Friday, November 14, 2008

বগুড়ায় কৃষি জমিতে বালির স্তর আবাদ করতে পারছে না কৃষক

১৪.১১.০৮
ডেসটিনি ।। ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
দফায় দফায় বন্যায় বালির স্তর পড়ে পূর্ব বগুড়ার প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর আবাদি জমিতে কৃষক চাষাবাদ করতে পারছে না। বালিঢাকা জমিতে কোনো ফসল ফলাতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে উপজেলার সাড়ে ৯ হাজার চাষি। ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশেহারা এসব কৃষক। তারা এ ব্যাপারে সরকারি সহযোগিতা চান।
পূর্ব বগুড়ার ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে প্রায় প্রতি বছরই পূর্ব বগুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। বাঁধভাঙা পানির প্রবল স্রোতে যমুনার তলদেশ থেকে বালি উঠে গিয়ে সমতল ভূমির আবাদি জমিতে জমা হচ্ছে।
সরজমিন দেখা গেছে, ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী, ভা-ারবাড়ী, সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচি, ভেলাবাড়ী, চন্দনবাইশা, কুতুবপুর, কামালপুর, হাট শেরপুর, সারিয়াকান্দি সদর, সোনাতলা উপজেলার টেকানি চুকাইনগর ও পাকুল্লা ইউনিয়নের ১ হাজার ৫০০ হেক্টর আবাদি জমিতে বালির স্তর পড়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকার আবাদি জমিতে বালি জমে জমে এসব জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়েছে। বন্যা পর এ ধরনের জমিতে ভুট্টা, মরিচ, আলুসহ বিভিন্ন প্রকার রবি ফসল চাষ করা হতো। কিন্তু দফায় দফায় বন্যায় পলিমাটির জমিতে এক থেকে দেড় ফুট পুরো হয়ে বালির স্তর পড়ায় চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। ধুনটে ৪০০ হেক্টর, সারিয়াকান্দিতে ৯০০ হেক্টর ও সোনাতলা উপজেলায় ৩০০ হেক্টর জমিতে বালির স্তর পড়েছে। এর মধ্যে কিছু কিছু জমি থেকে কৃষকেরা নিজস্ব উদ্যোগে বালি অপসারণ করে চাষাবাদ করছে। তবে জমি থেকে বালি অপসারণ করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে। তার পরও জমির উর্বরতা শক্তি আগের অবস্থায় ফিরে আসছে না।
এছাড়া বালি অপসারণে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে ওই জমিতে ফসল উৎপাদন করে সে খরচ উঠবে না বলে জানালেন গোপালনগর ইউনিয়নের দেউড়িয়া গ্রামের আফছার আলী। বালির স্তর পড়ে জমির উর্বরাশক্তি কমে যাওয়ায় এবং অপসারণের খরচ বেশি হওয়ায় জমির মালিকরা বালি অপসারণে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। এতে করে অনেক আবাদযোগ্য জমি অনাবাদি পড়ে থাকছে। সরকারিভাবে বালি অপসারণের কোনো উদ্যোগ না থাকায় এসব এলাকার অনেক চাষি জমিতে চাষাবাদ করতে পারছে না। সাতটিকরি গ্রামের কৃষক ফজলুল হোসেন জানান, তিনি নিজের উদ্যোগে বালি অপসারণ করে জমিতে চাষাবাদ করছেন। তবে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ রয়েছে। সাতটিকরি গ্রামের আফজাল হোসেন বললেন, নিজের টাকায় বালি অপসারণ করলে চাষাবাদ করার টাকা থাকবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কামাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, জমি থেকে বালির স্তর অপসারণ বিষয়ে সরকারি কোনো কর্মকা- না থাকায় আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না। উপজেলায় কতজন চাষি জমিতে বালির স্তর পড়ায় চাষাবাদ করতে পারছে না তার কোনো তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোনো হিসাব আমাদের কাছে নেই। বালি থাকা জমিতে চাষাবাদ করতে প্রয়োজন অধিক মাত্রায় পানি ও সার।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor