Sunday, October 19, 2008

খাদ্যনিরাপত্তায় উৎপাদন বাড়াতে হবে

১৯.১০.০৮
।। ডেসটিনি ।। বিশেষ নিবন্ধ

প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশজ উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০০৮ উপলক্ষে চীনমৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খাদ্যনিরাপত্তা মানে কেবল খাদ্যশস্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা নয়। বরং এর মানে একটি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ জীবনের লক্ষ্যে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও তুলনামূলক নিরাপদ খাবার পাওয়া। কৃষককূলকে উৎসাহিত করার জন্য তিনি ঘোষণা করেন, এ বছর থেকে বছরের একটি নির্দিষ্ট দিন জাতীয় কৃষি দিবস হিসেবে পালিত হবে। এ ছাড়া দেশে একটি কৃষি জাদুঘর স্থাপন করা হবে।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গত কয়েক বছর ধরে খরা, অনাবৃষ্টি, রোগ-বালাই, সারের অভাব ইত্যাদি কারণে পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন না হওয়ায় ২০০৮ সালে চালের মূল্য রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৬টি দেশে ৪৩ শতাংশ জনগণ নিজেদের খাদ্য বাজেট কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানির মতো শিল্পোন্নত দেশের জনগণও স্বাভাবিক খাবারের মেন্যু অনেক কমিয়ে ফেলেছে। বাস্তবতা এই, অন্যান্য দিনের মত বিশ্ব খাদ্য দিবসেও ১০০ কোটি মানুষকে ক্ষুধার জ্বালা সইতে হয়েছে। এ হিসাব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তাই ইংল্যান্ডে যখন আনন্দ করে মানুষ চকোলেট উইক পালন করছে তার মধ্যে ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস যেন এক ছন্দপতন।
খাদ্য সংকট বিশেষ করে বাংলাদেশে বিরাট প্রভাব ফেলে। যে কারণে বিষয়টি সরকারসহ দেশের সব স্তরের মানুষকে ভাবিয়ে তোলে। সরকার এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে যা প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ফাও বলেছে, তাদের হিসাব মতে এ বছর ৪.৯ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। তারপরও ৩৬টি দেশ খাদ্য সংকটের ধকল সামলাতে পারবে না। তাই তাদের খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য উন্নত বিশ্বকে পরামর্শ দিয়েছে ফাও। ফাও যাই বলুক খাদ্যদ্রব্যের ব্যাপারে আমাদের নিজেদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষিকে গুরুত্ব দিতে হবে। দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই। এদিক থেকে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অত্যন্ত সময়োপযোগী ও গ্রহণযোগ্য। তাঁর জাতীয় কৃষি দিবস ও কৃষি জাদুঘর স্থাপন ঘোষণা এটা প্রমাণ করে জাতীয় পর্যায়ে কৃষিখাতকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, এতে জনগণ এ আশা করতে পারে অদূরভবিষ্যতে দেশ খাদ্য সংকটের হাত থেকে রেহাই পাবে। তবে এর সঙ্গে আমরা যোগ করতে চাই, জাতীয় শুল্ক ও ভর্তুকি নীতিকে এমনভাবে সাজাতে হবে যেন তা প্রান্তিক কৃষক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য-সার্বভৌমত্ব ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান করে এবং শুধু বাণিজ্যের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়। অব্যাহতভাবে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হলে আমাদের প্রয়োজন দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও কৃষিবান্ধব নীতি। কৃষি উৎপাদন ও কৃষি সহায়তা দক্ষতার সঙ্গে কৃষকের হাতে উন্নত উপকরণ ও আধুনিক প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor