Wednesday, February 11, 2009

শেরপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিক নেমে গেছে

১২.০২.০৯

ডেসটিনি ।। শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে গেছে। এতে প্রায় কয়েক হাজার নলকূপ সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে। আবার অনেক নলকূপে পানি উঠলেও পরিমাণ সামান্য। ইতিমধ্যেই যার প্রভাব পড়েছে অনেক এলাকায়। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানীয় জলের সংকট। এতে মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে পানি সংকটের কারণে উপজেলার ৮/১০ হাজার হেক্টর বোরো জমিতে সেচ সমস্যাও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিন বিভিন্ন গ্রামের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে পানি স্তর ব্যাপক নিচে নেমে গেছে। বিশেষ করে সীমাবাড়ী, সুঘাট, খামারকান্দী, খানপুর ও গাড়িদহÑ এ পাঁচটি ইউনিয়নে পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সীমাবাড়ীর শাহ আলী, সুঘাটের মোকছেদ আলী, খানপুরের সাখাওয়াত মাস্টার, গাড়িদহের নজরুলসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ইতিমধ্যে এসব এলাকার হস্তচালিত নলকূপে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। পানির স্তর ২৫ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত নেমে গেছে। সেচ সংকটের পাশাপাশি পানীয় জলের অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। তারা আরো জানান, বোরো প্রকল্পের নলকূপ থেকে সংগৃহীত পানি গ্রামের লোকজন ২/৩ দিন ধরে সংরক্ষণ করেন। আর ওই পানি তাদের খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে হচ্ছে। এ ছাড়া পানি সংকটে গরু, মহিষ, মানুষ একই ডোবা বা পুকুরে গোসল করছে। ফলে নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। অপরদিকে খাগা গ্রামের শুকুর আলী জানান, তাদের গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে তাদের এলাকাভিত্তিক শ্যালো মেশিনগুলোতে সকালে লাইন দিয়ে পানি নিতে হয়। আর সেই পানি দিয়ে খাওয়া দাওয়া সারতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় শ্যালো মেশিনচালিত মোট ৮ হাজার ৪৫৬টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে ডিজেলচালিত ৭ হাজার ৮০০টি ও বিদ্যুৎচালিত ৬৫৬টি। এ ছাড়া ৭৫টি গভীর নলকূপের মধ্যে ৬৫টি বিদ্যুৎচালিত ও ১০টি ডিজেলচালিত এবং ১৯৫টি পাওয়ার পাম্পের মধ্যে ডিজেলচালিত ১৯২টি ও বিদ্যুৎচালিত ৩টি। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বোরো জমিতে সেচ দিতে কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে চলতি বোরো উৎপাদনে এর সামান্যতম প্রভাব পড়বে না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্র জানায়, এ উপজেলায় সর্বমোট ২ হাজার ৮৩১টি নলকূপ রয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ৪০০টি চালু ও বাকিগুলো অকেজো। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী এ কে এম বদরুল আলম জানান, পানির স্তর ১৮ ফুট নিচে থাকলে সেটাকে আমরা স্বাভাবিক বলে থাকি। কিন্তু ওইসব ইউনিয়নের পানির স্তর ইতিমধ্যে ২৬ ফুট নিচে নেমে গেছে। তিনি আরো বলেন, দিন দিন পানির স্তর আরো নিচে নেমে যেতে পারে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে নদী খনন করতে হবে। আর ফসল চাষের জন্য ওইসব নদীতে বিশেষ ব্যবস্থায় পানি রিজার্ভ রাখতে হবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor