Monday, October 6, 2008

হালাল খাদ্যপণ্যের রপ্তানী কৌশল রপ্ত করতে হবে

০৫.১০.০৮
ইত্তেফাক ।। তৌফিক আহমেদ

(পূর্ব প্রকাশের পর) হালাল খাদ্যপণ্যের নিয়ম-নীতি-অনুশাসনে কঠোরতার দিক থেকে ফিলিপাইন ঠিক ব্র“নাই-এর পরেই অবস্থান করছে। বিষয় হচ্ছে এত ঝক্কি-ঝামেলা টপকিয়ে কি হালাল খাদ্য রপ্তানীতে উৎসাহিত হবে কোন দেশ? কে চায় এত ঝামেলা পোহাতে? এদিকে আš-র্জাতিক বাজার -এর বাইরেও, স্থানীয়ভাবে খাদ্যের যোগান সুনিশ্চিতকরণওতো সমানভাবে জরুরি। ফিলিপাইনে বসবাসরত মুসলিমের সংখ্যা ৬০লক্ষ। স্থানীয় মুসলিমদের ভেতর হালাল খাদ্যের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। একইসাথে, হালাল রপ্তানীর খাতেও ফিলিপাইন উলে¬খযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। শুধুমাত্র ২০০৬ সালেই, ফিলিপাইন ১.৮২৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার হালাল খাদ্য রপ্তানী করেছে। এই অর্থের ভেতর ৯২৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য। অন্যান্য শীর্ষ রপ্তানী পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত ফল, বাদাম, নারিকেল পণ্য, ডেইরিজাত পণ্য, চিনি, মিষ্টিজাত দ্রব্য, পানীয় ইত্যাদি। চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের ৫০টি দেশের ওপর হালাল খাদ্য রপ্তানী করতে সফল হয়েছে ফিলিপাইন। আঞ্চলিকভাবে, আসিয়ান [অঝঊঅঘ (এ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস্)] দেশগুলোর একটি অন্যটির হালাল পণ্যের বাজার ধরতে ভীষণ তৎপর হয়ে উঠছে দিনের পর দিন। যেহেতু আসিয়ান (অঝঊঅঘ) অš-র্ভূক্ত বেশিরভাগ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর এই হালাল পণ্যের বাণিজ্য নিয়ে রয়েছে পারস্পরিক দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা আর তা আরও উন্নত করবার নানা উদ্যোগও চলছে। অন্যান্য হালাল পণ্যের বাজারগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উলে¬খযোগ্য রাষ্ট্র- মধ্যপ্রাচ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। মধ্যপ্রাচ্য বিশাল পরিমাণ হালাল খাদ্য আমদানি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ছয়গুণ বেশি হারে বেড়েছে মুসলিম জনসংখ্যা। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই ১২ বিলিয়ন ডলার হালাল খাদ্যের বাণিজ্য চলছে আর দেশটির ছয়টি রাষ্ট্রে পাশ করা হয়েছে হালাল খাদ্য আইন। এই বাণিজ্যের অংকটি যুক্তরাজ্যে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ২০.৫ বিলিয়ন পাউন্ড। দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠীর কারণে হালাল খাদ্য আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয় দেশটির মুসলিম জনস¤প্রদায়কে। চীন এবং ভারত দু’টি দেশেই রয়েছে ১০০ মিলিয়ন মুসলিমসহ আনুমানিক মোট ২০০ মিলিয়ন মুসলিম। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, এই বিশাল হালাল খাদ্যপণ্যের বাজার ধরতে প্রত্যেকটি হালাল অধ্যুষিত অঞ্চলের বিশেষ কৌশল বা নীতিগত হালালকরণ পদ্ধতিগুলো নখদর্পণে আনতেই হবে। তবেই ধরা যাবে হালাল খাদ্যপণ্যের রফতানি বাণিজ্য। এই বিষয়গুলো খুব গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করে বৈশ্বিক হালাল খাদ্যপণ্যের বাজার ধরতে ফিলিপাইন সরকার নিয়েছে নানা পদক্ষেপ এবং একইসাথে সরকারি প্রচারণা চালাচ্ছে জোরেশোরে। এমনকি, আইনগতভাবেও আš-র্জাতিক মান অনুসরণসাপেক্ষে, হালাল খাদ্য রপ্তানীর ক্ষেত্রে ফিলিপাইন সরকার যথেষ্ট সচেতনতা এবং সঠিক পরিকল্পনার সাথে এগিয়ে চলছে বিশাল বৈশ্বিক মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে। ফিলিপাইনের হালাল খাদ্যের ওপর রীতিমত চলছে গবেষণা। বৈশ্বিক মুসলিম ভোক্তা স¤প্রদায় নিয়েও চলছে নিবিড় অধ্যায়ন যাতে করে ফিলিপাইন এরকম একটি আকর্ষণীয় বাজার ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। আর তাই, বিদেশের মাটিতে হালাল খাদ্যপণ্যের বাণিজ্য মেলা, হালাল পণ্য বিক্রয়কেন্দ্রিক নানা প্রচারণা কার্যক্রমে তারা বেশ আগ্রহী। ফিলিপাইন এখন মুখিয়ে আছে আরও ব্যাপকভাবে এই হালাল খাদ্যের রপ্তানী বাজার ধরতে এবং উৎপাদনকারী থেকে শুরু করে রপ্তানীকারক পর্যš- সব সংশি¬ষ্ট মহলকেই উৎসাহিত করতে। বিশ্বের এই বিশাল হালাল খাদ্যের বাজার ধরতে গুণগত মানসম্মত খাদ্যপণ্য, বৈশ্বিক বাজার নিরীক্ষণ এবং এর পর্যালোচনায় ফিলিপাইন এগিয়ে গেল অনেকদূর। সেরকম কোন বিশেষ পরিকল্পনা কি ভবিষ্যতে আমাদের নীতি-নির্ধারণী মহলে নেয়া হবে কিনা তাই এখন দেখবার বিষয়। -

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor