Thursday, November 6, 2008

কৃষির আধুনিকীকরণ জরুরি

০৬.১১.০৮
সমকাল ।। উপসম্পাদকীয়
জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ সেলিম

গত ১৬ অক্টোবর বিশ^ খাদ্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সল্ফে§লন কেন্দ্রে কৃষি মšúণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধান উপদে®দ্বা ড. ফখরুদ্দীন আহমদ শুধু বক্তব্য দিয়েই অনুষ্ঠান শেষ করেননি। তিনি কিছু মহৃল্যবান ঘোষণাও দিয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা করেছেন, এ বছর থেকে একটি নির্দি®দ্ব দিন ‘জাতীয় কৃষি দিবস’ হিসেবে পালিত হবে এবং দেশে একটি কৃষি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হবে। কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশ হিসেবে, এ দেশের কৃষি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে প্রধান উপদে®দ্বা এ দেশের কৃষি তথা কৃষকদের মহৃল্যবান অবদানকেই যে স্ট^ীকার করে নিয়েছেন তা বোধহয় নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ^ব্যাপী খাদ্য সংকটের প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদে®দ্বা দেশবাসীর উদ্দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃ™িব্দর পরামর্শ দেবেন সেটিই স্ট^াভাবিক। কিন্তু তিনি (প্রধান উপদে®দ্বা) খাদ্য উৎপাদন বৃ™িব্দর সঙ্গে সঙ্গে স্ট^াস্ট’্যবান ও নিরাপদ জীবনের জন্য পর্যাপ্টø পু®িদ্ব ও নিরাপদ খাদ্য লাভের প্রতি অত্যধিক গুরুÍ^ আরোপ করেছেন, যা নিঃসন্দেহে প্রণিধানযোগ্য। ড. ফখরুদ্দীন আহমদ যথার্থই রাসায়নভিত্তিক কৃষিব্যবস্ট’ার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে, টেকসই ও ঝুঁকিমুক্ত কৃষিব্যবস্ট’া নিশ্চিত করতে কৃষকদের জৈব কৃষিব্যবস্ট’ায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও তার এ আহ্বান এ দেশের মোট কৃষকের ঠিক কতজনের কান পর্যšø পৌঁছাবে তা নিয়ে সন্দেহের যথে®দ্ব অবকাশ রয়েছে। তবে এ দেশের কৃষি খাতকে টেকসই ও ঝুঁকিমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে সরকার সত্যি সত্যিই উদ্যোগী হলে এ দেশের সব কৃষি কর্মকর্তাকে ৬৪ হাজার গ্রামের কৃষকদের দোরগোড়ায় পাঠাতে হবে।
সরকারকে কড়া নজরদারি রাখতে হবে। কৃষি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে বসেই তাদের দায়িÍ^ শেষ করছেন, নাকি কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন ব্যবস্ট’াগুলোকে গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আমাদের দেশের কিংবা একেবারেই অক্ষরজ্ঞানহীন হতদরিদ্র কৃষকদের পক্ষে জেলা কিংবা উপজেলা সদরে গিয়ে কৃষি অফিস থেকে আধুনিক কৃষি তথ্য সংগ্রহ করা একেবারেই সল্ফ¢ব নয়। সুতরাং কৃষি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরই কৃষকদের দোরগোড়ায় যেতে হবে দেশের কৃষি খাতকে টেকসই ও ঝুঁকিমুক্ত রাখার বৃহৎ স্ট^ার্থে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আমাদের ইউনিয়ন পরিষদগুলোও অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। আর সে লক্ষ্যে স্ট’ানীয় সরকার ব্যবস্ট’ার এ স্টøরে (ইউপি) যুগের চাহিদানুসারে নতুনÍ^ আনয়ন করা অত্যাবশ্যক। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড প্রতিনিধিকে (মেল্ফ^ার) যদি স্ট’ানীয় কৃষকদের কৃষি সমস্যা সমাধানের বাড়তি দায়িÍ^ দেওয়ার ব্যবস্ট’া সরকার থেকেই করা হয় তাহলে দেশের কৃষি খাত অনেকটাই যে উপকৃত হবে সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ থাকে না। সরকার চাইলে জনপ্রতিনিধিদের জনগণের অধিকতর সেবামহৃলক কাজে লাগাতে পারে। যাক সে প্রসঙ্গ। ফিরে আসি টেকসই ও ঝুঁকিমুক্ত কৃষিব্যবস্ট’া প্রসঙ্গে। এখন থেকে দু’তিন দশক আগেও আমরা যখন গরু-মহিষের ™^ারা হাল চাষ করতাম তখন অনেককেই আক্ষেপ করে বলতে শোনা যেত, কৃষির আধুনিকায়ন ছাড়া এ দেশের উল্পুতি হবে না। মাল্পব্দাতা আমলের কৃষি প™ব্দতি বাদ দিতে হবে। আধুনিক বৈজ্ঞানিক প™ব্দতিতেই কৃষি কাজ করতে হবে। সত্যি কথা বলতে কি, আমরা জমি চাষাবাদের ক্ষেত্রে গরু-মহিষের বদলে বর্তমানে কলের লাঙল ব্যবহার করছি। সেচের জন্য সেচযšú ব্যবহার করছি। কীটপতঙ্গের হাত থেকে রেহাই পেতে বহুজাতিক কো¤ক্সানিগুলোর কীটনাশক ব্যবহার করছি যত্রতত্র। মাল্পব্দাতা আমলের কৃষিব্যবস্ট’ার স্ট’লে আগত আধুনিক কৃষিব্যবস্ট’া ঠিক কতটুকু গ্রহণীয় আর কতটুকুই-বা বর্জনীয় তা আমরা মোটেও ভেবে দেখিনি। যাদের দায়িÍ^ ছিল অনেক আগেই জটিল এ বিষয়গুলো দেশের বৃহৎ স্ট^ার্থ ভেবে দেখার তারাও সময়মতো ভেবে দেখেননি। গোবর সার ছাড়া জমিতে ফসল ফলানোর সল্ফ¢াবনার মাত্র ২০-২৫ বছর আগে এ দেশের কোনো কৃষক তা কল্কপ্পনাও করতে পারত না। অথচ রাসায়নিক সারের বদৌলতে কৃষকদের মধ্যে ইদানীং এমন ধারণা জš§লাভ করেছে, কিছু রাসায়নিক সার প্রয়োগ করলেই যথে®দ্ব পরিমাণে ফসল ফলানো সল্ফ¢ব। কিন্তু মাটির স্ট^াস্ট’্য বলেও যে একটা কথা আছে এ দেশের কৃষকদের তা সঠিকভাবে কখনোই বোঝানো হয়নি। স¤ক্স্রতি কৃষি স¤ক্স্রসারণ অধিদফতরের কৃষি বিশেজ্ঞদের মতে, স্ট^াভাবিক উৎপাদনের জন্য ফসলি জমিতে ৫ শতাংশ জৈব পদার্থের প্রয়োজন হলেও দেশের মাটিতে আছে দেড় শতাংশেরও কম। তাদের মতে, গত ৩০ বছরে ফসলি জমিতে প্রায় ৬ কোটি টন জৈব সারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ অবস্ট’া চলতে থাকলে এ দেশের কৃষিতে মহাবিপর্যয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।
অন্যদিকে ফার্টিলাইজার রিকমেন্ডেশন গাইডলাইন অনুযায়ী দেশে বছরে ৮৬ লাখ টন জৈব সারের ব্যবহার অত্যাবশ্যক হলেও বছরে জৈব সারের উৎপাদন ও ব্যবহার হচ্ছে মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টনের মতো। অন্যদিকে বেশি ফলনের আশায় বছরে প্রায় সাড়ে চার লাখ টন অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন মাটির স্ট^াস্ট’্য ন®দ্ব হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে, অথচ খাদ্যের যথাযথ পু®িদ্বমান বজায় থাকছে না। স¤ক্স্রতি জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্ট’ার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জমিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে সাময়িক ফসলের উৎপাদন বৃ™িব্দ হলেও জমির ভবিষ্যৎ ও পরিবেশ ত্রক্রমেই ন®দ্ব হচ্ছে। খাদ্যশস্যে থেকে যাচ্ছে বিষত্রিক্রয়া। সংস্ট’াটির মতে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়িয়ে চাষাবাদ করতে হবে। সুতরাং জৈব সারের ব্যবহার বৃ™িব্দতে সরকারের প্রচার-প্রচারণা বৃ™িব্দর কোনোই বিকল্কপ্প নেই।
লেখক : প্রাবল্পিব্দক

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor