Sunday, September 14, 2008

আলুবীজ আমদানি সম্পর্কে

১৫.০৯.০৮
চিঠিপত্র
।।ইত্তেফাক।। আনোয়ার হোসেন

গত ৩-৯-২০০৮ তারিখে এ কলামে প্রকাশিত ‘কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে আলুবীজ আমদানির সুযোগ প্রদান বেআইনি’ শিরোনামের চিঠির প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। কথা হলো- আলুবীজ আমদানি একজন না বহুজন করবে সে ব্যাপারে সরকারের কি কোনো আইন আছে? তা না থাকলে বিষয়টিকে কিভাবে বেআইনি বলা হবে? পত্রলেখক উল্লেখ করেছেন এ বছর আলুবীজের প্রকৃত আমদানি মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু উল্লেখ করা হয়নি যে প্রতি বাক্স কত দাম ? প্রসঙ্গত গত বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আমদানিকারক আলুবীজ আমদানি করে কৃষকদের হাতে পৌঁছে দেন প্রতি বাক্স ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকায়। যা হওয়া উচিত ছিল ৫০০০ থেকে ৫৫০০ টাকা। এই যে অতিরিক্ত দামে কৃষকদের বীজআলু ক্রয় করতে হলো এজন্য দায়ী কারা ? প্রতি বছর কয়েক ডজন আমদানিকারক ও ছোট ছোট বীজআলু ব্যবসায়ী বীজআলুর দাম বাড়িয়ে দেন এবং সময়মতো বীজআলু বন্টন হয় না। এর পরিপেক্ষিতে এগ্রিকোর স্থানীয় প্রতিনিধি কয়েকবার আলু ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের নিয়ে সভা করেন। সভায় উল্লেখ করা হয়, হল্যান্ডের এগ্রিকো ৬০ থেকে ৭০ আমদানিকারক বীজআলু আমদানি করেন। এগ্রিকো এদেশের আমদানিকারকদের জানায়, আমদানিকারকদের সংখ্যা কমাতে হবে। কারণ এতগুলো আমদানিকারকের পেপারওয়ার্ক করতে অনেক সময় চলে যায়। ফলে সময়মতো বেশি আলু রপ্তানি করা যায় না এবং এ কারণে আমাদের দেশে চাহিদা অনুযায়ী বীজ আসে না। এ অবস্থায়, ১০/১৫ জন আমদানিকারক অথবা একজন আমদানিকারকের মাধ্যমে বীজ আমদানির জন্য এগ্রিকো সরকার ও আমদানিকারকদের সুপারিশ করে। এগ্রিকোর এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রতিনিধি বীজ আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা ডাকেন। ঐ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি বিতরণ নীতিমালা গ্রহণ করা হয়, যার আলোকে একটি কোম্পানির মাধ্যমে বীজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একটি কোম্পানির মাধ্যমে আমদানি করলে দেশে অধিক পরিমাণ বীজআলু আসবে, কারণ সেক্ষেত্রে পেপারওয়ার্ক কমে যাবে এবং সঠিক সময়ে ঐ বীজ কৃষকদের হাতে পৌঁছুবে। নীতিমালার আলোকে আমদানিকারকদের পরিবেশক হিসাবে এবং পরিবেশকগণ ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে বীজ বিতরণ করবেন । পরিবেশক ও ডিলারদের মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হবে, যাতে কৃষকের কাছে অধিক মূল্যে বীজ বিক্রি করতে না পারে। যদি অধিক মূল্যে কোনো ডিলার অথবা পরিবেশক বীজ বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে করে বীজ সঠিক সময় সকল জায়গায় একই দামে বিক্রি হতে পারবে। এই নতুন নীতিমালা গ্রহণ করায় কিছু সংখ্যক আমদানিকারক যারা বীজআলু স্টক করে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন, তারা এর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন এবং ঐসব আমদানিকারকের পক্ষে কিছু সংখ্যক লোক না জেনে ওকালতি করছেন। জানি না পত্রলেখক তাঁদেরই একজন কিনা। পত্রলেখক উল্লেখ করেছেন আমদানিকারকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত নীতিমালা তৈরি করতে। কিন্তু এই বিতরণ নীতিমালাটি আমদানিকারক, আলু ব্যবসায়ী ও সরকারের সঙ্গে বহুবার আলোচনার আলোকে করা হয়েছে। নীতিমালাটি সকল মহলে প্রশংসিত হয়েছে। কারণ এতে সময়মতো সব আলু বাংলাদেশে আসতে পারবে এবং সঠিক মূল্যে কৃষকদের হাতে পৌঁছুতে পারবে। এছাড়া সকল পরিবেশকের কাছে সমমাত্রায় বন্টন হওয়ার কারণে অধিকমাত্রায় কেউ লাভবান হতে পারবে না। স্বচ্ছতা আনয়নের জন্য সব ক্ষেত্রে বিল ভাউচার ও স্টক রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হবে যাতে কোনো স্তরে স্টক করে যা অন্য কোনো উপায়ে মূল্য বৃদ্ধি করা না যায়।

আনোয়ার হোসেন,

৩৩/২ দীননাথ সেন রোড, গেন্ডারিয়া, ঢাকা ১২০৪।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor