Saturday, February 14, 2009

জেলায় জেলায় স্ট্রবেরী চাষে বিপ্লব

১৩.০২.০৯
সমকাল ।। মেহেরুল হাসান, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়

বাংলাদেশে ¯দ্ব্রবেরি ফল চাষের পথিকৃৎ প্রফেসর ড. মনজুর হোসেন দেশের ৪৫টি জেলায় ছড়িয়ে দিয়েছেন শীতপ্রধান দেশের এ ফলটির প্রায় দেড় লাখ চারা। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন সারাদেশে বেশ কিছু উদ্যোগী মানুষ চাষ করছেন এ ফল। উদ্যোগীদের পাশে সরকার এগিয়ে এলে এ ফল বিদেশে রফতানি করাও সল্ফ¢ব বলে মনে করেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক।
১৯৯৬ সালের ২ নভেল্ফ^র বাংলাদেশে প্রথম ¯দ্ব্রবেরির চারা নিয়ে আসেন ড. মনজুর হোসেন। জাপানে পিএইচডি করতে গিয়ে লাল টকটকে সুস্ট^াদু এ ফল দেখে দেশে তা চাষাবাদ করার উৎসাহ পান তিনি। জাপান থেকে আনা তিন জাতের ¯দ্ব্রবেরির চারা তিনি রোপণ করেন নিজের নার্সারিতে। কিন্তু আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ না খাওয়ায় চারাগুলো মরে যায়। পরে তিনি সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশনের (মহৃল চারা থেকে পরবর্তী সময়ে ব্যবহারের জন্য চারা তৈরির প™ব্দতি। এতে মহৃল চারা সবসময় সংরক্ষিত থাকে) মাধ্যমে টিস্যু কালচার ব্যবহার করে ৯ জাতের ¯দ্ব্রবেরির চারা তৈরি করেন। এই ৯ জাতের ¯দ্ব্রবেরির চারা নিয়ে ২০০৪ সাল পর্যšø অনেক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ চালান ড. মনজুর। সেসব গবেষণা থেকে তিনি রাবি-১, রাবি-২ ও রাবি-৩ জাতের ¯দ্ব্রবেরি উদ্ভাবন করেন। ২০০৪ সালে তিনি নিজস্ট^ নার্সারিতে রোপণ করেন এই তিন জাতের ¯দ্ব্রবেরি। চারাগুলোয় ফল ধরার পর দেখা যায় রাবি-৩ জাতের ¯দ্ব্রবেরিই দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপখাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ উপযোগী। এই জাতের ¯দ্ব্রবেরির আকার বেশ বড়। একেকটি ফল ২০ থেকে ২৫ গ্রাম পর্যšø হয়ে থাকে। এই জাতের ¯দ্ব্রবেরিই এখন সারাদেশে চাষ হচ্ছে।
এতদিন ড. মনজুর হোসেনের এই গবেষণা ও চে®দ্বা সবার অজাšেøই ছিল। ২০০৫ সালে বিটিভির একটি অনুষ্ঠানে প্রচার করা হয় তার এই কীর্তি। দেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশেও শীতপ্রধান দেশের ফল ¯দ্ব্রবেরি চাষ সল্ফ¢ব। ২০০৬ ও ২০০৭ সালে ¯দ্ব্রবেরি চাষাবাদ নিয়ে আরো গবেষণা চালান ড. মনজুর। ২০০৭ সালে তিনি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে আয়োজন করেন ¯দ্ব্রবেরি চাষ বিষয়ক কর্মশালার। দেশের ২৪ জেলার ৩৫ জন কৃষককে ওই কর্মশালায় ¯দ্ব্রবেরি চাষের ব্যাপারে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০০৮ সালেও আয়োজন করা হয় কর্মশালার। এভাবে ধীরে ধীরে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে ড. মনজুর হোসেনের এই উদ্ভাবন।
ড. মনজুর হোসেন সমকালকে জানান, দেশের প্রায় ৪৫টি জেলায় এখন বাণিজ্যিকভাবে ¯দ্ব্রবেরির চাষ হচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা ছাড়াও ময়মনসিংহ, গাজীপুর, পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোয়ও ছড়িয়ে পড়েছে এই ¯দ্ব্রবেরির চাষ। এ পর্যšø তার কাছ থেকেই উৎসাহীরা ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো ¯দ্ব্রবেরির চারা নিয়ে গেছেন। পঞ্চগড়ের গোল্ডেন সিডস নামে একটি প্রতিষ্ঠান ¯দ্ব্রবেরি চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে সফলও হয়েছে। যেখানেই চাষ হচ্ছে, সেখানেই বিত্রিক্র হচ্ছে সুস্ট^াদু এ ফল। ¯দ্ব্রবেরি চাষের প™ব্দতি খুবই সহজ। এ স¤ক্সর্কে ড. মনজুর হোসেন জানান, অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এর চারা লাগানো শুরু করা যায়। জমি তৈরি করে বেড, ম্যাটেড সারি বা রিবোন সারি প™ব্দতিতে চারা লাগাতে হয়। জমির মাটির পিএইচ ৬-৭ হতে হয়। শুধু জৈব সারের মাধ্যমেই ভালো উৎপাদন পাওয়া সল্ফ¢ব। নভেল্ফ^র থেকে ফেব্র“য়ারি পর্যšø রোগ-বালাই তেমন একটা দেখা দেয় না। তাই কীটনাশকেরও প্রয়োজন হয় না। চারা লাগানোর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই ফুল ফুটে ফল ধরা শুরু হয়। মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ফল সংগ্রহ করা যায়। একবিঘা জমিতে ৫ হাজার চারা রোপণ করতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।
ড. মনজুুর আরো জানান, স্ট^াস্টে’্যর জন্য উপকারী এই ¯দ্ব্রবেরি শুধু ফল হিসেবে নয়; ক্যান্সার এবং এইডসের মতো রোগের প্রতিষেধক হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এগুলো দেখা গেছে। বিভিল্পু খাদ্যদ্রব্য ছাড়াও নানা ধরনের প্রসাধনীসহ আরো অনেক পণ্য তৈরিতে ¯দ্ব্রবেরির নির্যাস সুগল্পিব্দ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এ ফলের পু®িদ্বগুণ মানুষের বয়স ধরে রাখার ক্ষেত্রেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে বলে জানান তিনি।
প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে ‘¯দ্ব্রবেরি বাড়ি বাড়ি’ স্টেèাগান নিয়ে এই উপকারী ফল চাষের চে®দ্বা চালিয়ে যাচ্ছেন ড. মনজুর হোসেন। দেশের কৃষক ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে ¯দ্ব্রবেরি চাষের উদ্যোগ তিনি ছড়িয়ে দিলেও এখনো সরকার এগিয়ে আসেনি এ ফল চাষে। ড. মনজুর বলেন, ‘শীতকালে বরফের কারণে ইউরোপের অনেক দেশে ¯দ্ব্রবেরি চাষ সল্ফ¢ব হয় না। অথচ সে সময় আমাদের দেশে তা চাষ করা যাচ্ছে। সুতরাং দেশে উৎপাদিত ¯দ্ব্রবেরি যদি বিদেশে রফতানি করা যেত তাহলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এ দেশে আসত। এমনকি রফতানি খাতে চিংড়িকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে এই ¯দ্ব্রবেরি। তাই সরকারের উচিত কৃষি স¤ক্স্রসারণ অধিদফতরের মাধ্যমে ¯দ্ব্রবেরি চাষে এগিয়ে আসা এবং বিদেশে এ ফল রফতানির ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।’
শীতের দেশের সুস্ট^াদু ফল ¯দ্ব্রবেরি এখন পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশে। এ ফলটি চাষে জেলায় জেলায় সংগঠিত হয়েছে বিপ্টèব। মাত্র কয়েক বছরের চে®দ্বায় এ বিপ্টèবের নায়ক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক বিপ্টèবেরও স্ট^পু দেখেছেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ এবং পৃষ্ঠপোষকতা। অনুসল্পব্দানের আজকের পুরো আয়োজন বাংলাদেশে ¯দ্ব্রবেরি চাষের নানা দিক নিয়েই।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor