের ক্ষেতে। এখানেও তিনি সফল। শনিবার চ্যানেল আইয়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবদুল আজিজ জানান, তার দেখাদেখি আরো কয়েকজন কৃষকও এ প™ব্দতি প্রয়োগ করে ইউরিয়ার ব্যবহার অনেক কমাতে পেরেছেন।
আবদুল আজিজ যে কৃষিবিজ্ঞানের পরিপন্থী কোনো কাজ করেননি, তার সাফাই করলেন কৃষি উল্পুয়ন করপোরেশনের ক্ষুদ্র সেচ রিফর্ম সি¯েদ্বমের প্রধান কৃষি প্রকৌশলী ইফতেখারুল ইসলাম। তার মতে, সার প্রয়োগে ছিটানোর চেয়ে ¯েক্স্র প™ব্দতি বেশি উপযোগী। কেউ প্রশু তুলতেই পারে, ধান উৎপাদন নিয়ে সরকারের যেসব প্রকল্কপ্প রয়েছে তাদের কারো মাথায় এ বু™িব্দ এলো না কেন? কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের কোনো বিজ্ঞানী এ পথ বাতলাতে পারলেন না কেন? এর উত্তর তারা ভাবতে থাকুন।
এটাও স্ট^ীকার করতে হবে, মানবজাতিতে অনেক গুরুÍ^পহৃর্ণ আবিষ্ফ‹ার আকস্টি§কভাবেই হয়েছে। আবদুল আজিজের আবিষ্ফ‹ার যদি বিজ্ঞানী সমাজে সমাদৃত হয় এবং এর প্রয়োগে অন্যদের উৎসাহিত করা হয় তাহলে অর্থনীতির জন্য সুবিধা হবে। এমনকি তা যুগাšøকারীও হতে পারে। বর্তমানে কেবল বোরো মৌসুমেই ১৪-১৫ লাখ টন ইউরিয়া সারের প্রয়োজন হয়। এ সারের দাম খুব চড়া এবং তা উৎপাদনে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ গ্যাসের জোগান আর অফুরান বলে বিবেচিত হচ্ছে না। তাছাড়া উৎপাদন ব্যয়ও বিপুল। যদি আবদুল আজিজের প™ব্দতি প্রয়োগ করে ইউরিয়ার ব্যবহার কমানো যায় তাহলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্কপ্প খাতসহ অন্যান্য খাতে এ মহৃল্যবান স¤ক্সদ কাজে লাগানো যাবে।
কৃষি উৎপাদনে নানা ধরনের উপকরণ দরকার হয়। কৃষকদের চাই ভালো বীজ, উল্পুত মানের সার এবং সেচের পানি। ধান, পাট, চা, তামাক, আলু, নানা ধরনের সবজি ও ফল সবকিছুতেই এ ধরনের উপকরণ প্রয়োজন হতে পারে। বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা যদি এসব ব্যবহারে সাশ্রয়ী প™ব্দতি বাতলে দিতে পারেন, তাহলে উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে রাখা সল্ফ¢ব হবে। ফল হিসেবে জনগণ পেতে পারে অপেক্ষাকৃত কম দামে কৃষিপণ্য।
আবদুল আজিজের উদ্ভাবন দেশের কাজে লাগলে তিনি কৃষির বিকাশে অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে গণ্য হবেন। তার প™ব্দতির আরো উল্পুয়ন সাধন প্রয়োজন কি-না, সে পথ বাতলাতে পারেন বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা। তারা নিশ্চয়ই নিরাশ করবেন না।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor