Tuesday, February 10, 2009

রাউজানে অনিশ্চয়তায় কৃষক বোরো চাষাবাদ বিলম্বিত

০৯.০২.০৯
ডেসটিনি ।। রাউজান (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা

রাউজানের কৃষকদের মধ্যে পানির জন্য হাহাকার চলছে। বিভিন্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত অনেক খাল এখন ভরাট হয়ে গেছে। কয়েকটি খালের মুখে নষ্ট হয়ে থাকা সøুইচ গেটের কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নেই। যেখানে পানি পাওয়ার ব্যবস্থা আছে সেখানে সেচ পাম্প মালিকরা কৃষকদের পানি দিচ্ছেন নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো একর প্রতি মূল্য ধার্য করে। এ রকম পরিস্থিতিতে অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছেন রাউজানের শত শত কৃষক। বোরো চাষাবাদের সূচনা গত মাসে হলেও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর কৃষি জমি এখনো রয়েছে গরু-ছাগলের চারণভূমি হিসেবে। এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা সেচ পাম্প বসিয়ে জমিতে পানি দেয় তারা যার যার মতো কৃষকদের কাছ থেকে একর প্রতি পানির মূল্য ধার্য করেন। কৃষকদের স্বার্থ দেখার কেউ না থাকায় মনগড়া পানির মূল্য দিতে হয় সেচ পাম্প মালিকদের। পশ্চিম গুজরার কৃষক মিলন চৌধুরী জানিয়েছেন, মরিচ্যার বিলে তার জমিতে সেচ দেন পাম্প মালিক জিন্নাত আলী। প্রতি একর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে তাকে দিতে হবে ১ হাজার ৭০০ টাকা। জয়নগর বিলে সেচ দেন জহির আহাম্মদ। তিনি একর প্রতি পানির মূল্য ধার্য করেছেন ২ হাজার টাকা। সেচ পাম্প মালিকদের দাবি, প্রতিজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি, খাওয়া, থাকা দিয়ে আড়াইশ টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া রয়েছে বিদ্যুৎ বিল ও নানাবিধ খরচ। এ হিসাবে তারা পানির মূল্য নির্ধারণ করেছেন। রাউজান খাল বেয়ে নেমে আসা পাহাড়ি অঞ্চলের মজুত পানির দখল নিয়ে এখন চলছে দুপক্ষের দলাদলি। অভিযোগ রয়েছে, মাছ চাষের জন্য একপক্ষ ওপরের দিকে গোদা (বাঁধ) বেঁধে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দেয়ায় অন্যপক্ষ ক্ষেত-খামারে চাষাবাদে পানি পাচ্ছেন না। স্থানীয় কৃষক জাকির হোসেন, ধীরেন্দ্র বড়–য়া, আবদুল মাবুদসহ প্রায় অর্ধশত কৃষকের অভিযোগ, কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ওপরের দিকে খালে গোদা বেঁধে দেয়ায় নিচের দিকে পানির প্রবাহ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও তারা সুরাহা করছেন না। জানা গেছে, গোদা নির্মাণের ফলে এলাকার খলিলাবাদ, মাঝিপাড়া, বড়–য়াপাড়া, কুলালপাড়া, হান হানাবাদ, মঙ্গলখালীর প্রায় ২০০ হেক্টর জমির ক্ষেত-খামার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সঞ্জিত কুমার সুশীলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ২-১ দিনের মধ্যে খালের দেয়া বাঁধ কেটে দিয়ে পানির প্রবাহ চালু করা হবে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, পাহাড়তলি, বিনাজুরী, রাউজান, পশ্চিম গুজরা, নোয়াপাড়া, পূর্ব গুজরা এলাকার অনেক জমি এখনো গরু-ছাগলের দখলে। এ পর্যন্ত এখানে চাষাবাদ হবে এমন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বোরো চাষাবাদ নিয়ে কথা বলে জানা গেছে, ১২ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বোরা চাষাবাদ তাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি চাষাবাদের আওতায় এসেছে বলে তার দাবি। সেচ পাম্প মালিকদের পানির মূল্য নির্ধারণ ও ভরাট খালের পানির প্রবাহ প্রসঙ্গে বলেন, ভরাট খাল নিয়ে বারবার কথা হয় বিভিন্ন সভায়। এর সমাধান দরকার। পানির মূল্য নির্ধারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বসে কৃষকদের স্বার্থে নিষ্পত্তি করতে পারেন। এ ব্যাপারে তারা সহায়তা দেবেন।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor