Saturday, February 14, 2009

সুনামগঞ্জে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও সার পাচ্ছেন না কৃষকরা

১৩.০২.০৯
ডেসটিনি ডেস্ক

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার আপ্তাবনগর ইউনিয়নের কৃষক সামছুল বারী (৪৫) শহরের পশ্চিমবাজার এলাকায় সারের জন্য এসেছেন সকাল ৯টায়। দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনি সার পাননি। শুধু সামছুল বারী নন, ভোর থেকে সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও ডিলারের দোকান থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে অনেক কৃষককে। বিডিনিউজ।
ডিলার বলছেন, চাহিদার তুলনায় কম সার পাওয়ায় সবাইকে সার দেয়া যাচ্ছে না। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, দু-একদিনের মধ্যেই সমস্যা কেটে যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের সার ডিলার সুধাংশু অ্যান্ড সন্সের সামনে গিয়ে দেখা যায় বাইরে সারের জন্য কয়েকশ কৃষক দুটি লম্বা সারিতে অপেক্ষা করছেন।
সুধাংশু অ্যান্ড সন্স সদর উপজেলার আপ্তাবনগর ইউনিয়নের ডিলার হলেও সার বিক্রি হচ্ছে শহরে। দোকানের ভেতর ঢুকে দেখা গেল আরো কয়েকজন কৃষককে। তাদের সার দিচ্ছেন ডিলার। পাশেই বসা কৃষি কর্মকর্তা। বাইরে পাহারা দিচ্ছে কয়েকজন পুলিশ।
বাইরে দাঁড়ানো লোকজনকে না দিয়ে ভেতরে ঢোকা লোকদের সার দেয়া হচ্ছে কেন জানতে চাইলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভানু চন্দ্র নাথ বলেন,
আমাদের বাধা সত্ত্বেও আপ্তাবনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসে এই লোকগুলোকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এরা তার লোক, তাই সার দিতে হবে। একই কথা বললেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মনির হোসেন।
কৃষকরা অভিযোগ করেন, বাইরে লাইনে দাঁড়ানো একজন কৃষককেও সার দেয়া হয়নি। যারা কৃষক নয়, তারাই সার নিয়ে যাচ্ছে। ৬০০ টাকা দরের এক বস্তা সার বাইরে ৮০০ টাকায় কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। এদের সঙ্গে ডিলার ও কৃষি কর্মকর্তার যোগাযোগ রয়েছে। যে কারণে প্রকৃত কৃষকরা সার পাচ্ছেন না। এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সার ডিলার সুধাংশু পাল দাবি করেন, সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩৬ বস্তা সার দিয়েছি ৩৬ জন কৃষককে। বুধবার ২০০ বস্তা সার পেয়েছি। অথচ বাইরে ৬০০-৭০০ কৃষক অপেক্ষা করছেন। সার কম পাওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেই তিনি শহরে ইউনিয়নের সার বিক্রি করছেন।
তার দোকানের দরজায় লাইনের একেবারে প্রথমে দাঁড়ানো কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, ভোরবেলা তিনিই প্রথম এসে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত দোকানে ঢুকতে পারেননি।
দেলোয়ারসহ সারিতে দাঁড়ানো কৃষকরা অভিযোগ করেন, এতক্ষণ লাইন ছাড়াই সার দেয়া হয়েছে। কথা বললেই পুলিশ ধমক দেয়। আপ্তাবনগর ইউনিয়নের হাছনবাহার গ্রামের কৃষক আমজাদ আলী, রফিক আলী ও সেলিম মিয়া সকাল থেকে অপেক্ষা করছেন সারের জন্য। কিন্তু না পেয়ে এক বস্তা সার বাইরে থেকে ৮০০ টাকায় কেনার জন্য টাকা জোগাড় করছিলেন। তারা জানান, বাইরে ২০০ টাকা বেশি দিলে এক বস্তা সার দেবে বলে একজন আশ্বাস দিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তা ভানু চন্দ্র নাথ বাইরে বেশি দামে সার বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমরা প্রকৃত কৃষককে সার দেয়ার চেষ্টা করছি।
সুনামগঞ্জ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, কেবল ফেব্রুয়ারি মাসে সুনামগঞ্জে সারের চাহিদা ৫ হাজার ৩৯৭ মেট্রিক টন। অথচ সার পাওয়া গেছে মাত্র ৫৬৩ মেট্রিক টন। ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে সার পাচ্ছেন না ডিলাররা। এ কারণে সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া বলেন, কিছুটা সংকট আছে। তবে টাকা জমা দেয়া হয়েছে। সার আসছে। দু-একদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor