Saturday, February 14, 2009

পঞ্চগড় থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে স্ট্রবেরি বাজারজাত শুরু

১৩.০২.০৯
সমকাল ।। সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, পঞ্চগড়

বাংলাদেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে বাণিজ্যিকভাবে ¯দ্ব্রবেরি ফল বাজারজাত শুরু হয়েছে। পঞ্চগড়ের ¯দ্ব্রবেরি এখন যাচ্ছে ঢাকার আগোরা ও নন্দনে। যশোরের গোল্ডেন সিড ফার্ম ¯দ্ব্রবেরি ফল বাজারজাত করছে। এর মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়ের কৃষি অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। এ মৌসুমে এ বাগান থেকে দেড় টন ¯দ্ব্রবেরি উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন তারা। যার বাজার মহৃল্য ৬/৭ লাখ টাকা। প্রতিবছর গাছ বৃ™িব্দর পাশাপাশি উৎপাদনও বাড়বে।
মাত্র কিছুদিন আগে পঞ্চগড়ে ¯দ্ব্রবেরি চাষ শুরু হয়। ধীরে ধীরে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে এর চাষ। যশোরের উলশী হিমাগার লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন সিড ফার্ম গত বছরের ১০ জুলাই পঞ্চগড় সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের হালধরজোত গ্রামে প্রায় তিন একর জমিতে ¯দ্ব্রবেরির চাষ শুরু করে।
পঞ্চগড়ের মাটি ¯দ্ব্রবেরি চাষের উপযোগী যশোরের গোল্ডেন সিড ফার্মের পরিচালক হাফিজুর রহমান পিন্টু মাত্র আট মাসে তা প্রমাণ করেছেন। এখানকার মাটি ও আবহাওয়ায় ¯দ্ব্রবেরি চাষের উপযুক্ত বিবেচনায় তিনি ¯দ্ব্রবেরি চাষ শুরু করেছিলেন। ইতিমধ্যে ফুলে ফলে ভরে গেছে গোটা বাগান। ¯দ্ব্রবেরি ফল দেখতে প্রতিদিনই বিভিল্পু এলাকার লোকজন ভিড় করেন তাদের বাগানে।
গত ৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এ বাগান থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে অর্থকরী ¯দ্ব্রবেরি ফল বাজারজাত কার্যত্রক্রমের উ™ে^াধন করা হয়। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মনজুর হাসান ভূঁইয়া এ কার্যত্রক্রমের উ™ে^াধন করেন। উ™ে^াধনী দিনে বাগান থেকে ২০ কেজি ¯দ্ব্রবেরি ফল তোলা হয়।
উদ্যোক্তারা জানান, চলতি মৌসুমে এ বাগান থেকে দেড় টন ¯দ্ব্রবেরি উৎপাদন হবে। যার বাজার মহৃল্য পাঁচ শ’ টাকা কেজি হিসাবে সাড়ে সাত লাখ টাকা। এ বাগানের উৎপাদিত ¯দ্ব্রবেরি ফল বিশেষ ধরনের প্যাকেটে ঢাকার আগোরা ও নন্দনে পাঠানো হবে। সেখানে প্রতিকেজি ৮৫০ টাকা দরে বিত্রিক্র হবে। এখানকার নার্সারি থেকে যে কেউ ¯দ্ব্রবেরির চারা সংগ্রহ করতে পারেন। এ বাগান থেকে প্রতি সপ্টøাহে ২০ কেজি করে ¯দ্ব্রবেরি সংগ্রহ করা যাবে।
প্রথম বাজারজাতকরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ¯দ্ব্রবেরির রাবি-৩ জাতের উদ্ভাবক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের জৈব প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক এম মনজুর হোসেন, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্যাথলজি¯দ্ব অধ্যাপক শাহ আলম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. একেএম রাফিউল ইসলাম, দৈনিক কল্যাণ পত্রিকার স¤ক্সাদক একরাম উদ দৌলা এবং উদ্যোক্তা মফিজুল ইসলাম মোহন বক্তব্য রাখেন।
¯দ্ব্রবেরির উদ্ভাবক রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের জৈব প্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক এম মনজুর হোসেন বলেন, ১২ বছর ধরে ¯দ্ব্রবেরি নিয়ে গবেষণা করছি। ¯দ্ব্রবেরি নিয়ে অনেক স্ট^পু। পঞ্চগড়ে এত ভালো ¯দ্ব্রবেরি হবে তা ভাবিনি। পঞ্চগড়ে উৎপাদিত ¯দ্ব্রবেরি সুস্ট^াদু ও রসালো।
তিনি বলেন, ¯দ্ব্রবেরি চাষকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পঞ্চগড়ে ¯দ্ব্রবেরির বাগান করা হয়েছে। এখানে একটি নার্সারিও চালু করা হয়েছে। এ বাগান ও নার্সারিতে গবেষণা কার্যত্রক্রম পরিচালনা করা হবে। তিনি আরো বলেন, টিস্যু কালচার প™ব্দতির সোমোক্লোনার ভেরিয়েশন প্রযুক্তির সাহায্যে ¯দ্ব্রবেরির তিনটি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ জাতগুলো হচ্ছে রাবি-১, রাবি-২ ও রাবি-৩। এর মধ্যে রাবি-৩ জাতটি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চাষের সবচেয়ে উপযোগী।
জাপান বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগাওয়ারা বলেন, ¯দ্ব্রবেরি সারাবিশে^ একটি জনপ্রিয় ফল। এটি সাধারণত শীতপ্রধান দেশের ফল হলেও আমাদের দেশে এর চাষ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে। পু®িদ্বগুণ ও মানে সমৃ™ব্দ ¯দ্ব্রবেরি আসলে একটি গুল্ম জাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। দেখতে অনেকটা লিচুর মতো। আমাদের দেশে চাষের সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহারও শুরু হয়েছে। ¯দ্ব্রবেরি ফ্লেভারসমৃ™ব্দ বিভিল্পু দ্রব্য (খাদ্য ও প্রসাধনসামগ্রী) এখন বাজারে এসেছে। ¯দ্ব্রবেরিতে ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ ও ‘ই’ এবং ফলিক এসিড, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, পলিফেনল, এলার্জিক, ফেরালিক এবং কুমারিক এসিড, কুয়েরসিটিন, জ্যন্থোমাইসিন এবং ফাইটো¯েদ্ববল আছে। এর মধ্যে এলার্জিক এসিড ক্যান্সার ও প্রৌঢ়Í^ প্রতিরোধী এমনকি এইডস প্রতিরোধী হিসেবে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন। বাংলাদেশেও এর চাষ হতে পারে।
গোল্ডেন সিড ফার্মের পরিচালক হাফিজুর রহমান পিন্টু বলেন, অর্থকরী ¯দ্ব্রবেরি চাষের উজ্জ্বল সল্ফ¢াবনা রয়েছে পঞ্চগড়ে। দীর্ঘ সময় তুলনামহৃলকভাবে ঠা-া আবহাওয়া বিরাজিত এ জেলায় ¯দ্ব্রবেরি চাষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। চাষিদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি উল্পুতমানের ¯দ্ব্রবেরির চারা সরবরাহ নিশ্চিত করতে এই বাগান ও নার্সারি স্ট’াপন করা হয়েছে। এ নার্সারি প্রকল্কপ্প পহৃর্ণতা পেলে পঞ্চগড়ের মানুষ সহজেই ¯দ্ব্রবেরির চারা পাবে এবং এই সুমি®দ্ব ফল চাষে উদ্যোগী হবে। মাত্র এক বিঘা জমিতে চার মাসের ব্যবধানে চাষাবাদের খরচ বাদ দিয়ে লাভ হবে ২-৩ লাখ টাকা। ফলে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা। দেশের মানুষ নতুন করে পরিচিত হবে এই সুমি®দ্ব ফলের সঙ্গে। পাশাপাশি পঞ্চগড়ের কৃষি অর্থনীতিতে যোগ করবে নতুন মাত্রা।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor