Saturday, October 11, 2008

কয়েক দফা বন্যায় আমন চাষ ব্যাহত

০৯.০৮.০৮
ইত্তেফাক ।। ইসলামপুর (জামালপুর) সংবাদদাতা ।।

বন্যায় জামালপুরের অনেক এলাকায় আমন চাষীদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেছে। কৃষি ক্ষেত্রে ক্ষতির ধকল কাটাতে নতুন উদ্যমে কৃষকরা রোপা আমন আবাদ শুরু করেছে। পানি নেমে যাওয়ার পর এ অঞ্চলের কৃষকরা পড়েছে আমন চারা সংকটে। সার, কীটনাশক, জমি চাষ ও শ্রমিকের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা এখন দিশেহারা। জামালপুরের ইসলামপুরের এ সমস্যা প্রকট। এখানে ২৫ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদন কম হওয়ার সম্ভবনায় খাদ্য ঘাটতির আশংকায় কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন লাগানো হয়। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভবনা ছিল। কিন্তু দফায় দফায় বন্যা ও ভারী বর্ষণে ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন পানিতে নিমজ্জিত হয়। দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। এতে ৩৫ হাজার কৃষক প্রায় ২২ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আর ১২৩ হেক্টর বীজতলা, ৫০৮ হেক্টর শাক-সবজিসহ মোট ৮ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হওয়ায় ৫১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। বিপুল এ ক্ষতির ধকলে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষকেরা বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মেরুদণ্ড একবারে ভেঙ্গে গেছে। গত বছরও এ উপজেলার কৃষকর আমন আবাদে মার খেয়েছিল।

বন্যাকবলিত এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন উদ্যমে কৃষকরা রোপা আমন আবাদ শুরু করেছে। কৃষকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে জমি তৈরি ও আমন রোপণের কাজে। পানি নেমে যাওয়ার পর এসব অঞ্চলের কৃষকরা পড়েছে আমন চারা সংকেট।

১২৩ হেক্টর বীজতলা নষ্ট হওয়ায় আমন চারা সংগ্রহে হিমসিম খাচ্ছে এখানকার কৃষকরা। উঁচু এলাকা ছাড়াও দূর-দূরান্তের বিভিন্ন স্থান থেকে যতটুকু চারা পাওয়া যাচ্ছে তা চড়া মূল্যে কিনতে হচ্ছে। পরিবহন ব্যয় মিলিয়ে প্রতি বিঘা জমির জন্য ধানের চারা সংগ্রহ করতে তাদের ব্যয় হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা। এমনিতেই বন্যার কারণে রোপা আমনের আবাদ পিছিয়ে গেছে ২০ থেকে ২৫ দিন। এখানকার কৃষকদের ধারণা যদি নতুন বীজতলার চারা রোপণের আশায় থাকতে হয়, তবে উৎপাদন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাবে আরো দেড় মাস।

অপরদিকে, গত বছরের তুলনায় সার, কীটনাশক, জমি চাষ ও শ্রমিকের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আমন চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ইসলামপুরের কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার সাহা জানান, কৃষক আবার নতুন উদ্যমে রোপা আমন লাগাতে শুরু করেছে। আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে ক্ষতি অনেকাংশে পুরণ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলেছে, আবাদে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ২৫ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন কম হবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor