Friday, November 21, 2008

আতর ধানের গল্প

১৮.১১.০৮
যায়যায়দিন ।। শেখ সেলিম ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠে এখন এক ভিন্নধর্মী ধান চোখে পড়ছে। আতর আলীর উদ্ভাবিত এই ‘আতর ধান’-এর আশাতীত ফলন হচ্ছে। কৃষকরা এই ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আসান নগর গ্রামের হরিপদ কাপালির উদ্ভাবিত ‘হরি ধান’ এ এঞ্চলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। হরিপদ কাপালি এই সুবাদে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কৃত হয়েছেন। হরিপদ কাপালির পরে একই ইউনিয়নের ধর্মতলা গ্রামের আরেক মেঠো বিজ্ঞানী (আবিষ্কারক) আতর আলীর উদ্ভাবিত ধানের সাফল্য ও সম্ভাবনা কৃষকদের কৌতূহলী করে তুলেছে।
সরেজমিন এ এলাকার ধানের ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, আতর আলীর উদ্ভাবিত ধানের বাম্পার ফলন। দু’একদিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু হবে। এলাকাবাসী গিয়াস উদ্দীন সেতু, কৃষক মনিরুল ইসলাম, রফিকুল ও সাইদুল জানালেন, এ ধান চাষ করে গত বছর তারা বিঘা প্রতি ২৩-২৪ মণ করে ধান পেয়েছিলেন। এ বছর যে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল তারপরও আতর ধানের এতোটা ভালো ফলন হবে তা আশা করা যায়নি। ধানের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে এবারও বিঘাপ্রতি ২৩ থেকে ২৪ মণ ফলন পাওয়া যাবে। কৃষকরা আরো জানান, এই ধান গাছ লম্বা হয়। সার কম লাগে। চিকন চাল হয়, ভাত সুস্বাদু। প্রতি ছড়ায় ৩০০-৩২০টি ধান হয়। অন্যান্য ধানের থেকে ১০-১৫ দিন আগে কাটা যায়। কা- শক্তিশালী হওয়ায় সহজে হেলে পড়ে না। বিচালিও ভালো দামে বিক্রি হয়। বিচালি বিক্রির টাকা দিয়ে ধান চাষের খরচ অনেকটাই উঠে আসে।
আবিষ্কারক আতর আলীর বয়স ৪৫ বছর। সাধুহাটি ইউনিয়নের ধর্মতলা গ্রামের মৃত সুরুজ মিয়ার ছেলে তিনি। আতর আলী জানান, ২০০১ সালে তার জমির মধ্যে একটা ব্যতিক্রমধর্মী বড় ধান গাছ পান। সেই গাছটির ধান সংগ্রহ করে বীজ হিসেবে রেখে দিয়ে পরের বছর আলাদা চাষ করেন। এরপর থেকে এভাবে প্রতি বছর এ ধানের আবাদ করতে থাকেন। এক সময় এ ধানের গুণাগুণ এলাকার মানুষদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। কৃষকরা আতর আলীর কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেন। মাঠের সেরা ধান হিসেবে কৃষকদের কাছেও স্বীকৃতি মিলেছে। কৃষকরা আতর আলীর উদ্ভাবিত ধানটির নামকরণ করেছে ‘আতর ধান।’ এ বিষয়ে ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আ. কাদের সরকার, ঝিনাইদহ কৃষি অফিসার নাসির উদ্দীন, সাধুহাটি বংকীরা ব্লকের কৃষি উপসহকারী তোফাজ্জেল হোসেন ঠা-ু জানান, অজ্ঞাত জাতের এ ধানের ফলন অন্য জাতের ধানের তুলনায় ভালো। কৃষকরা ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটে এ ধানের নমুনা পাঠিয়ে গবেষণার দাবি জানিয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এ ধানের চাষ সম্প্রসারণ হলে কৃষি খাতে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor