Monday, February 2, 2009

দামুড়হুদা ও কয়রায় বোরো চাষিরা ধানের পরিচর্যায় মাঠে নেমেছেন

০২.০২.০৯
ডেসটিনি ।। দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি

দামুড়হুদা উপজেলায় আমন ধানের আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকরা আমনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। সার ও তেলের দাম কমানোসহ কৃষকদের জন্য নেয়া বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগে কৃষকরা এখন প্রাণবন্ত। উপজেলা নির্বাচনের ব্যস্ততা কাটিয়ে কৃষকরা বোরো চাষে আশানুরূপ ফলনের জন্যে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭টি ইউনিয়ন ও ১ পৌর এলাকায় ১০ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অধিকাংশ জমিতে ধানের রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। মদনা গ্রামে ইরি-বোরো চাষি আব্দুল খালেক ও বুলবুলি হাউলী গ্রামের আব্দুল মজিদ, জয়রামপুরের সাত্তার জানান, এ মৌসুমে চাহিদামতো সার পাওয়া যাচ্ছে। জমি তৈরির সময় চাহিদামতো সার পেয়েছি সেই সঙ্গে গত বছরের তুলনায় এসব সারের দামও এবার কমানো হয়েছে। স্থানীয় বাজারের সার ব্যবসায়ী হানিফ, ইয়াছিন ও আজিজুল জানান, কৃষকরা তাদের কাছ থেকে চাহিদামতো সার ক্রয় করছেন। ইরি-বোরো চাষের জন্য বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার মজুদ থাকায় নতুন ইমেজে কৃষকরা তাদের লাগানো ধান পরিচর্যায় মাঠে নেমে পড়েছেন। ইরি-বোরো আগাম চাষি আব্দুল কুদ্দুস জানান, তিনি আগামভাবে ধান লাগিয়েছেন। ধান ইতিমধ্যে গাছান হয়েছে। জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ সার প্রয়োগ করতে পেরে খুশি মনে বলেন, বাজার থেকে সার পেতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। উপজেলা কৃষিবিদ ও কৃষি কর্মকর্তা শাহ মো. আকরামুল হক জানান, এবার সারের কোনো সংকট নেই, চাহিদার তুলনায় সারের মজুদ রয়েছে। ধানের থোড় আসার পর প্রাকৃতিকভাবে কোনো দুর্যোগ দেখা না দিলে বোরো চাষিরা আশানুরূপ ফলন পাবেন বলে তিনি মনে করছেন।
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, লবণ পানি অধ্যুষিত কয়রা উপজেলার কৃষকরা খাদ্য চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মিঠা পানির ব্যবস্থা করে ধান চাষে আগ্রহী হয়েছেন। গতবার ৪ হাজার হেক্টর জমিতে এ উপজেলায় বোরো আবাদ হলেও এবার তা বেড়ে ৬ হাজার হেক্টরে চাষাবাদ চলছে। অনেক কষ্টে মিঠা পানির ব্যবস্থা হলেও চাহিদামাফিক সারের ব্যবস্থা হচ্ছে না বলে বোরো চাষিরা জানিয়েছেন। এখনো সার নিতে তাদের লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। কৃষকদের চাহিদার তুলনায় এখানে ডিলারের সংখ্যা কম হওয়ায় এ অবস্থা।
উপকূলীয় জনপদ কয়রা উপজেলার বোরো চাষিদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বাজারে সারের দাম কমলেও তাদের ভোগান্তি কমেনি। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বোরো চাষিদের জন্য সার ডিলার রয়েছেন মাত্র ৪ জন। যে কারণে অনেক দূর থেকে সার ক্রয়ের জন্য তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হয়। কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সার বিতরণের ক্ষেত্রে আগের নিয়ম বহাল থাকায় নতুন নিয়ম চালু না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থার উত্তরণ হবে না। তবে কৃষকদের কথা বিবেচনা করে ৭টি ইউনিয়নে চারজন ডিলার ছাড়াও ২০ জন বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নির্মল কুমার দে জানিয়েছেন। অপরদিকে কৃষকদের অভিযোগ, ডিলারদের সঙ্গে বিক্রয় প্রতিনিধিদের দামের হেরফের রয়েছে। তারা ডিলারদের ছাড়া কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা বেশি দাম রাখছে। যে কারণে কৃষকরা ডিলারদের দোকানে লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার মে. টন। তাদের এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষকরা কেমন ভূমিকা রাখতে পারবে তা নির্ভর করছে কৃষি জমিতে চাহিদামাফিক সার প্রয়োগ এবং মিঠা পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor