Tuesday, November 4, 2008

বোরো চাষে ডিজেল-ভর্তুকি দ্বিগুণ হচ্ছে সঠিক সময়ে অর্থপ্রাপ্তিতে এবারো অনিশ্চয়তা

০৫.১১.০৮
ইত্তেফাক ।। নিজামুল হক

এবার বোরো মৌসুমে সেচ কাজে ডিজেল ক্রয়ে কৃষকদের জন্য সরকারের ভর্তুকি দ্বিগুণ হচ্ছে। এ ভর্তুকির অর্থ কৃষকদের মাঝে সরাসরি বিতরণ করা হবে । আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে এই অর্থ বিতরণ শুরু হবে বলেও জানা গেছে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও কৃষকদের চাহিদা বিবেচনা করে ডিজেলে ভর্তুকি দ্বিগুণ করা হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে ডিজেল খাতে কৃষকদের জন্য সরকারের ভর্তুকি ছিল ২৪৯ কোটি টাকা, এবার তা বেড়ে ৫৪০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। চাহিদার ভিত্তিতে এর পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে। এবার বোরো চাষে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

ডিজেল ক্রয়ে কৃষকদের মাঝে ভর্তুকির টাকা বিতরণে সরকারি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দিহান কৃষক এবং কৃষি বিশেষজ্ঞরা। দেশের যেসব স্থানে আমন চাষ হয় না বা পানি তাড়াতাড়ি নেমে যায়, সে সব স্থানে বোরো বীজতলা তৈরি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। উত্তরাঞ্চলসহ বেশিরভাগ অঞ্চলেই নভেম্বরের মধ্যে আমন ধান মাঠ থেকে উঠে যাবে এবং কৃষকরা বোরো চাষের প্রস্তুতি নিবে ডিসেম্বরের শুরুতেই। জমি ও বীজতলা তৈরি এবং রোপণের পরও সেচ দরকার। সেচের বেশি প্রয়োজন জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে; কিন্তু সরকার এ যাবৎ কখনই নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তুকির টাকা বিতরণ করতে পারেনি। বোরা চাষীদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হলেও মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে এখনো পৌঁছেনি। শুধু গত বছরের বোরো চাষীদের নামের তালিকা চেয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছে । গত বছর ৬৭ লাখ কৃষকের মাঝে ২৪৯ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছিল। ওই বছর জমির পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ হেক্টর। উৎপাদন ছিল এক কোটি ৮৬ লাখ টন । আড়াই একরের বর্গা চাষী বা জমির মালিককে একর প্রতি ৫৩৪ টাকা বিতরণ করা হয়েছিল। জমি থেকে বোরো ওঠার আগ মুহূর্তে বা ওঠার পর গত মৌসুমে কৃষকরা ডিজেল ভর্তুকির টাকা পেয়েছিল।

এবার বোরো চাষের জন্য ৪৬ লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক কোটি ৮০ লাখ টন। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল ৩৫ লাখ হেক্টর। গত মৌসুমের মতো এবারও এ টাকা বিতরণে দেরি হবে এমন আশংকা কৃষকদের।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকার বোরো মৌসুম শেষ হবার পর বা নির্দিষ্ট সময়েই ঐ টাকা বিতরণ করে। এ টাকা কৃষকরাই তো পাবে, তাই বিতরণে বিলম্ব হলেও তেমন সমস্যা হয় না। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করে থাকে। কৃষকদের সাথে আলাপে তারা জানান, বোরো মৌসুমে সেচের সময় সরকারি ভর্তুকির টাকা পাওয়া গেলে তা সেচের কাজে লাগানো যায়। সেচের সময় কৃষকরা ঋণ নিয়ে ডিজেল ক্রয় করে। যা সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। তারা কৃষকদের আর্থিক বিষয়টি বিবেচনা করে নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তুকির টাকা বিতরণের দাবি জানান।

কৃষি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বোরো চাষে নিরবচ্ছিন্ন সেচ দরকার। উৎপাদন বাড়নোর জন্য এ বিষয়টি বিবেচনায় আনা দরকার।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor