Friday, November 28, 2008

বিএডিসির গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য দেশে বোরো চাষ বেড়েছে ১৩ গুণ, ফলন বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ

২২.১১.০৮
ডেসটিনি ।। ডেসটিনি রিপোর্ট

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে বোরো ধানের চাষ বেড়েছে ১৩ গুণ এবং ফলন বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। অর্থাৎ শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ।
গবেষণা তথ্যে আরো বলা হয়েছে, সেচনির্ভর বোরো চাষে সেচ দক্ষতাসহ প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকের প্রয়োজনীয় জ্ঞান থাকলে এ সময়ে ফলন দ্বিগুণ বাড়তো। এতে বলা হয়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রধান নিয়ামক হয়ে উঠেছে বোরো ধান। আউশ ও আমন ধানের চেয়ে এর ফলন বেশি হওয়ায় বোরো ধান চাষে আমাদের দেশে নীরব বিপ্লব ঘটে চলেছে।
তথ্য প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বোরো ধান চাষ হয়েছিল ৩ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি ধানের ফলন হয়েছিল ১ লাখ ৭ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ ধান উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৯৭ হাজার মেট্রিক টন। উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের বোরো ধানের চাষ শুরু হলে ফলন বাড়ার পাশাপাশি বাড়তে থাকে চাষের জমি। প্রযুক্তিগত জ্ঞানেরও সম্প্রসারণ ঘটে কৃষকের। ২০০৪-০৫ সালে বাংলাদেশে বোরো ধানের চাষ হয় ৪০ লাখ ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদিত হয় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। ফলন ৩ গুণেরও বেশি বেড়ে হেক্টরে গড় ফলন দাঁড়ায় ৩ টন ৪০০ কেজি। ২০০৬-০৭ সালে বোরো ধান চাষের জমি বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ লাখ ৬৭ হাজার হেক্টরে। ধান উৎপাদন হয় প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মেট্রিক টন। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন হয় ৩ টন ৬০০ কেজি। আসন্ন মৌসুমে প্রায় ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মেট্রিক টন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, উন্নত বীজ ও রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে সেচনির্ভর বোরোর ফলন বাড়লেও কৃষকের প্রযুক্তিগত জ্ঞানে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। খামারে পানি ব্যবস্থাপনায় (সেচ) কৃষকের জ্ঞান একেবারে শূন্যের কোঠায়। এ ক্ষেত্রে একজন কৃষকের জ্ঞানের অভাব রয়েছে ৭৩ ভাগ। সেচ যন্ত্রপাতি ব্যবহারে জ্ঞানের অভাব রয়েছে ৪৭ ভাগ, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ৭৭ ভাগ, সুষম সার বণ্টনে ২৩ ভাগ, কীটনাশকে ৪০ ভাগ এবং বীজে ১৩ ভাগ। এই জ্ঞান ঘাটতির কারণে বোরো আবাদে প্রচুর শ্রম ও অর্থের অপচয় হচ্ছে। কম করে ধরা হলেও ক্ষেতে ব্যবহƒত পানি এবং সারের অর্ধেকের বেশি (শতকরা ৫০ ভাগ হারে) অপচয় হয়। এ কারণে একরপ্রতি কমপক্ষে ১৫ মণ ফলন কম হয়।
বিএডিসির প্রকৌশলী ও গবেষক ইফতেখারুল আলম জানান, দেশে সেচযোগ্য প্রায় ৭৬ লাখ হেক্টর জমি রয়েছে। বর্তমানে ৫০ লাখ হেক্টরেরও কম জমিতে বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। উফশী জাতের বোরো ধানের হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ক্ষমতা ৬ টন হলেও শুধু কৃষকের জ্ঞানের অভাবে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, কৃষকের সেচ দক্ষতা এবং সেচজমি বাড়ানোসহ অনকূল কৃষি পরিবেশ সৃষ্টি করা গেলে বোরো ধানের ফলন আরো বাড়বে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor