Wednesday, September 24, 2008

আরও দুটি সারকারখানা হচ্ছে দেশে

২৪.০৯.০৮
ডেসটিনি ।। হাসান আজাদ

দেশে নতুন দুটি সারকারখানা স্থাপন করা হচ্ছে। একটি সিরাজগজ্ঞে নর্থওয়েস্ট ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউএফসি) নামে। আরেকটি সিলেটে, যার নাম শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (এসএফসিএল)। এই দুটি কারখানা নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে কমিটি প্রকল্পের প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষাও সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি কমিটির দেয়া সমীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রকল্প দুটির জন্য খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, সিরাজগজ্ঞের সয়দাবাদে নর্থওয়েস্ট ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড স্থাপনে চীন সরকারের এক্সিম ব্যাংক অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। অর্থায়ন নিয়ে আলোচনার জন্য এক্সিম ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঢাকায় আসেন। সার কারখানায় অর্থায়নের বিষয় নিয়ে তারা ইআরডি, শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিআইসির সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
অন্যদিকে সিলেটের ফেঞ্চুগজ্ঞের শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড স্থাপনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম এগিয়ে চলছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্ভাব্যতা জরিপ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পেরও চীন সরকারের এক্সিম ব্যাংক থেকে অর্থায়নের বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, প্রকল্প দুটি বাস্তবায়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় গ্যাস ও অন্য সুবিধাগুলো পাওয়ার বিষয়ে এবং সার উৎপাদনের কাঁচামাল, প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রাপ্যতা ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পেট্রোবাংলার সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসেছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত এ দুটি সার কারখানা স্থাপন করা হলে বছরে প্রতিটিতে ৫ লাখ ৭৭ হাজার মেট্রিক টন করে দুটিতে ১১ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করা সম্ভব হবে। এর ফলে দেশে বর্তমানে আমদানিকৃত ১৩ লাখ মেট্রিক টন সারের মধ্যে সবোর্চ্চ দেড় লাখ টন সার আমদানি করতে হবে। বিদেশ থেকে বর্তমানে প্রতি টন ইউরিয়া আমদানিতে সরকারের খরচ হয় ৫৮ হাজার টাকা। আর প্রতিটন সার ভর্তুকি দিয়ে সরকারকে বিসিআইসির মাধ্যমে বিক্রি করতে হয় ১০ হাজার টাকায়। ফলে বর্তমানে প্রতিটনে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে ৪৮ হাজার টাকা।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র আরও জানায়, বিগত ১১ বছরে ইউরিয়া সার আমদানিতে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে ৬ হাজার ৫২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রস্তাবিত এ দুটি সারকারখানা স্থাপিত হলে সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ ৭০০ কোটি টাকায় নেমে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
সূত্র জানায়, আমদানি করা ছাড়াও দেশের ৬টি ইউরিয়া সারকারখানায় উৎপাদিত সার উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি করার কারণে বিসিআইসি আরও প্রায় ১ হাজার ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর ফরে দেশীয় সার কারখানাগুলো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে মোট ৬টি ইউরিয়া সারকারখানা রয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, জিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, ঘোড়াশাল ইউরিয়া সারকারখানা লিমিটেড, পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড ও ফেঞ্চুগঞ্জ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড। এ ছটি কারখানায় বর্তমানে মোট ১৫ লাখ মেট্রিক টন সার উৎপাদিত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে গড়ে ইউরিয়ার চাহিদা রয়েছে ২৮ লাখ মেট্রিক টন।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor