Wednesday, September 24, 2008

আলুর বাজারে ধস : জয়পুরহাটে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত হিমাগারে এখনো মজুদ ৭০ হাজার টন

২৫.০৯.০৮
সমকাল ।। আলমগীর চৌধুরী, ক্ষেতলাল

বাজার দিন দিন নিল্ফুমুখী হওয়ায় জয়পুরহাটের কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীদের দিন কাটছে এখন দুশ্চিšøা আর দুর্ভাবনায়। প্রতি বস্টøা (৮৪ কেজি) হিমায়িত আলু বর্তমানে প্রকারভেদে বিত্রিক্র হচ্ছে ৭ শ’ থেকে ৯ শ’ টাকায়। অথচ হিমাগারে মজুদের সময় এসব আলুর বস্টøাপ্রতি খরচই হয়েছে ১২ শ’ থেকে ১২ শ’ ৫০ টাকা। অর্থাৎ বর্তমানে বস্টøাপ্রতি মজুদকারি কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে ৩ শ’ থেকে ৫ শ’ টাকা। আলু বিত্রিক্রর মৌসুম শেষ হতে মাত্র ২ মাস বাকি থাকলেও জেলার ১৩টি হিমাগারে এখনো মজুদ রয়েছে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আলু। বাজারের এ মন্দাবস্ট’া আসল্পু মৌসুমে আলু উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে কৃষি বিভাগ মনে করছে।
খাদ্যে উ™^ৃত্ত জয়পুরহাট জেলায় গত মৌসুমে ৩৯ হাজার হেক্টর জমিতে রেকর্ড পরিমাণ আলু চাষ হয়। ফলে অধিক মুনাফার আশায় জেলার লক্ষাধিক কৃষক ও ব্যবসায়ী ১৩টি হিমাগারে ৮১ হাজার ৪৯৯ মেট্রিক টন আলু মজুদ করে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৮৪ কেজির প্রতি বস্টøা আলু হিমাগারে মজুদ করতে তাদের ব্যয় হয়েছে ১২ শ’ থেকে সাড়ে ১২ শ’ ৫০ টাকা। এর মধ্যে আলুর দাম ৯৫০ টাকা, খালি বস্টøা ৪০ টাকা, লেবার ১০ টাকা, পরিবহন বাবদে ২০ টাকা, হিমাগার ভাড়া ১৭০ টাকা ও অন্যান্য খরচ পড়েছে ১০ টাকা। কিন্তু পাইকারি বাজারে ওই আলু এখন তাদের বিত্রিক্র করতে হচ্ছে ৭ শ’ থেকে সর্বোচ্চ ৯ শ’ টাকায়। কালাই উপজেলার করিমপুর গ্রামের আলু ব্যবসায়ী শেখ মজিবর রহমান বাবু জানান, ১০ থেকে ১৫ বিঘায় আলু চাষের পাশাপাশি তিনি প্রতি বছর ৫ শ’ থেকে ১ হাজার বস্টøা আলু হিমাগারে নিয়মিত মজুদ রেখে আসছেন। এতে বস্টøাপ্রতি তার ১ থেকে ২ শ’ টাকা লাভ আসে। এ বছর তার মজুদের পরিমাণ ৮ শ’ বস্টøা। কিন্তু বাজারের যে অবস্ট’’া তাতে এবার তার কমপক্ষে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লোকসান হবে। আলু নিয়ে আশাভঙ্গের এ ঘটনায় বাবুর মতো জয়পুরহাটের কমবেশি সব আলু ব্যবসায়ী আর কৃষকেরই এখন মাথায় হাত উঠে গেছে।
এলাকার বেশ কয়েকটি হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে শতকরা আশিভাগ আলুই এখনো মজুদ রয়েছে। আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর হিমাগারের সবচেয়ে বড় আলু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান জানান, মোকামে আলু পাঠিয়ে প্রতি ট্রাকে তাকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ পর্যšø তার ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। অথচ গত বছরে তার ট্রাকপ্রতি লাভ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা।
একই অভিযোগ করলেন ক্ষেতলালের মোল্কèা হিমাগারে আলু কিনতে আসা ব্যবসায়ী আজিজুল হক। তবে তিনি এ প্রতিনিধিকে আলুর মহৃল্য কমে যাওয়ার বিষয় নিয়ে লেখালেখির চেয়ে আলু বিদেশে পাঠানোর গুরুÍ^ তুলে ধরে পত্রিকায় রিপোর্ট করার পরামর্শ দিয়ে জানালেন, এ অবস্ট’া চলতে থাকলে আগামীতে কৃষকরা আর আলু চাষ করবে না।
মোলামগাড়ী নর্থপোল কোল্ড ¯েদ্বারেজের ব্যবস্ট’াপক মনোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর তাদের হিমাগারে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ১ লাখ ৩৫ হাজার বস্টøা আলু মজুদ করেছিল। তবে গত বছর এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৯০ হাজার বস্টøা। তিনি বলেন, আলু বিত্রিক্রর মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র ২ মাস বাকি অথচ এ পর্যšø মাত্র ৩৭ হাজার বস্টøা আলু হিমাগার থেকে বের হয়েছে। এখনো ৯৮ হাজার বস্টøা মজুদ আছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, জয়পুরহাটে ক্ষেতলাল এবং কালাই উপজেলার কৃষকরা সবচেয়ে বেশি আলু চাষ করে। তিনি বলেন, মহৃল্য পতনের ফলে আগামী মৌসুমে ক্ষেতলালে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ ভাগ কৃষক আলু চাষ থেকে বিরত থাকতে পারেন। এতে উৎপাদন হ্রাস পাবে আশাতীত হারে। ফলে আগামী মৌসুমের শুরু থেকেই আলুর মহৃল্য বেশি হতে পারে।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মহসিন আলী বলেন, গত মৌসুমে আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ার পাশাপাশি চলতি মৌসুমে সুষম বৃ®িদ্বপাতের কারণে জেলায় শাকসবজি ব্যাপকহারে উৎপাদন হয়েছে। বাজারে ওইসব শাক-সবজির পর্যাপ্টø সরবরাহের কারণে আলুর চাহিদা কিছুটা কমে গেছে। আর তাই জেলার ১৩টি হিমাগারে ৮১ হাজার ৪৯৯ টন আলু মজুদ থাকলেও এ পর্যšø মাত্র সাড়ে ১১ হাজার টন আলু হিমাগার থেকে বিত্রিক্র হয়েছে। এ অবস্ট’ায় আগামীতে বিদেশে রফতানির পাশাপাশি আলুর বহুবিধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে কৃষকরা আলু উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে বলে তিনি মšøব্য করেন।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor