Saturday, October 11, 2008

জলবায়ু সহনশীল খাদ্যশস্য ও আজকের কৃষি

০৯.০৮.০৮
গবেষণা
ইত্তেফাক ।। বিবিসি ওয়েবসাইট অবলম্বনে-জাকিরুল ইসলাম

বিশ্বের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে জনসংখ্যার আধিক্য ও ক্রমবর্ধমান খাদ্য চাহিদা অন্যতম। দিনদিন যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে সে হারে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ছে না। খাদ্যশস্যের উৎপাদনের সঙ্গে ভূমির উর্বরতা, উন্নতমানের বীজ, সময় উপযোগী কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার ও বিজ্ঞানসম্মত রক্ষণাবেক্ষণ অতি জরুরি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং সে জন্য জলবায়ুর চরমভাবাপন্নতা কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। যা কিনা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদার ক্ষেত্রে রীতিমতো ঝুঁকিজনক অবস্থা। দেশে-দেশে বাড়তি খাদ্য শস্য উৎপাদনের যে কোশেশ চলছে তা একদিকে আশাব্যঞ্জক অন্যদিকে উদ্বেগের কারণ। কেন না, সীমিত ভূমিতে অধিক ফসল ফলানোর জন্য মানুষ লাগামহীন হারে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছে। ফল-তাৎক্ষণিকভাবে কিছুটা পাওয়া গেলেও সুদূরপ্রসারী ক্ষতিকর দিক নিয়ে তেমন একটা ভাবান্তর লক্ষণীয় নয়। এমনি পরিস্থিতিতে গ্লোবাল ক্রপ ডাইভার্সিটি ট্রাস্ট গ্রহণ করেছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের মাঝেও টিকে থাকতে সক্ষম এমন খাদ্যশস্যের বীজ উৎপাদনের বিষয় নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে।

গত কয়েক বছর যাবৎ একদল বিজ্ঞানী একের পর এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। সে সময় তারা এ ব্যাপারে একমত হন যে, গম, ধান, মসুর ও ভুট্টার সঙ্গে অন্যান্য শস্যের এমন বীজ উৎপাদন করতে হবে যা চরমভাবাপন্ন বৈরী আবহাওয়া বিশেষ করে বন্যা, খরা, অতিরিক্ত তাপেও টিকে থাকতে পারে। এজন্য প্রাথমিকভাবে ১৫ লাখ ডলারের তহবিল গঠনের বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ সংক্রান্ত প্রকল্পের কাজ হবে প্রথমে জাতীয় পর্যায়ে জলবায়ু সহনশীল খাদ্যশস্যের বীজ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা। প্রয়োজনে আর্কটিক অঞ্চলে গড়ে ওঠা ডুমস্ডে সীড ভল্টের (মহাপ্রলয় দিবসের বীজ সংরক্ষণাগার) সহায়তা নেয়া। গবেষকদের প্রত্যাশা আগামী ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে তারা নানাজাতের জলবায়ু সহনশীল বীজের ব্যাংক গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। প্রকল্পের উদ্যোক্তা এবং গ্লোবাল ক্রপ ডাইভার্সিটি ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক কেরি ফাউলার জানান, পরবর্তী পর্যায়ে বাছাইকৃত বীজ বপন বা রোপণের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।

জেনেটিক্যালি মোডিফাইড অর্গানিজম (জিএমও) ফুডের প্রবক্তারা এতে অতিশয় খুশি হয়ে বলেছেন, এ প্রক্রিয়ায় লোকজন জিএম ফুড সম্পর্কেও জানতে পারবে। একই সঙ্গে যারা জিএম ফুডের বিরোধী করে আসছেন তারা বাস্তবতা সম্পর্কে অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন। তাদের ভাষায়, কৃষিখাত বর্তমান চ্যালেঞ্জের মুখে। চরমভাবাপন্ন জলবায়ুতে খাদ্যশস্য উৎপাদন করা সম্ভব না হলে খাদ্য সংকট আরো প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। অথচ জলবায়ু পরিবর্তন তথা সহনশীল খাদ্যশস্যের উদ্ভাবন করা সম্ভব হলে সে সংকট অনেকটাই দূরীভূত হতে পারে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor