Thursday, November 6, 2008

রাউজানে ডিলারদের গুদামে ইউরিয়া গলে পানি হচ্ছে

০৬.১১.০৮
ডেসটিনি ।। রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

রাউজানের ১১ সার ডিলারের গুদামে বিপুল পরিমাণ ইউরিয়া সার অবিক্রিত রয়ে গেছে। এ অবস্থায় গত মাসের কোটায় বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ ১১ ডিলারের নামে আরো ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের বরাদ্দ দিয়েছে। এখন সার নিয়ে বিপাকে পড়েছে এলাকার ডিলাররা। অধিকাংশ ডিলার জানিয়েছে বরাদ্দ দেয়া সার মিল থেকে না উঠালে ডিলারশিপ বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ ডিলার গুদামে নতুন করে বরাদ্দ পাওয়া সার উঠিয়েছে। দক্ষিণ রাউজানের পাহাড়তলি ইউনিয়নের সার ডিলার আবদুস শুক্কুর সওদাগড় জানিয়েছে, তার গুদামে আগের অবিক্রিত মজুত সার নিয়ে তিনি বিপাকে আছেন। চটের বস্তার সার গলে পানি হয়ে বেরুচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন মিল থেকে সার ভর্তির সময় চটের বস্তার ভেতর পলি ব্যাগ ঠিকমতো বসানো হয় না। এ কারণে অধিকাংশ চটের বস্তার সার দ্রুত গলে যায়। মেসার্স মোজ্জাম্মেল অ্যান্ড ব্রাদার্সের পক্ষে উপজেলার ফকিরহাটে সার বিক্রি করেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তিনিও অভিযোগ করেছেন মিলকর্তৃপক্ষ চটের বস্তায় সার যে প্রক্রিয়ায় ভর্তি করে বাজারজাত করছে, এসব চটের বস্তার সার এনে বিক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অল্প কয়েকদিনে এ বস্তার সার গলতে শুরু করে। প্রতিদিন পানি হয়ে সার গলে যাওয়ায় ওজনে কম হয়। খুচরা (কেজিতে) বিক্রি করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিক্রেতারা। সার ডিলার মেসার্স সুলতান ট্রেডার্সের মালিক মোহম্মদ আবুল মনছুর সাবের মজুত সম্পর্কে বলেন, গত মাসের কোটায় পাওয়া সারের মজুত তার গুদামে অবিক্রিত থাকলেও নতুনভাবে বরাদ্দ পাওয়া সার গুদামে উঠিয়েছেন। তিনি জানান, মজুত সার বিক্রির জন্য আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কৃষি সংশিষ্ট লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আমন মৌসুমে সাধারণত কৃষকরা সার কম ব্যবহার করেন। তার ওপর সারের মূল্যবৃদ্ধিতে অধিকাংশ কৃষক আমন মৌসুমে এবার জমিতে সারের ব্যবহার করেননি। যার ফলে ডিলারদের গুদামে সারের মজুত রয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এখানে অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাসে সারের চাহিদা মাত্র ৩০০ মেট্রিক টন। এখন ডিলারদের কাছে যে পরিমাণ সার মজুত আছে তা দিয়ে আগামী নভেম্বরের চাহিদা মিটিয়ে আরো অবশিষ্ট থাকার কথা। নতুন করে পাওয়া সার বোরো মৌসুমে কাজে লাগবে।
গত সেপ্টেম্বরের কোটায় পাওয়া অবিক্রিত সারের মজুতের কথা স্বীকার করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষকরা আমন চাষাবাদে এবার সারে ব্যবহার কম করেছে। এ কারণে বিপুল পরিমাণ সার অবিক্রিত থেকেছে। তিনি বলেন, উপযুক্ত মাত্রায় সার ব্যবহার করলে সারের মজুত থাকার কথা নয়। ডিলারদের নতুন করে সারের বরাদ্দপত্র দেয়া প্রসঙ্গে বলেন, রুটিন চাহিদার তালিকা অনুসারে সারের বরাদ্দপত্র দেয়া হয়েছে। নতুন করে পাওয়া সারের বরাদ্দ উঠিয়ে এর মধ্যে আট ডিলার নিজ নিজ গুদামে মজুত করেছে। তিনি জানান, তার এলাকার ডিলারদের কাছে থাকা মজুত সার কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সংকটকালে বিভিন্ন এলাকায় চাহিদাপত্রের বিপরীতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ৫৫ টন সার বাঁশখালী উপজেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে।
চটের বস্তার সার গলে যাওয়ার প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের ব্যস্থাপক (উৎপাদন) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, চটের বস্তায় সার বেশি দিন মজুত থাকলে গলে যাওয়া স্বাবাভিক। বস্তা ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো পরিবর্তন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান। তার কথায় এটি করতে পারে একমাত্র মন্ত্রণালয়ে সিদ্ধান্তের আলোকে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor