Saturday, February 14, 2009

কৃষি ব্যবস্থাপনা অর্থনীতি

সমকাল ।। মোঃ শরিফুল ইসলাম

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উল্পুয়নে কৃষি একটি গুরুÍ^পহৃর্ণ খাত। কৃষি খাতের উল্পুয়ন ও বহুমুখীকরণের মাধ্যমেই বাংলাদেশের উল্পুয়নের স্ট^পু দেখতে হবে। বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ লোকই গ্রামে বসবাস করে এবং তারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কাজেই কৃষি খাতের উল্পুয়ন ব্যতীত ব্যাপক জনগোষ্ঠীর বর্তমান ও ভবিষ্যৎ খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্ট’ান তথা অর্থনৈতিক সমৃ™িব্দ অর্জন কখনো সল্ফ¢ব নয়। তবে একথা সত্য, গুরুÍ^পহৃর্ণ এ অর্থনৈতিক খাতটি স্ট^াধীনতার প্রায় ৩৮ বছর পরও অবহেলিত এবং বিভিল্পু সমস্যায় জর্জরিত। বাংলাদেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ক্ষুধা, পুঁজি ও কর্মসংস্ট’ান এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কৃষি, কৃষক ও কৃষি ব্যবস্ট’াপনার ওপর আশু নজর দেওয়া উচিত। গ্রাম ও কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে কৃষিক্ষেত্রে এবং কৃষকদের সমস্যাগুলো চিহিক্রত করে সেগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। কৃষিক্ষেত্রে প্রতি বছর গ্রামবাংলার কৃষকরা যেসব সমস্যার সল্ফ§ুখীন হন সেগুলো হলো : ১. কৃষকদের মহৃলধনজনিত সমস্যা। অধিকাংশ কৃষক অর্থনৈতিকভাবে দরিদ্র; ২. উৎপাদনের বিভিল্পু উপকরণের দু®ক্স্রাপ্যতা, অনিয়মিত, অধিক মহৃল্য এবং নিল্ফুমানের; ৩. কৃষিপণ্যের সুসংগঠিত বাজারের অভাব; ৪. সুসমল্পি^ত যোগাযোগ ব্যবস্ট’ার অভাব। গ্রাম, গ্রামের কৃষক, কৃষিবাজার ও শহরের মধ্যে অবকাঠামোগত ব্যাপক ব্যবধান বিদ্যমান।
কৃষকদের মহৃলধন বা অর্থজনিত সমস্যার কারণে দরিদ্র কৃষকরা সময়মতো কৃষি উপকরণ কিনতে পারে না। গ্রাম্য মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়, যার ঘানি টানতে হয় সারা বছর ধরে। প্রাšিøক কৃষকদের তালিকা তৈরি এবং তাদের প্রয়োজন চিহিক্রত করে সুনির্দি®দ্ব কমিটির মাধ্যমে সময়মতো কৃষিঋণ বিতরণের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। উচ্চফলনশীল উল্পুত জাতের বীজের অভাবে জমিতে অধিক ফলন সল্ফ¢ব হয় না। এক গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, মোট ধানি জমির প্রায় ৬৫ শতাংশে আধুনিক জাতের ধান চাষ করা হয় এবং আগামী ২০২৫ সাল নাগাদ এর পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৮০ শতাংশ। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের উচিত গবেষণার মাধ্যমে উচ্চফলনশীল কৃষিবীজ উদ্ভাবন এবং সুষ্ঠু ব্যবস্ট’াপনার মাধ্যমে কৃষকদের হাতে তা সময়মতো পৌঁছানোর ব্যবস্ট’া করা।
কৃষিক্ষেত্রে সার একটি প্রধান উপকরণ। প্রতি বছর কৃষকদের সারের জন্য আন্দোলন করতে হয়। শুধু তা-ই নয়, জীবন পর্যšø দিতে হয়। মনে হয় কৃষকরা শুধু নিজের পরিবারের জন্য উৎপাদন করেন। সার কখন, কোথায়, কত পরিমাণে প্রয়োজন হয় তা আগে থেকেই চিহিক্রত করতে হবে। আমরা কি পারি না পহৃর্বপরিকল্কপ্পনা করে সারের উৎপাদন বাড়িয়ে বা আমদানি করে সময়মতো এলাকাভিত্তিক নির্দি®দ্ব কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাšিøক কৃষকদের হাতে তা পৌঁছে দিতে? প্রতি বছর পোকায় বহু ফসল ন®দ্ব করে। কৃষকরা সময়মতো পর্যাপ্টø পরিমাণে এবং সঠিক মানের কীটনাশক পান না। অনেক সময় খারাপ মানের ওষুধ হওয়ায় জমিতে তা ব্যবহার করেও সুফল পাওয়া যায় না।
সুসমল্পি^ত যোগাযোগ ব্যবস্ট’ার অভাব। গ্রাম, গ্রামের কৃষক, কৃষিবাজার ও শহরের মধ্যে অবকাঠামোগত ব্যাপক ব্যবধান বিদ্যমান। যোগাযোগ ব্যবস্ট’া খারাপ থাকায় গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য দহৃরবর্তী কোনো বাজার বা স্ট’ানে তা বিত্রিক্র করতে পারে না। ফলে মৌসুমি ফসল হয়তো পচে যায় বা সস্টøায় সেগুলো বিত্রিক্র করে দিতে হয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য গ্রামের সঙ্গে উপজেলার এবং উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে রাস্টøাঘাট ও পরিবহন ব্যবস্ট’ার উল্পুয়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশের সর্বত্রই একটি প্রধান সমস্যা হলো বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের অভাবে কৃষকদের সেচ কাজে যেমন সমস্যার সৃ®িদ্ব হয়, তেমনি পর্যাপ্টø বিদ্যুৎ না পাওয়ার কারণে বিভিল্পু গুদামে প্রতি বছর প্রচুর পণ্য পচে ন®দ্ব হয়ে যায়। বিশেষ করে গোল আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি মৌসুমি কাঁচামাল অধিক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্টø হয়ে থাকে। স্ট’ানীয় বিভিল্পু গুদামে পর্যাপ্টø বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। কৃষিপণ্যের বেশিরভাগই পচনশীল। তাছাড়া এগুলো মৌসুমি পণ্য। বছরের একটি নির্দি®দ্ব মৌসুমে উৎপাদন হয় এবং ব্যবহার হয় সারা বছর ধরে। এ সময় পচনশীল পণ্যকে ধরে রাখার জন্য স্ট’ানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্টø পরিমাণে সংরক্ষণাগার প্রয়োজন। এর অভাবে প্রতি বছর ন®দ্ব হয় গোল আলু, পেঁয়াজ, টমেটো, আম, আনারস, ধান ইত্যাদি অর্থকরী ফসল। এলাকাভিত্তিক চাহিদা নির্ধারণ করে পর্যাপ্টø পরিমাণে সংরক্ষণাগার তৈরি হলে বছরব্যাপী এসব পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। গ্রামবাংলার কৃষকরা সাধারণ অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত। কৃষি ব্যবস্ট’াপনা ও চাষাবাদ স¤ক্সর্কে তাদের কোনো তত্ত্বীয় শিক্ষা বা জ্ঞান নেই। ফলে অধিক উৎপাদনের জন্য সুনির্দি®দ্ব কাজটি তারা করতে পারে না। উপজেলাভিত্তিক পর্যাপ্টø কৃষিবিদ নিয়োগ দিয়ে প্রাšিøক কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্ট’া করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। কৃষিকে শুধু চাষিদের পেশাগত কাজ হিসেবে না দেখে আমাদের দৃ®িদ্বভঙ্গি বদলানো প্রয়োজন। এ খাতটিকে একটি লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে গুরুÍ^ দেওয়া প্রয়োজন। কৃষি একমাত্র খাত যেখানে অপেক্ষাকৃত কম মহৃলধন ব্যয় করে অধিক রিটার্ন পাওয়া সল্ফ¢ব।
প্রকৃতপক্ষে আমরা অনেক কিছুই ভাবি ও চিšøা করি কিন্তু খাদ্য সংকট সৃ®িদ্ব না হলে কৃষি বা কৃষকদের কথা আমরা ভুলে যাই। বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদ-কে মজবুত করার জন্য কৃষি ও কৃষি ব্যবস্ট’াপনাকে উল্পুয়ন করা প্রয়োজন। উপরে উল্কিèখিত বিষয়গুলোর যথাযথ পরিকল্কপ্পনা করে সুনির্দি®দ্বভাবে দায়িÍ^ বণ্টন ও জবাবদিহিতা সৃ®িদ্বর মাধ্যমে তা মনিটরিংয়ের ব্যবস্ট’া করা হলে বাংলাদেশের কৃষি, কৃষক ও জাতীয় অর্থনীতির অগ্রগতি হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
হ লেখক : সহকারী অধ্যাপক
ব্যবস্ট’াপনা বিভাগ, ঢাকা কমার্স কলেজ

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor