Saturday, September 20, 2008

কুষ্টিয়ায় কচু নিয়ে চাষীরা বিপাকে

২১.০৯.০৮
ইত্তেফাক ।। জহুরুল হক

চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় কচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চালের বিকল্প আলু এবং আলুর বিকল্প হিসাবে সবজি ফসল কচুকে মনে করা হয়। কচুর বহুমুখি গুণ থাকায় এটি গ্রামগঞ্জের দরিদ্র মানুষের বন্ধু ফসল হিসাবে পরিচিত। কচুর পাতা, ফুল ও কাণ্ড তরকারি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। যা থেকে খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রণ ও ভিটামিন পাওয়া যায়। কুষ্টিয়া জেলার মাটি এঁটেল দোঁ-আশ হওয়ায় এ জেলা কচু চাষের জন্য অত্যš- উপযোগী। গতবছর এখানে কচুর পর্যাপ্ত ফলন ও ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এখানকার চাষীরা চলতি মৌসুমে কচুর আবাদের উপর বেশি আগ্রহী হয়ে পড়ে। গত বছর এ জেলার ৬ টি উপজেলায় ৩২৭৫ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ করা হয়েছিল। এবছর প্রায় ৪০০০ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইরি ও ওল কচুর আবাদ হয়েছে বেশি। জেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে চাষীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গতবছরের চাইতে এই মৌসুমে কচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কোন রোগবালাই, পোকার উপদ্রব হয়নি, ফলে গাছ হয়েছে মোটা ও সতেজ। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে প্রায় ৮০ মণ হারে। চাষীরা বাজার মূল্যও পেয়েছে ভাল। প্রতি মণ কচু তারা মৌসুমের শুরুতে বিক্রয় করেছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। খুবই অল্প সময়ে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে উচ্চ ফলনশীল ও সহজে আবাদযোগ্য সবজি ফলনের মধ্যে এটিই উপযুক্ত বলে চাষীরা জানায়। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বকুল আহম্মেদ জানান, জেলার মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলায় কচুর আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, ‘‘কচুর পাশাপাশি কচুর সবুজ পাতা, কচুর ফুল ও কাণ্ড বিক্রয় করে চাষীরা খরচের প্রায় অর্ধেক আয় করেছে।’’ কিন্তু হঠাৎ করে কচুর দাম পড়ে যাওয়ায় কচু চাষীদের মাথায় যেন বজ্রাঘাত হয়েছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে কচুর দাম মাত্র ৩ টাকা কেজি দরে নেমে যাওয়ায় চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ১২০ টাকা মজুরী দিয়ে ১ মণ কচু তুলে তা পরিস্কার করে বাজার নিতে যে খরচ হচ্ছে তা ঐ কচু বিক্রি করেও হচ্ছে না। উপায়াš-র না পেয়ে অধিকাংশ কচু চাষীর গলার কাঁটা হয়ে জমিতেই পড়ে আছে। দৌলতপুর উপজেলা মানিকদিয়াড় গ্রামের কচু চাষী সেলিম সর্দ্দার জানান, সেই দু’বিঘা কচুর আবাদ করেছিল। কচুর দাম পড়ে যাওয়ায় তার কচু মাঠেই পড়ে আছে। একই অবস্থা এই অঞ্চলের অন্য কচু চাষীদেরও। কচু সংরক্ষণের উপায় ও ব্যবস্থা না থাকায় আজ তারা এই দূরবস্থার মধ্যে পতিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর ও সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি সঠিক সময়ে চাষীদের পরামর্শ বা নির্দেশনা দিত, তবে চাষীরা হয়তো এই ক্ষতির সম্মখীন হত না। তাই এ বিষয়ে সংশি¬ষ্ট বিভাগ যদি এখনই সজাগ দৃষ্টি না দেয় তবে আগামী মৌসুমে কচু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে চাষীরা।

- জহুরুল হক, কুষ্টিয়া

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor