Sunday, October 19, 2008

আধুনিক কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

১৯.১০.০৮
।। ইত্তেফাক ।। সাহারা তুষার

পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে দ্রুত। সেই সাথে বাড়ছে বিশাল এই জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা। কিন্তু সে তুলনায় পিছিয়ে আছে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা। শিল্পকারখানা আর বসতবাড়ি নির্মাণে গ্রাস করছে আবাদি জমি। আমরা পারছি না খাদ্য উৎপাদনের সাথে তাল মিলিয়ে জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে। তাই বারবার সন্মুখীন হচ্ছি খাদ্য সংকটের। লোকসংখ্যার তুলনায় কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা প্রথম থেকে অপ্রতুল থাকার কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে হয়েছে খাদ্য রায়ট। বেশিদিন আগের কথা নয়Ñ সংবাদ সংস্থা এএফপি এপ্রিল, ২০০৮ এর প্রথম সপ্তাহে জানিয়েছে বিশ্বে ৩৩টিরও বেশি দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে যার ফলে বিরাজ করছে গণ-অসšে-াষ। ইতোমধ্যে হাইতিতে খাদ্যের জন্য দাঙ্গা হয়ে ১০জন মারা গেছে। মিশরসহ কয়েকটি দেশের সরকারি খাদ্য গুদামে হয়েছে লুটপাট।

বিশ্বের ৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও আছে। নীতি নির্ধারক ও জনগণের মধ্যে একটা অস্থিরতা বিরাজ করছে বর্তমানে।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে কৃষি বিজ্ঞানীদের চেষ্টার কমতি নেই। সেরা জাতের বীজ উদ্ভাবন, রোগবালাই প্রতিরোধ, খরা, বন্যা ইত্যাদি দুর্যোগ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ফসল আবিষ্কারের টেষ্টা চলছে নিরš-র। বিশ্ব বিবেককে ভাবিয়ে তুলেছে আজকের জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা।

বিশ্বের এই চরম দুঃসময়ে কৃষিবিদ হাবিবুর রহমান দেশ ও জাতির হাতে তুলে দিলেন “আধুনিক কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি” নামে একটি মূল্যবান গ্রন্থ। গ্রন্থের শিরোনামের দিকে তাকালে আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে ভেতরকার বিষয়বস্তু। লেখক গ্রন্থে বাংলাদেশের অতীত ইতিহাস, বর্তমান কৃষির ব্যবস্থা, কৃষি শিক্ষাসহ গবেষণা, কৃষি বিভাগের কর্মতৎপরতা এবং বাংলাদেশে কৃষির ভবিষ্যত নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন অভিজ্ঞতার আলোকে। বাংলাদেশের বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে কৃষি খাতে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব; কৃষি ও অকৃষি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দেশজ উৎপাদন কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় এবং কী কী ধরনের সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব সবগুলো বিষয়ই স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন প্রাণঞ্জল ভাষায়। পাশাপাশি তুলে ধরেছেন মাটির শ্রেণীবিভাগ, পানি ধারণ ক্ষমতা ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উপর ভিত্তি করে ফসল উৎপাদন। গ্রন্থটিতে আরও যোগ হয়েছে আধুনিক ফসল উৎপাদনের কৌশল, বপন ও রোপণ কাল, বীজ ও চারার পরিমাণ নির্ধারণ, সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি, ফসলের পরিচর্যা, রোগবালাই সনাক্তকরণ ও তার প্রতিকার, মানব দেহের জন্য খাদ্য ও পুষ্টিগুণ, বয়সভিত্তিক খাদ্যের চাহিদা ইত্যাদি। গ্রন্থটির প্রতিটি অধ্যায়ে বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে লেখক বাংলাদেশের কৃষি খাতের সম্ভবনা, সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার বিভিন্ন কৌশল উপস্থাপন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের কলা-কৌশল সুবিন্যা¯-ভাবে উপস্থাপন করেছেন।

সা¤প্রতিক তথ্যসমৃদ্ধ গবেষণা গ্রন্থÑ “আধুনিক কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি” শুধুমাত্র কৃষি গবেষক, অর্থনীতিবিদ গোষ্ঠির কাছে সুপাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হবে এমন নয় বরং সাধারণ পাঠকের কাছেও গ্রন্থটি বহুল সামাদৃত হবে বলে আশা করি।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor