Tuesday, February 10, 2009

নড়িয়া-ভেদরগঞ্জের ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হুমকির মুখে

০৬.০২.০৯

ডেসটিনি ।। শরীয়তপুর প্রতিনিধি
‘নাম হুইন্না কি করবেন, নাম কইলে কি কারেন্ট পাইমু। ৮ কানি জমি আমার ২টা মোটর চালাইতাম। কয়দিন আগে কারেন্টের কম পাওয়ারের লেইগ্যা মোটর পুইরা গেছে। অহন কারেন্টের যেই অবস্থা মোটর চালাইতে ভরসা পাই না। কহন আবার পুইয়া যায়Ñ এ ভয়ে কথাগুলো এভাবেই ক্ষোভের সঙ্গে প্রকাশ করলেন শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর কাদের। একই গ্রামের অপর এক কৃষক আব্দুল আজিজ মৃধা বলেন, কিছুদিন আগে ইরি ধান লাগাইছি। প্রথমে ক্ষেতে পানি ঠিকমতো দিলেও আজ দুই সপ্তাহ ধরে ক্ষেতে পানি না দিতে পারায় মাটি শুকাইয়া অনেক ধান গাছ মইরা গেছে। আগে বেশি দামে সার কিনেছিলাম। জমিতে সময়মতো পানি দিতে না পারলে সব ধান মইরা যাইব। আমাগো তহন পথে বইতে অইব।’
ঘড়িসার ইউনিয়নের ইসমাইল পেদা নামের এক কৃষক ৩ বিঘা ধানের জমিতে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে জমিতে সেচ দিতে না পেয়ে পাগল প্রায়। ২ সপ্তাহ যাবত বিদ্যুতের অভাবে পানি না দেয়া নড়িয়া উপজেলার পূর্ব লোনসিং, মধ্য লোনসিং, ঝিঝারি, চামটা রোকরপুরসহ প্রায় ৭শ হেক্টর জমিতে পানির অভাবে ধানের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। প্রতিদিন গড়ে এখানে ৩/৪ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। আবার যখন বিদ্যুৎ থাকে তখন বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে মোটর চালাতে পাচ্ছে না অনেক ইরি ব্লকের মালিকরা। লো-ভোল্টেজের কারণে প্রতিদিন ২/১টি সেচ মোটর পাম্প নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলায় ইরি ব্লকের সেচ কাজে ব্যবহৃত ৮টি গভীর ও ৪শ ৯৫টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। যার মধ্যে ২শ ৬০টি বিদ্যুৎচালিত। ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৭টি গভীর ও ৩শ ৭০টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। যার মধ্যে ২শ ২৯টি বিদ্যুৎচালিত। বিদ্যুতের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে ডিজেলের অভাব। ডিজেল ও বিদ্যুতের সংকটের কারণে এই দুই উপজেলায় ইরি ব্লকের সেচ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে মঙ্গলবার কৃষি কর্মকর্তাকে পাওয়া না গেলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নড়িয়া কৃষি অফিসের অফিস সহকারী বলেন, বিদ্যুতের সংকটের কারণে ইরি ব্লকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আমরা এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সঙ্গে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করে সেচ কাজের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করেছি।
বিদ্যুতের লো-ভোল্টজ ও বিদ্যুৎ সংকট সম্পর্কে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৪ মেঘাওয়াট। কিন্তু মাদারীপুর জেলার মস্তফাপুর জাতীয় গ্রিড লাইন থেকে শরীয়তপুর জেলার জন্য বিদ্যুৎ পাচ্ছি মাত্র ৩ মেগাওয়াটের একটু বেশি। শরীয়তপুর জেলার বরাদ্দকৃত ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে বিনা নোটিশে তারা মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। যার দরুন সব সময়ই শরীয়তপুরের বিদ্যুৎ সংকট লেগেই থাকে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor