Friday, October 31, 2008

কৃষিঋণ : পুনঃঅর্থায়ন নীতিমালা সহজ হচ্ছে

৩০.১০.০৮
।। ইত্তেফাক রিপোর্ট ।।

কৃষিঋণ বাড়াতে পুনঃঅর্থায়ন নীতিমালা সহজ হচ্ছে। সরকারি বন্ডের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা নিতে পারবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো এমন লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কৃষিঋণ বিতরণে সরকারি ব্যাংকগুলো যাতে আর্থিক সংকটে না পড়ে সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের শুরুতে কৃষিঋণ বিতরণে সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে গতবারের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ বাড়িয়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে বলা হলেও সরকারি ব্যাংকগুলো মাত্র ৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা বাড়াতে পেরেছে। বরং অর্থ সংকট দেখিয়ে কৃষিখাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর জন্য এসব ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা চেয়ে আবেদন করে। সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ওই আবেদন আমলে এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন নীতিমালা সহজ করা হচ্ছে। তবে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধায় পাওয়া ঋণ শুধু কৃষিখাতে বিতরণ করা হবে এমন নিশ্চয়তা চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে পুনঃঅর্থায়নের টাকা যাতে চুরি না হয় এজন্য সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে পুনঃঅর্থায়নের বিপরীতে সরকারি বন্ড নেয়া হবে।

ব্যাংকিং সূত্রগুলো বলছে, পুনঃঅর্থায়নের টাকা শুধু কৃষিখাতে বিতরণ করা হবে এমন নিশ্চয়তা পেলে সরকারি বন্ডের বিপরীতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে ব্যাংক রেটে (৫ শতাংশ সুদে) পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট কাটার পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম সুদে কৃষিঋণ বিতরণ করতে পারবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

প্রসঙ্গত দেশের কৃষিখাতে মোট ঋণের প্রায় ৯০ শতাংশ বিতরণ করে থাকে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এরমধ্যে শুধু বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পায়। বাকি ৪ সরকার মালিকানাধীন সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক বাণিজ্যিক খাতেও ঋণ বিতরণ করে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পায় না।

চলতি অর্থবছর থেকে সরকারি-বেসরকারি সব ব্যাংকের জন্য কৃষিঋণ বিতরণ কার্যক্রম বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। আগের বছর থেকে বেসরকারি ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলেও দেশের মোট কৃষিঋণের প্রায় ৯০ শতাংশই বিতরণ করে থাকে সরকারি ৮ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে সোনালী ব্যংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, বিকেবি, রাকাব, বিআরডিবি ও সমবায় ব্যাংক। এরমধ্যে চলতি অর্থবছরে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৭ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অপরদিকে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা কৃষি-ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতবছর সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ৬ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ব্যাংকগুলো ৯৬০ কোটি টাকার কৃষিঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। চলতি অর্থবছরে সোনালী ব্যাংক ৬৭০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক ৬৫০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৪৩৮ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক ৬৬ কোটি টাকা, কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ৮৫০ কোটি টাকা, বিআরডিবি ৭৪৫ কোটি টাকা এবং সমবায় ব্যাংক ৪৫ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor