Tuesday, October 28, 2008

চুয়াডাঙ্গায় প্রকাশ্যে বীজ নিয়ে প্রতারণা

২৮.১০.০৮
যায়যায়দিন ।। চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

বীজ উৎপাদন ও বীজ প্রত্যয়নের ক্ষেত্রে সরকার চুয়াডাঙ্গাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। তবে তার সুফল ভোগ করতে পারছেন না এ জেলার কৃষকরা। প্রত্যয়নকৃত বীজ বপন বা রোপণে উপকারিতার বিষয়ে কৃষকদের সচেতনতার অভাবই এর মূল কারণ। এদিকে অপ্রত্যয়নকৃত বীজ কৃষকদের মধ্যে বিক্রি আইনগতভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে হাটে-বাজারে যা কৃষকরা কিনছে হরহামেশায়।
সারা দেশে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি রয়েছে মোট ৩০টি। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় রয়েছে দুটি। যা প্রমাণ করে এ অঞ্চলের কৃষকদের এক্ষেত্রে একটু বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কেননা এ জেলার উৎপাদিত ফসল জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশে অন্যান্য এলাকার প্রয়োজন মেটায়। সেসঙ্গে এলাকার উৎপাদিত বীজ সারাদেশের বীজের চাহিদা পূরণে দীর্ঘদিন ধরে দৃষ্টান্ত ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। যে কারণে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহকে বীজ উৎপাদন ও বীজ প্রত্যয়নের ক্ষেত্রে বরাবরই সরকার গুরুত্ব দিয়ে আসছে। কয়েক বছর ধরে সরকারের পাশাপাশি কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বীজ উৎপাদন করে আসছে। এ খাতে বিনিয়োগ করে তারা লাভবানও হচ্ছে। তারপরও কৃষকরা থেকে যাচ্ছেন সেই আগের তিমিরেই। এ জেলায় দুইটি বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি থাকার পরও প্রতিবছর প্রতি মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষকরা বীজ নিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
দেশে মৌলবীজ, ভিত্তিবীজ, প্রত্যয়িত বীজ ও মানঘোষিত বীজ এই চার প্রকারের বীজ বিক্রির বৈধতা রয়েছে। ধান, গম, পাট, আলু ও আখ এই ৫টি ফসলের ক্ষেত্রে মৌলভিত্তি ও প্রত্যয়িত মানের বীজ প্রয়োজন। বীজ প্রত্যয়ন মানেই ওই বীজের গুণগতমান যাচাই করে প্রত্যয়ন সনদ দেয়া। প্রত্যয়ন সনদ ছাড়া কোনো বীজ বাজারে বিক্রি করা যাবে না। আবার কৃষকরা নিজেরাও নিজেদের মধ্যে বীজ উৎপাদন করে তার গুণগত মান যাচাই না করেই তা বপন বা রোপণ করে থাকেন। এসব কারণে অধিকাংশ সময়ই আবাদে বিপর্যয় দেখা দেয়। বীজ উৎপাদিত করতে হলে এবং প্রত্যয়ন নিতে হলে বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত বীজ ডিলার হতে হবে। এরপর বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি নির্ধারিত ফি নিয়ে ওই বীজের গুণগত মান যাচাই করে সনদ প্রদান করে। মৌলবীজের জন্য সবুজভিত্তি বীজের প্রত্যয়নকার্ড বিতরণ করা হয়। এ কার্ড ছাড়া তা বিক্রি করা নিষিদ্ধ। বিধি অনুযায়ী প্রত্যয়ন এজেন্সির প্রদত্ত কার্ড ছাড়া বীজ বিপণন আইনত দ-ণীয় অপরাধ। অথচ চুয়াডাঙ্গার অধিকাংশ হাট-বাজারে বীজের দোকানে দেদার ওই প্রত্যয়নকার্ড ছাড়াই বিক্রি করা হচ্ছে বীজ। কৃষকরা ওই প্রত্যয়নকার্ড সম্পর্কে সচেতন না হওয়ায় বিক্রেতারা তা বিক্রির সুযোগ পাচ্ছে। কৃষকরা যদি এ বিষয়ে সচেতন হতেন তবে প্রত্যয়িত কার্ড দেখে বীজ সংগ্রহ করতেন।
চুয়াডাঙ্গা বিএডিসি সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলার দত্তনগর খামান থেকে প্রতি মওসুমে যে বীজ উৎপাদিত হচ্ছে তা দেশের মোট উৎপাদিত বীজের ৫ শতাংশ। প্রত্যয়নকৃত বীজ না কেনায় কৃষকরা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি থাকার সুফল ভোগ করতে পারছেন না বলে তারা মত দেন। এ জন্য প্রয়োজন কৃষকদের সচেতন করে গড়ে তোলা। সে প্রচেষ্টাও চলছে বলে তারা জানান।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor