Wednesday, September 17, 2008

কৃষিঋণ বিতরণ

১৮.০৯.০৮
সম্পাদকীয়
।।ডেসটিনি।।


কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ জোগান, জেলেদের ঋণের আওতায় আনা এবং বর্গাচাষিদের জামানতবিহীন ঋণ দেয়া নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যংক। বাংলাদেশে কর্মরত দেশি এবং বিদেশি সব ব্যাংককেই কৃষিঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি ও পরিবীক্ষণ কমিটির বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কৃষি উৎপাদন বাড়াতেই এ ব্যবস্থা নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির আওতায় কৃষিঋণ প্রদানের বাধ্যবাধকতা তুলে দেয়া হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় কৃষিপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুধাবন করেছে যে দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি জরুরি হয়ে পড়েছে। আর সে কারণে প্রান্তিক চাষিদের ঋণ বিতরণের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে বর্গাচাষিরা ন্যূনতম ঋণ না পেলে উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। তাই চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা যা গত বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। কৃষদের সুষ্ঠুভাবে ঋণ বিতরণের জন্য কার্ড বিতরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ যে কার্ড তৈরি করছে তাতে কৃষকের জমির পরিমাণ, কী পরিমাণ ফসল হবে, বছরে কয়টি ফসল হবে সে তথ্য থাকবে। কার্ড থেকেই কৃষকের ঋণ চাহিদা বোঝা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কৃষি হলো আমাদের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। এ খাতকে সবল করে তোলা বা সবল রাখা অতি জরুরি। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে কর্মরত বাণিজ্যিক ব্যাংগুলোকে নির্ধারণ করে দেয়নি যে কত পরিমাণ ঋণ তাদের কৃষি খাতে বাধ্যতামূলক হবে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মনিটরিংয়ের কথা বলেছে, কিন্তু সে মনিটরিং কতটা বাস্তবমুখী এবং নির্দেশ কতটা বাস্তবায়িত হবে তা পরিষ্কার নয়। কারণ বিগত দিনের ঋণ বিতরণের অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয়। চলতি বছরেই বাণিজ্যিক বাংকের নির্বাহীদের বরাবর চিঠি দিয়ে তাদের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা জানতে চাওয়া হয়েছিল, কিন্তু কয়েকটি ব্যাংক কেনোরকম তথ্যও এখনো প্রদান করেনি। সে ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচিত হবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কৃষিঋণ বিতরণের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে দেয়া। ঢাকায় কর্মরত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ কার্যক্রম এনজিও, কৃষিব্যাংক বা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ যার মাধ্যমেই করা হোক না কেন তার একটি স্বচ্ছ কাঠামোগত পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংককেই। বাণিজ্যিক ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা থেকে শুরু করে বিতরণের শেষ পর্যায় পর্যন্ত ব্যাংকের মনিটরিংয়ের আওতায় থাকা উচিত বলে আমরা মনে করি। এতে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম আরও স্বচ্ছতা পাবে।

No comments:

About Me

My photo
প্রতিদিন বিভিন্ন সংবাদপত্র কৃষি বিষয়ে নানান সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এ সকল তথ্য কাজের জন্য খুবই সহায়ক। কিন্তু একজনের পক্ষে প্রতিদিন সবগুলো সংবাদপত্র পড়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ এ সকল বিষয়গুলো আমাদের সবার জন্য কম-বেশি দরকারি। এ চিন্তা থেকে আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র নিয়মিত পরিবীক্ষণ ও কৃষি বিষয়ক সংবাদসমূহ তথ্যায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছ্।ি আশা করছি সংবাদ তথ্যায়নের এ প্রকিৃয়াটি আমাদের কাজের জন্য সহায়ক হবে। পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এ কাজটি সঞ্চালনের কাজ করছে।

Krishi Khobor